ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

প্রভাবশালী বন্দিদের চোখের আড়ালে রাজসাক্ষী নিরাপত্তার চাদরে

২০২৫ আগস্ট ২৬ ১৯:০০:১৬
প্রভাবশালী বন্দিদের চোখের আড়ালে রাজসাক্ষী নিরাপত্তার চাদরে

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বর্তমানে আছেন ঢাকার কেরানীগঞ্জের বিশেষ কারাগারে। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ায়, তাকে রাখা হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ও সম্পূর্ণ গোপনীয়তার মধ্যে। কারাগারে থাকা অন্য প্রভাবশালী বন্দিদের থেকেও তিনি রয়েছেন সম্পূর্ণ আলাদা ও আড়ালে।

কারা সূত্রে জানা গেছে, সাবেক আইজিপিকে রাখা হয়েছে একটি নির্জন ভবনে, যেখানে সাধারণ বন্দি তো দূরের কথা, কারারক্ষী বা সংশ্লিষ্ট কর্মীরাও নির্ধারিত নির্দেশনা ছাড়া প্রবেশ করতে পারেন না। এমনকি অন্য বন্দিরা জানেন না তিনি কারাগারের কোন অংশে আছেন—বা আদৌ সেখানে আছেন কিনা।

বিশেষ সূত্র আরও জানায়, তার দেখভালে নিয়োজিত রয়েছেন কিছু বিশ্বস্ত সাধারণ কয়েদি। তারা নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কাজ করেন এবং কাজের ফাঁকে অল্প সময় আলাপচারিতা হয়। আদালতে নেওয়ার সময়ও তাকে একা প্রিজন ভ্যানে আনা-নেওয়া করা হয়।

কেরানীগঞ্জ কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার, যিনি বর্তমানে ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শকের অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন, বলেন:“কারাগারে প্রতিটি বন্দির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। ২৪ ঘণ্টা কারারক্ষী ও কর্মকর্তারা নজরদারিতে থাকেন এবং আধুনিক ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহৃত হয়।

সাবেক আইজিপিকে বিশেষ ভবনে রাখা হয়েছে। সেখানে নির্দেশনা ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারে না। তিনি ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে কারাবিধি অনুযায়ী সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন।”

সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ পুলিশের ৩১তম মহাপরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি র‍্যাব ও সিআইডির প্রধান হিসেবেও কাজ করেন।

২০২৫ সালের ১০ জুলাই, তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। আদালতে তিনি বলেন:“জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে আমাদের বিরুদ্ধে যে হত্যা-গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য। আমি নিজেকে দোষী সাব্যস্ত করছি। রাজসাক্ষী হয়ে আদালতকে সহযোগিতা করতে চাই।”

কেরানীগঞ্জ কারাগারে বর্তমানে অন্তত ৬৫ জন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা বন্দি রয়েছেন, যাদের মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, সালমান এফ রহমান প্রমুখ। তবে তাদের কারোরই সাবেক আইজিপির অবস্থান বা পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।

এতে বোঝা যায়, রাজসাক্ষী হিসেবে তার নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা কতটা গুরুত্বপূর্ণভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে