ঢাকা, রবিবার, ১৭ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

এনবিআরের গোয়েন্দা সেলের প্রতিবেদন

বিদেশে ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ শনাক্ত

২০২৫ আগস্ট ১৭ ২১:৩৫:১৮
বিদেশে ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদ শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে পাচার হওয়া প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান মিলেছে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত পাঁচটি দেশের সাতটি শহরে অনুসন্ধান চালিয়ে এ তথ্য উদঘাটন করেছে।

গত রোববার (১৭ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সামনে এ অনুসন্ধানের বিস্তারিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিআইসির মহাপরিচালক আহসান হাবিব এবং এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি গণমাধ্যমে জানায়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, পাচার হওয়া সম্পদের পাশাপাশি আরও নয়টি দেশে ৩৫২টি বিদেশি পাসপোর্ট পাওয়া গেছে, যা কিছু বাংলাদেশি নাগরিক অর্থের বিনিময়ে সংগ্রহ করেছেন। দেশগুলো হলো—অ্যান্টিগুয়া অ্যান্ড বারবুডা, অস্ট্রিয়া, ডমেনিকা, গ্রেনেডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস, নর্থ মেসিডোনিয়া, মাল্টা, সেন্ট লুসিয়া এবং তুরস্ক।

সিআইসির মহাপরিচালক জানান, দেশে বসেই প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহের পর সরেজমিনে বিদেশে অনুসন্ধান চালানো হয়। তাতে ৩৪৬টি সম্পত্তির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তবে এটি কেবল প্রাথমিক চিত্র বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আহসান হাবিব আরও বলেন, বিদেশে অর্জিত এসব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে দেশের অনুকূলে আনতে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পাশাপাশি অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে কাজ করছে সিআইসি। এ প্রক্রিয়ায় ছয়টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা সহযোগিতা করছে বলেও জানান তিনি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের সময় (শেখ হাসিনার আমলে) অর্থপাচারকারীরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিবিএস ডাটাবেজ নিয়ন্ত্রণে নিজেদের লোক বসিয়ে বহু তথ্য গোপন করে ফেলে। তবে বর্তমানে সেই মুছে ফেলা তথ্য উদ্ধার করার সক্ষমতা অর্জন করেছে সিআইসি। তার ভাষায়, “এখন পর্যন্ত যা পাওয়া গেছে, সেটি কেবল ‘টিপ অব দ্য আইসবার্গ’। আরও তথ্য উদঘাটিত হবে।”

প্রধান উপদেষ্টা তার বক্তব্যে বলেন, অর্থপাচারে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে দুদক, সিআইসি, পুলিশের সিআইডি ও সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “এমন দৃষ্টান্ত তৈরি করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ দেশের সম্পদ লুট করে বিদেশে সম্পত্তি গড়ার সাহস না পায়।”

তিনি সিআইসিকে আরও গভীরে অনুসন্ধান চালিয়ে সম্ভাব্য অন্যান্য দেশেও তদন্ত বিস্তৃত করার নির্দেশ দেন। প্রধান উপদেষ্টা প্রতিশ্রুতি দেন, দেশের সম্পদ ফেরাতে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

এসময় তিনি দেশের অর্থনৈতিক খাত থেকে লুটপাটকে “ভয়াবহ দেশদ্রোহিতা” আখ্যা দেন। তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর দেশ গড়তে হলে অবশ্যই এই লুটেরাদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। পাশাপাশি, কীভাবে দেশের সম্পদ লুট হয়েছে, তা জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে।”

মিজান/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে