ঢাকা, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের শেয়ার যেন সোনার হরিণ! কারসাজির শঙ্কা তীব্র

২০২৫ জুলাই ১৪ ১৬:৪৭:৩৪
ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের শেয়ার যেন সোনার হরিণ! কারসাজির শঙ্কা তীব্র

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস পিএলসি-এর শেয়ারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও বিক্রেতা সংকট বাজারে এক গুরুতর শঙ্কার জন্ম দিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের একাংশ এটিকে 'সোনার হরিণ' হিসেবে দেখলেও, বাজার বিশ্লেষকরা এটিকে সম্ভাব্য কারসাজির একটি ক্লাসিক উদাহরণ হিসেবে চিহ্নিত করছেন। এই পরিস্থিতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য এক অদৃশ্য ফাঁদের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

আগেরদিন সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার (১৩ জুলাই) ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ দামে, অর্থাৎ ৫ শতাংশ বৃদ্ধি নিয়ে লেনদেন হয়েছিল। আজ সোমবার লেনদেন শুরুর সঙ্গে সঙ্গেই কোম্পানিটির শেয়ার আবারও ৫ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ৭৫০ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হয়। এই সর্বোচ্চ দরে হাজার হাজার ক্রেতাদের সমাগম দেখা গেলেও, আশ্চর্যজনকভাবে বিক্রেতারা উধাও হয়ে যায়।

ডিএসই সূত্রে জানা গেছে, কোম্পানিটির শেয়ার গত দুই বছরের মধ্যে আজ সর্বোচ্চ দরে লেনদেন হয়েছে। অথচ এত উচ্চমূল্যেও বিক্রেতাদের সন্ধান মেলেনি। দিনভর মাত্র ৪ হাজার ৯৯৮টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যেখানে আগেরদিনও ৪৬ হাজারের বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। স্বাভাবিক বাজার চাহিদা অনুযায়ী এমন অল্প লেনদেন অস্বাভাবিক এবং অস্বচ্ছ অবস্থার ইঙ্গিত দেয়। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এটি শেয়ারটির কৃত্রিমভাবে দর বাড়ানোর প্রক্রিয়ার অংশ হতে পারে, যা বাজারের মৌলিক নীতিমালার পরিপন্থী।

গত দুই বছরের লেনদেন চিত্র: সূত্র-ডিএসই

তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের শেয়ার দর ছিল ১ হাজার ২৭৮ টাকা। মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে তা ১১০ শতাংশেরও বেশি দর বেড়ে এখন ২ হাজার ৭৫০ টাকায় দাঁড়িয়েছে। অথচ, এই অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির পেছনে কোম্পানির পক্ষ থেকে কোনো নতুন প্রকল্প, আর্থিক সাফল্য বা মূল্য সংবেদনশীল তথ্য প্রকাশ করা হয়নি, যা এই বৃদ্ধিকে যৌক্তিকতা দিতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের শেয়ারের এই অস্বাভাবিক উত্থান বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বড় ফাঁদ হতে পারে। বিক্রেতা সংকটের কারণে এই শেয়ার যেকোনো সময় বড় দরপতনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে। বিনিয়োগকারীরা বলছেন, যাদের হাতে কোম্পানিটির শেয়ার নেই, তাদের পক্ষে বাজার থেকে উচ্চমূল্যে এটি সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে, আবার যারা কিনছেন, তারা ভবিষ্যতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

শেয়ার দর বৃদ্ধির এমন অস্বাভাবিক প্রবণতা বাজারের স্বচ্ছতা ও স্থিতিশীলতার জন্য বড় হুমকি। বাজার বিশ্লেষকরা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া, কারণ কোম্পানিটির শেয়ারের পেছনে কারসাজি হচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। বাজারের সুশাসন এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ অপরিহার্য বলে মনে করেন তাঁরা।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে