ঢাকা, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

ঢাকায় পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরিত হলে কী হবে?

২০২৫ জুলাই ১৩ ১১:৫৫:৫৫
ঢাকায় পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরিত হলে কী হবে?

নিজস্ব প্রতিবেদক: ধরুন, ঢাকার প্রাণকেন্দ্র ফার্মগেটে বিস্ফোরিত হলো একটি এক মেগাটনের পারমাণবিক বোমা। কেমন হবে তার ফলাফল?

শুধু কল্পনাতেই শরীর শিউরে ওঠে। মুহূর্তের মধ্যে বদলে যাবে রাজধানীর মানচিত্র—মানুষ, ভবন, যানবাহন, গাছপালা—সবকিছু গলে যাবে সূর্যের চেয়েও বেশি উত্তপ্ত আগুনের লেলিহান শিখায়। আর পরিণতি? শুধুই ধ্বংস, মৃত্যু আর নির্জনতা।

প্রথম ধাপ: আগুনের বলয়, মুহূর্তেই মৃত্যু

বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে গঠিত হবে এক ভয়াবহ আগুনের গোলা। যার ব্যাস হবে প্রায় ৩ কিলোমিটার, তাপমাত্রা সূর্যের কেন্দ্রের চেয়েও বেশি।ফার্মগেট, তেজগাঁও, শাহবাগ, বাংলা মোটর, নিউ মার্কেট—সবই ভস্মীভূত হবে এক সেকেন্ডেরও কম সময়ে। কোনো পূর্বাভাস, কোনো প্রস্তুতি—কিছুই কাজে আসবে না।

দ্বিতীয় ধাপ: তেজস্ক্রিয়তার ছায়ামৃত্যু

বিস্ফোরণের পর ছড়িয়ে পড়বে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ, প্রায় ১৩ থেকে ১৫ কিলোমিটার জুড়ে।মোহাম্মদপুর, মিরপুর, খিলগাঁও, রামপুরা, মহাখালী, উত্তরা—এই এলাকাগুলোতেও মানুষের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকবে না বললেই চলে।রাস্তায় চলতে থাকা মানুষ হঠাৎ করেই দেখবে, তার শরীর দগ্ধ হচ্ছে। ভয়ঙ্কর বিকিরণে গলে যাবে গৃহপালিত পশু, গাছপালা এমনকি কংক্রিটের দেয়ালও।

তৃতীয় ধাপ: শব্দের গতিতে ধ্বংসের তরঙ্গ

ধ্বংস এখানেই শেষ নয়। ভয়াবহ ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠবে পুরো ঢাকা এবং আশেপাশের অঞ্চল।২০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধ পর্যন্ত ভেঙে পড়বে সব ভবন। জানালার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কেউ হয়তো ক্যামেরা তুলেছে, কিন্তু ছবি তোলার আগেই সবকিছু উড়ে যাবে বিস্ফোরণের চাপপ্রবাহে।তেল ও গ্যাসের স্টেশনগুলো পরিণত হবে নতুন বিস্ফোরণের কেন্দ্রবিন্দুতে। আকাশ ঢেকে যাবে কার্বনের কালো মেঘে।

তেজস্ক্রিয় বৃষ্টির ধ্বংসাত্মক ভবিষ্যৎ

বিস্ফোরণের পর বাতাসে ছড়িয়ে পড়বে তেজস্ক্রিয় কণা। বায়ুপ্রবাহের উপর নির্ভর করে তা ছড়িয়ে যেতে পারে ৫০ থেকে ৮০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত।নরসিংদী, গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এমনকি ভারতের সীমান্তবর্তী অঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছাবে এ বিপদ।বেঁচে থাকলেও মানুষ ভুগবে দীর্ঘস্থায়ী রোগব্যাধিতে—ক্যানসার, চর্মরোগ, প্রজননক্ষমতা হ্রাস সহ নানা জটিলতা অনিবার্য হয়ে উঠবে।

চতুর্থ ধাপ: নিউক্লিয়ার উইন্টার ও প্রকৃতির প্রতিশোধ

পারমাণবিক বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্টি হবে নিউক্লিয়ার উইন্টার। সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছাবে না, দিনের আলো ম্লান হয়ে যাবে ধোঁয়ার চাদরে।কার্বন কণায় আকাশ ঢেকে যাবে, শস্য উৎপাদন বন্ধ হবে, দেখা দেবে দুর্ভিক্ষ।

বৃষ্টি নামবে ঠিকই, তবে তা হবে তীব্র এসিড বৃষ্টি। ধ্বংস হবে মাটির উর্বরতা, স্তিমিত হবে প্রাণের গতি।

শেষ প্রশ্ন: কার হাতে এই অমানবিক অস্ত্র?

মানবজাতিকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া এই অস্ত্র নিয়ে কেন এত প্রতিযোগিতা?২০১৭ সালে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধে সম্মত হলেও, পরাশক্তিগুলোর বিরোধিতায় তা পুরোপুরি কার্যকর হয়নি।

বিশ্ব পরিস্থিতির উত্তেজনায় যে কোনো ভুল সিদ্ধান্তেই ঘটতে পারে চূড়ান্ত বিপর্যয়।মানুষের লোভ, শক্তির অহংকার আর ভয়ভীতির কূটচালে মানবসভ্যতা কি নিজেই নিজের মৃত্যুর ফাঁদ পেতেছে?

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এর সর্বশেষ খবর

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি - এর সব খবর



রে