ঢাকা, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

চার দিনে বন্ধ রিজেন্ট টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৩৭%

২০২৫ জুলাই ১৩ ০৬:৫৭:৩৭
চার দিনে বন্ধ রিজেন্ট টেক্সটাইলের দর বেড়েছে ৩৭%

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামভিত্তিক হাবিব গ্রুপের ১১টি ঋণগ্রস্ত কোম্পানির অন্যতম শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেডের শেয়ারের দাম চার কর্মদিবসে ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই কোম্পানির কারখানা বন্ধ রয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)-এর তথ্য অনুযায়ী, মূল্য সংবেদনশীল কোনো তথ্য ছাড়াই শেয়ারের এই আকস্মিক বৃদ্ধি বাজার সংশ্লিষ্টদের বিস্মিত করেছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, মালিকানা পরিবর্তনের গুজব ছড়িয়ে কিছু প্রভাবশালী গোষ্ঠী কৃত্রিমভাবে শেয়ারটির দাম বাড়াচ্ছে। এদিকে, বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির আর্থিক ও পরিচালনগত অবস্থা সম্পর্কে দীর্ঘদিন যাবত অন্ধকারে রয়েছেন।

চলতি বছরের ২৩ জুন রিজেন্ট টেক্সটাইলের শেয়ারের দাম বছরের সর্বনিম্ন ২ টাকা ৯০ পয়সায় নেমে আসে। এরপর থেকে দাম ৩ টাকা থেকে বাড়তে শুরু করে এবং টানা চার কর্মদিবস ধরে বেড়ে বৃহস্পতিবার ৪ টাকা ১০ পয়সায় পৌঁছেছে, যা এই সময়ের মধ্যে ৩৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস ২০২০ এবং ২০২১ সালে যথাক্রমে ৪ কোটি টাকা এবং ২০ কোটি টাকা লোকসান করেছে। এরপর থেকে কোম্পানিটি কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য বা শেয়ারহোল্ডারদের জন্য কোনো ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেনি। ২০২৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের একটি দল কোম্পানিটির কারখানা পরিদর্শন করে এবং দেখতে পায় যে, কোম্পানির কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে।

২০২১ সাল থেকে কোম্পানিটি তার শেয়ারহোল্ডারদের কোনো ডিভিডেন্ড পরিশোধ করেনি।

রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি চট্টগ্রামের কালুরঘাটে অবস্থিত উচ্চমানের ওভেন ফ্যাব্রিকস এবং হোম ফার্নিশিং সামগ্রীর জন্য একটি ১০০ শতাংশ রপ্তানিমুখী টেক্সটাইল মিল।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ২০১৫ সালের আগস্টে কোম্পানিটির আইপিও অনুমোদন করে, যার মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ১২৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়।

রিজেন্ট টেক্সটাইল মিলস আইপিওতে প্রতিটি শেয়ার ২৫ টাকায় বিক্রি করেছিল, যার মধ্যে ১৫ টাকা প্রিমিয়াম ছিল। উচ্চ প্রিমিয়াম সত্ত্বেও তালিকাভুক্তির পর থেকে কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশিত মুনাফা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। তালিকাভুক্ত হওয়ার পর ২০১৬ সালে এটি শেয়ারহোল্ডারদের ২০ শতাংশ ডিভিডেন্ড (১০ শতাংশ ক্যাশ ও ৫ শতাংশ বোনাস) দিয়েছিল। এরপর থেকেই ডিভিডেন্ডে ভাটা নামে। সর্বশেষ ২০২০ সালে ১ শতাংশ ক্যাশ ও ১ শতাংশ বোনাস ডিভিডেন্ড দিয়েছিল। কিন্তু ক্যাশ ডিভিডেন্ড পরিশোধ করেনি। এরপর থেকে লোকসানে নামায় শেয়ারহোল্ডারদের কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি।

কোম্পানিটি তার প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) তহবিল ব্যবহার করে নিজস্ব অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান, লেগ্যাসি ফ্যাশন লিমিটেডকে একটি নতুন আরএমজি প্রকল্প হিসেবে অধিগ্রহণ করে। শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার কাছ থেকে আইপিও তহবিল ব্যবহারের জন্য পাঁচবার সময়সীমা বাড়ানোর পর কোম্পানিটি এই অধিগ্রহণে বিনিয়োগকারীদের ৮৩ টাকা ০১ লাখ টাকা ব্যয় করে।

কোম্পানিটি ২০২৩ সালের ৩১ মে থেকে তার শেয়ারহোল্ডিং অবস্থান আপডেট করেনি। ২০২৩ সালের ৩১ মে পর্যন্ত স্পন্সর এবং পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ৫৪.৫৫ শতাংশ শেয়ার ধারণ করেছে, প্রতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ছিল ৪.৬১ শতাংশ এবং সাধারণ জনগণের কাছে ছিল ৪০.৮৪ শতাংশ শেয়ার।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে