ঢাকা, শুক্রবার, ২ মে ২০২৫
Sharenews24

‘আগামী সাত মাসেই বদলে যেতে পারে বাংলাদেশের ভাগ্য’

২০২৫ মে ০২ ১৫:২৪:২৪
‘আগামী সাত মাসেই বদলে যেতে পারে বাংলাদেশের ভাগ্য’

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ কি নতুন এক শিল্পবিপ্লবের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে? এমন ইঙ্গিতই মিলছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলমের একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে।

বৃহস্পতিবার (০১ মে) এক ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সিইও আহসান খান চৌধুরীর সঙ্গে তার এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি তাইওয়ান সফর শেষে দেশে ফিরে আহসান খান জানান, তারা এখন একাধিক চীনা কোম্পানির সঙ্গে যৌথ বিনিয়োগের আলোচনায় রয়েছেন।

বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নীতির কারণে উৎপাদন কাঠামো পূর্ব এশিয়া থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় সরছে। সেই পরিবর্তনের ঢেউয়ে বাংলাদেশও উঠে আসার সুযোগ পেয়েছে।

প্রাণ-আরএফএল এখন নতুন জমিতে নয়, পুরনো ও পরিত্যক্ত সরকারি-বেসরকারি কারখানাগুলো রূপান্তর করছে আধুনিক রপ্তানিমুখী উৎপাদন কেন্দ্রে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, রংপুরের পুরনো তামাক কারখানা এখন জুতা উৎপাদনের প্লান্ট, আর রাজশাহীর পুরনো পাটকল রূপান্তরিত হয়েছে রপ্তানি ইউনিটে।

এই ধারা এখন ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। আহসান খান বলেন, “বিশ্ববাজারে পরিবর্তনের যে সুযোগ এসেছে, সেটা অনেক বড়। দরকার শুধু অনুকূল পরিবেশ, যেখানে উৎপাদন ও রপ্তানি নির্বিঘ্নে চালানো যাবে।”

শফিকুল আলম আরও লিখেছেন, বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ অর্থনৈতিক মাধ্যমগুলো—যেমন নিউইয়র্ক টাইমস, ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস বা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল—এর বিশ্লেষণেই বোঝা যায়, ব্রেটন উডস বা ডব্লিউটিও-নির্ভর পুরোনো বাণিজ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। চীন, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর এই ব্যবস্থায় রপ্তানি দিয়ে ধনী হয়েছে। কিন্তু দক্ষিণ এশিয়া পিছিয়ে ছিল। এখন সেই ঘাটতি পূরণের সময়।

এই সম্ভাবনা বাস্তবায়নে রাজনীতি বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন শফিকুল। ইতিবাচক বিষয় হলো, দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলই এখন ব্যবসাবান্ধব মনোভাব দেখাচ্ছে। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে পণ্য পরিবহন ও সরবরাহব্যবস্থা। সময়মতো রপ্তানি নিশ্চিত করা না গেলে সম্ভাবনাগুলো হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে।

এই লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ছয় গুণ বাড়ানোর একটি বড় প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এতে বছরে ৭.৮৬ মিলিয়ন কনটেইনার পরিচালনা সম্ভব হবে। আন্তর্জাতিক মানের কোনো প্রতিষ্ঠানকেও এই প্রকল্পে যুক্ত করার পরিকল্পনা আছে, যাতে বিশ্বকে বার্তা দেওয়া যায়—বাংলাদেশ বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত।

সবশেষে শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, সামনের ছয়-সাত মাসই হবে বাংলাদেশের জন্য মোড় ঘোরানো সময়। এখনই নির্ধারণ হবে, দেশটি কি সত্যিই রপ্তানিনির্ভর শিল্পশক্তি হয়ে উঠতে পারবে কিনা।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে