নিজস্ব প্রতিবেদক: শ্রম সংস্কার কমিশন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রভিডেন্ট ফান্ড বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করেছে। পাশাপাশি, সরকার কর্তৃক শ্রমিক বান্ধব পেনশন স্কিম চালু করার জন্য জাতীয় পেনশন স্কিমের আওতায় চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষা নিশ্চিত করার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।

শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশন তাদের প্রতিবেদন গত সোমবার (২১ এপ্রিল) জমা দিয়েছে। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়।

কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, ‘ন্যাশনাল পেনশন স্কিমের আওতায় সরকার চাঁদা প্রদানের মাধ্যমে শ্রমিকবান্ধব পেনশন স্কিম চালু করবে এবং দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা শ্রমিকদের জন্য নির্দিষ্ট ন্যূনতম পেনশন সুবিধা নিশ্চিত করবে। এ ছাড়া, তাদের জন্য সরকারি সহায়তা প্রদান করার সুপারিশ করা হয়েছে।’

সুপারিশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড বাধ্যতামূলক রাখার পাশাপাশি শ্রমিকের জন্য এই ফান্ডে অবদান ঐচ্ছিক রাখা হবে। ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম ও কেন্দ্রীভূত পেনশন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শ্রমিকদের সহজেই অন্তর্ভুক্তি এবং পেনশন দাবি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা হবে।’

কমিশন ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার সুপারিশও করেছে, যেখানে পেনশন ব্যবস্থাপনা ও আবেদন প্রক্রিয়াকে ডিজিটালাইজ করে শ্রমিকদের তথ্য আপডেট, পেনশনের চাঁদা জমা এবং পেনশন দাবি করার প্রক্রিয়া সহজ করা হবে। এছাড়া, পেনশন তহবিল ব্যবস্থাপনা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য একটি মনিটরিং ইউনিট গঠন এবং অনিয়ম রোধে ত্রিপক্ষীয় নজরদারি ব্যবস্থার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া, শ্রমিকদের অবসরকালীন বিনোদন ব্যবস্থার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক নীতি প্রণয়ন এবং সরকারি সহায়তায় স্থানীয় পর্যায়ে বা শিল্পাঞ্চলে ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের সুপারিশও করেছে কমিশন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ১৭ নভেম্বর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিআইএলএস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে প্রধান করে ১০ সদস্যের একটি শ্রম সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল। কমিশন শ্রম বিষয়ে অংশীজন, বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন প্রধান উপদেষ্টা বরাবর দাখিল করেছে।

কেএইচ/