ঢাকা, রবিবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

বাইডেনের নেতৃত্বে দুটি বিতর্কিত ঘটনা

২০২৫ জানুয়ারি ২৫ ১৩:৫৫:৩১
বাইডেনের নেতৃত্বে দুটি বিতর্কিত ঘটনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনকাল নানা চ্যালেঞ্জের মধ্যে দিয়ে গেছে। তবে তার শাসনের সবচেয়ে বিতর্কিত দুটি ইস্যু হলো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজার ইসরায়েল-হামাস সংঘাত। এই দুটি বিষয় বাইডেনের নেতৃত্বে সবচেয়ে কঠোর সমালোচনার মুখে ফেলেছে এবং তার জনপ্রিয়তাকেও ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে।

২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করলে বাইডেন প্রশাসন শুরু থেকেই ইউক্রেনের প্রতি সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দেয়। তবে এই দীর্ঘ যুদ্ধের মধ্যে বাইডেন প্রশাসন কার্যকরী শান্তি চুক্তি বা মধ্যস্থতা করার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। তার নেতৃত্বে পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিলেও, যুদ্ধের তীব্রতা কমানোর কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বিশ্বব্যাপী এই যুদ্ধের প্রভাবের কারণে ইউরোপের বেশ কিছু দেশ উদ্বিগ্ন এবং অর্থনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাইডেন যদি কূটনৈতিকভাবে আরও সক্রিয় পদক্ষেপ নিতেন তবে হয়তো যুদ্ধের তীব্রতা কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হতো।

২০২৩ সালে গাজা অঞ্চলে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘাত শুরুর পর বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলের প্রতি পূর্ণ সমর্থন প্রদর্শন করে। বাইডেনের প্রশাসন ইসরায়েলকে আত্মরক্ষার অধিকার দেয় এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর অবরোধ ও সহিংসতার ক্ষেত্রে কোনো বিরোধিতা করেনি। এতে বিশ্বের অনেক দেশ এবং মানবাধিকার সংগঠন তীব্র সমালোচনায় মেতে উঠে। গাজার যুদ্ধের ফলে হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনির মৃত্যু ঘটে, তবে বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে ব্যাপক অস্ত্র সহায়তা প্রদান করে। এর ফলে বিশ্বজুড়ে বাইডেনের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পায় এবং তার ইসরায়েলপন্থী অবস্থান নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়।

২০২১ সালে বাইডেন আফগানিস্তান থেকে আমেরিকান সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন। যদিও এটি ছিল তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, তবে এই সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকার নাগরিক এবং আফগান সহযোগীদের নিরাপদে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তীব্র ব্যর্থতা দেখা দেয়। সেই সঙ্গে তালেবান আফগানিস্তানে পুনরায় ক্ষমতা দখল করলে বাইডেনের শাসনে একটি বড় শূন্যতা তৈরি হয়। এর ফলে বাইডেনের নেতৃত্বের প্রতি বিশ্বস্ততা অনেকটাই কমে যায়।

করোনা মহামারির পর মার্কিন অর্থনীতি বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হয়, যার মধ্যে মূল্যস্ফীতির উর্ধ্বগতি অন্যতম। বাইডেন প্রশাসন কিছু পদক্ষেপ নিলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা তেমন সফল হতে পারেনি। এর ফলে আমেরিকার সাধারণ জনগণ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে, যা বাইডেনের জনসমর্থনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

বাইডেনের শাসনকালে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে অভিবাসীদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি মার্কিন নিরাপত্তার জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং বাইডেনের সীমান্ত নীতি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

বাইডেন যখন ৭৮ বছর বয়সে প্রেসিডেন্ট হন, তখন তার শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ২০২৪ সালের নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়েও বিতর্ক রয়েছে, বিশেষ করে তার শারীরিক স্বাস্থ্য ও নেতৃত্বের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অনেকেই।

বাইডেনের শাসনকাল বিতর্ক ও চ্যালেঞ্জে পূর্ণ। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজা সংঘাত, আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার এবং মার্কিন অর্থনৈতিক সমস্যা তার শাসনের বড় কলঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ইস্যু তার জনপ্রিয়তাকে ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন করেছে, তবে বাইডেন সরকারের কিছু সফলতা এবং পরবর্তী নির্বাচনের জন্য তার পরিকল্পনা এখনও আলোচনার বিষয়।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে