ঢাকা, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

বাঁধ দিয়ে পাকিস্তানের পানি আটকে উল্টো বিপদে ভারত, চীনের হুঁশিয়ারি

২০২৫ জুলাই ০৬ ২২:৪২:০০
বাঁধ দিয়ে পাকিস্তানের পানি আটকে উল্টো বিপদে ভারত, চীনের হুঁশিয়ারি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানকে নদীর পানি থেকে বঞ্চিত করতে গিয়ে ভারত যেন নিজেদের বিপদই ডেকে এনেছে। সীমান্তবর্তী হিমাচল প্রদেশে ভয়াবহ বন্যায় এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং অন্তত ৩৭ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সরকারি হিসেবে প্রায় ৪০০ কোটি রুপির ক্ষতি হয়েছে এবং ১৫০টিরও বেশি বসতবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। রাজ্যজুড়ে ৭ জুলাই পর্যন্ত রেড অ্যালার্ট জারি রয়েছে।

ভারত সরকার এই বিপর্যয়ের মূল কারণ হিসেবে পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিকে দায়ী করলেও, বিশ্লেষকরা ভিন্নমত পোষণ করছেন। তারা বলছেন, পাকিস্তানের ওপর পানির চাপ তৈরি করতে সিন্ধু চুক্তি লঙ্ঘন করে চেনাব নদীর প্রবাহ আটকে দেওয়ার কৌশলই এখন ভারতের জন্য 'বুমেরাং' হয়ে ফিরে এসেছে।

চেনাব ও সুতলেজ (শতদ্রু) উভয়ই সিন্ধু চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নদী। ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ভারত বাগলিহার বাঁধের মাধ্যমে চেনাব নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করে পাকিস্তানে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। পানি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই 'জল-রাজনীতির' পরিণতিই হিমাচলে ভয়াবহ বন্যা।

আবহাওয়াবিদরা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করলেও, পানি বিশ্লেষকদের দাবি—বাধ্যতামূলক তথ্যপ্রদানে অনীহা এবং হঠাৎ বাঁধ খুলে দেওয়া বা বন্ধ করার মাধ্যমে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটানো হয়েছে।

বন্যা পরিস্থিতির মাঝেই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন হিমাচলের মান্ডি আসনের সাংসদ কঙ্গনা রানাউত। বন্যার শুরু থেকে তার কোনো খোঁজ না থাকায় সমালোচনার মুখে পড়েছেন তিনি। বিজেপির প্রবীণ নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়রাম ঠাকুর এবং বিরোধী কংগ্রেসও তার অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

কঙ্গনা অবশ্য পরে এক পোস্টে জানান, রেড অ্যালার্টের কারণে জয়রাম ঠাকুর তাকে এলাকা সফরে অপেক্ষা করতে বলেছেন। তবে সমালোচকরা তার নির্বাচনের সময়কার তৎপরতার উদাহরণ টেনে প্রশ্ন তুলছেন।

চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল ভারত সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করে। যদিও পানি পুরোপুরি আটকানোর মতো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, তবে বাঁধের মাধ্যমে চেনাব ও অন্যান্য নদীর প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে রাখতে শুরু করেছে, যাকে অনেকে 'মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ' বলছেন।

তবে এই 'পানি রাজনীতির' ফল ভারতের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে বলে বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন। কারণ ভারতের প্রধান দুই নদীর উৎস চীনেই। চীন ইতোমধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে—"পানির রাজনীতি করলে, বিপদটা ভারতেরই বেশি হবে।"

বিশ্লেষকদের মতে, নদীর স্বাভাবিক প্রবাহকে কূটনৈতিক হাতিয়ার বানানো যেমন বিপজ্জনক, তেমনি এর ফল উল্টো ভারতকেই ভুগতে হতে পারে, যার প্রমাণ হিমাচলের এই বন্যা।

মিরাজ.

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে