ঢাকা, রবিবার, ৬ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

রেস্ট হাউসে নারী নিয়ে ওসি, ছাত্রদলের হানা

২০২৫ জুলাই ০৬ ২২:২৮:৩৫
রেস্ট হাউসে নারী নিয়ে ওসি, ছাত্রদলের হানা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলামের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। গত ৩০ জুন স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে নিয়ে যশোরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের পুরাতন রেস্ট হাউজে ওঠার পর তিনি হেনস্তার শিকার হন। অভিযোগ উঠেছে, একটি চক্র তাকে জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

ঘটনাটি ৩০ জুন ঘটলেও আজ রোববার (০৬ জুলাই) এটি জানাজানি হয়। যদিও ওসি সাইফুল দাবি করেছেন, সেদিন ছাত্রদলের কিছু 'ছোট ভাই' তার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন এবং স্বাভাবিকভাবে কথা বলে চলে যান। কোতোয়ালি থানা পুলিশও জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গিয়েছিল এবং কারো কোনো অভিযোগ ছিল না।

সিসিটিভি ফুটেজ ও রেস্ট হাউস কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ৩০ জুন সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে ওসি সাইফুল ইসলাম এক নারীকে নিয়ে রেস্ট হাউসের 'কপোতাক্ষ' কক্ষে ওঠেন। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি পাঁচ-ছয়জন সহযোগী নিয়ে সেখানে হাজির হন। দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে তারা জোরপূর্বক কক্ষে প্রবেশ করেন এবং ওসি সাইফুলকে টেনেহিঁচড়ে ভেতরে নিয়ে যান।

অভিযোগ আছে, ছাত্রদল নেতা সনি ও তার সহযোগীরা কক্ষে ভাঙচুর চালায় এবং ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। এ সময় আনসার সদস্য ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মচারীকে মারধরও করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ছাত্রদল নেতা সনি ওসি ও ওই নারীকে পেছনের দরজা দিয়ে বের করে দেন।

রেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার মিজানুর রহমানের দাবি, ওসি সাইফুল ছাত্রদল নেতাদের হাতে মোটা অঙ্কের টাকা তুলে দিয়ে রক্ষা পান। টাকা লেনদেনের বিষয়টি দেখে ফেলায় তাকে ও বাবুর্চি মিজানকে মারধরও করা হয়।

রেস্ট হাউসের ইনচার্জ উপ-সহকারী প্রকৌশলী তরুণ হোসেন জানান, নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশনায় ওসি সাইফুলকে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল এবং তিনি সঙ্গে থাকা নারীকে 'স্ত্রী' হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন।

ওসি সাইফুল ইসলাম অবশ্য সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, তিনি সেদিন একজন বান্ধবীকে নিয়ে রেস্ট হাউজে বেড়াতে গিয়েছিলেন এবং কোনো কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেনি। তাকে জিম্মি করে কেউ টাকা হাতিয়ে নেয়নি বলেও তিনি দাবি করেন। সিসিটিভি ফুটেজের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

অন্যদিকে, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি স্বীকার করেছেন, ওসি সাইফুল নারী নিয়ে রেস্ট হাউজে গিয়েছিলেন এবং এলাকাবাসী তাদের ধরেছিল। তবে জিম্মি করে টাকা আদায়ের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন।

সনি বলেন, তিনি রুমে ঢুকে কোনো নারীকে দেখেননি এবং পরে দেখেন রুমে থাকা ব্যক্তি তার পূর্ব পরিচিত বড় ভাই ওসি সাইফুল। তাদের মধ্যে ৫-১০ মিনিট কথা বলার পর তিনি চলে আসেন।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল হাসনাত জানান, ঘটনা জানার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। কিন্তু তাদের পৌঁছানোর আগেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে যায় এবং কারো কোনো অভিযোগ না থাকায় পুলিশ ফিরে আসে।

মারুফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে