ঢাকা, বুধবার, ২০ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

ফাইন ফুডসের ব্যবসায় ও মুনাফায় অডিটরের সন্দেহ

২০২৫ জানুয়ারি ১৫ ২০:৩২:১৬
ফাইন ফুডসের ব্যবসায় ও মুনাফায় অডিটরের সন্দেহ

ফাইন ফুডসের ব্যবসায় ও মুনাফায় অডিটরের সন্দেহনিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফাইন ফুডস লিমিটেড চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর’২৪) আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আলোচ্য প্রান্তিকে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) দেখিয়েছে ১ টাকা ১৮ পয়সা। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩৮ পয়সা।

এর আগে প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২৪) কোম্পানিটি ইপিএস দেখিয়েছিল ৫২ পয়সা। যা আগের বছর প্রথম প্রান্তিকে ছিল প্রায় ০২ পয়সা।

এতে দেখা যায়, অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিকে বা ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর’২৪) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৮১ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৩৮ পয়সা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, কোম্পানিটির শেয়ার দাম গত আগস্টে ১৫০ টাকার নিচে ছিল। গত ২৯ অক্টোবর ছিল ১৫২ টাকা ৮০ পয়সা। গত ১১ নভেম্বর বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৬৮ টাকা ৮০ পয়সা। তারপর থেকে টানা উত্থান। গত ০৬ জানুয়ারি ‘বড় মুনাফা আসছে’-এমন খবরে শেয়ারটির দাম ২৭১ টাকার ওপরে উঠেছিল। তারপর থেকে সংশোধন ধারায় রয়েছে। আজ মুনাফা ঘোষণার দিনেও (বুধবার) এর দাম সংশোধন হয়েছে। আজ দিনের শুরুতে ১২৫ টাকার ওপরে লেনদেন হলেও দিনশেষে ক্লোজিং হয়েছে ২১৯ টাকা ৬০ পয়সায়।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেয়ারটির দাম গত দুই বছরের মধ্যে যখন সর্বোচ্চ দামে লেনদেন হচ্ছে, তখনই কোম্পানিটির মুনাফায় বড় লাফ দেখা গেল। তাদের মতে, আগেও মুনাফা নিয়ে স্বল্প মূলধনী কোম্পানিটি বরাবরই বিতর্কিত তথ্য প্রকাশ করেছে। অর্থাৎ শেয়ার দামের ভিত্তিতে যখন যে রকম প্রয়োজন, তখন সেই রকম মুনাফার তথ্য প্রকাশ করেছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটির প্রান্তিক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই দেখা যায়।

এদিকে, গত ০৫ ডিসেম্বর কোম্পানিটির অডিটর কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন নিয়ে আপত্তি তুলেছে। অডিটর বলেছে, ২০২৪ সালে কোম্পানিটি ৭ কোটি ৩৪ লাখ টাকার ব্যবসা দেখিয়েছে। যেখানে কাঁচামাল ক্রয় বাবদ দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। ব্যবসার ও কাঁচালমাল কেনার সব লেনদেন কোম্পানিটি ক্যাশ টাকায় করেছে। যার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি এবং নির্ভরযোগ্যতাও প্রমাণ করা যায়নি।

কোম্পানিটির অডিটর দাবি করেছে, ব্যবসার প্রমাণপত্র ও লেনদেনের সত্যতা যাচাই করার অভাব থাকলে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদন সঠিকভাবে তৈরি করা সম্ভব হয় না।

কোম্পানিটির অতীত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২১ সালে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১১ পয়সা। এরপর ২০২২ সালে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ০২ পয়সা, ২০২৩ সালে ০৭ পয়সা এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে ৮৮ পয়সা। তবে ওই বছরগুলোতে প্রান্তিক প্রতিবেদন ছিল অসঙ্গতিপূর্ণ। কোন প্রান্তিকে অবিশ্বাস্য মুনাফা, আবার কোন প্রান্তিকে বড় লোকসান।

ডিভিডেন্ড পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২১ সালে কোম্পানিটি কোন ডিভিডেন্ড দেয়নি। এরপর ২০২২ সালে ১.৫০ শতাংশ ক্যাশ, ২০২৩ সালে ১.২৫ শতাংশ ক্যাশ এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড দিয়েছে।

কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৩৯ লাখ ৭৩ হাজার ৯১৮টি। এরমধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে রয়েছে ১৫.২৫ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩৫.২৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৯.৫০ শতাংশ শেয়ার।

কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন হলো ১৩ কোটি ৯৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। বিপরীতে রিজার্ভ রয়েছে ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।

গত দুই বছরের মধ্যে কোম্পানিটির সর্বনিম্ন ক্লোজিং দাম ছিল ৫৯ টাকা ৮০ পয়সা এবং সর্বোচ্চ ক্লোজিং দাম ছিল ২৭১ টাকা ৪০ পয়সা।

মামুন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে