ঢাকা, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

কর্মকর্তা হয়েই সাড়ে ৪ কোটি টাকার ডুপ্লেক্স বাড়ি নাঈমের

২০২৪ জুলাই ১৫ ১৮:৪৬:০০
কর্মকর্তা হয়েই সাড়ে ৪ কোটি টাকার ডুপ্লেক্স বাড়ি নাঈমের

নিজস্ব প্রতিবেদক : চলতি বছরের মার্চ মাসে সাড়ে চার কোটি টাকায় একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি কিনে আলোচনায় আসেন নরসিংদী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অধিগ্রহণ শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. নাঈম মিয়া।

জানা যায়, ২০২২ সালের ২৯ মে তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী থেকে পদোন্নতি পেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হয়েছেন তিনি। এরপর ২ জুন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অধিগ্রহণ শাখার প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন।

এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ১৬ হাজার টাকা স্কেলে ২৪ হাজার ৮৭০ টাকা বেতনে চাকরি করা মো. নাঈম ডুপ্লেক্স বাড়ি কিনতে এত টাকা কোথায় পেয়েছেন? আবার রাজস্ব ফাঁকি দিতে বাড়ি কেনার দলিলেও তিনি জালিয়াতি করেছেন। বাড়ির প্রকৃত মূল্য না দেখিয়ে শুধু মৌজার মূল্যে দলিল করেছেন।

জানা গেছে, গত ১৪ মার্চ নরসিংদী পৌর এলাকার পূর্ব ব্রাহ্মন্দী মহল্লার মৃত মো. তোতা মিয়ার ছেলে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জহিরুল ইসলামের কাছ থেকে সাড়ে চার কোটি টাকায় একটি ডুপ্লেক্স বাড়িসহ ১৫ শতাংশ জমি কেনেন মো. নাঈম মিয়া। যার দলিল নম্বর ৩৫৭৫/২৪। ঝামেলা এড়াতে তিনি দলিলে নিজের নাম ব্যবহার না করে বাবা মো. জাকারিয়া এবং স্ত্রী রোকসানা আক্তারের নাম ব্যবহার করেছেন।

নরসিংদী সদর সাবরেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের নির্ধারিত বাড়ি শ্রেণির প্রতি শতাংশ জমির নির্ধারিত মূল্য ১৫ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৯ টাকা। সে হিসাবে ১৫ শতাংশ জমির মূল্য প্রায় দুই কোটি ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৫ টাকা। নাঈম দলিলে জমির মূল্য দেখিয়েছেন দুই কোটি ৩২ লাখ টাকা। তবে বর্তমানে পূর্ব ব্রাহ্মন্দী সড়কের পাশে প্রতি শতাংশ জমির প্রকৃত বাজারমূল্য ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা।

স্থানীয়রা জানান, নাঈম মিয়া জমির বর্তমান বাজার মূল্যে প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকায় ডুপ্লেক্স বাড়িটিসহ ১৫ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন। এ ছাড়া দলিলে নাঈম মিয়া জমিটি স্থাপনাবিহীন উল্লেখ করেছেন। কিন্তু ওই জমিতে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি রয়েছে। দলিলে সেটি গোপন করে বিপুল রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন নাঈম।

জহিরুল ইসলামের একজন নিকটাত্মীয় গণমাধ্যমকে বলেন, পৌরসভার ১৮ ফুট সড়কের পাশে ওই ১৫ শতাংশ জমির প্রকৃত মূল্য পাঁচ কোটি টাকার বেশি। তাঁরা জানতে পেরেছেন, জহির সাড়ে চার কোটি টাকায় ওই জমি বিক্রি করেছেন ডিসি অফিসের এলএ শাখার নাঈমের কাছে।

নাঈম মিয়ার এক প্রতিবেশী বলেন, তিনি আগে আমাদের মহল্লায় ভাড়া থাকতেন। চার বছর আগে আমার এক চাচির কাছ থেকে ৬ শতাংশ জমি কিনেন ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টাকায়। তখন তিনি ডিসি অফিসের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ছিলেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি তিনি (নাঈম মিয়া) দ্বিতীয় শ্রেণিতে পদোন্নতি পেয়েই নিজের বাড়িটি রায়পুরা বটতলী এলাকার গোলাম মাওলা নামের একজনের কাছে ৮০ থেকে ৯০ লাখ টাকায় বিক্রি করে জহিরের ডুপ্লেক্স বাড়িটি কিনেছেন। পদের সঙ্গে বাড়িরও উন্নতি হয়েছে। বাড়িটির দাম নিয়ে বিভ্রান্তি থাকলেও কেউ বলছেন চার কোটি আবার কেউ বলছেন সাড়ে চার কোটি, কেউ কেউ পাঁচ কোটি টাকাও বলছেন।

মো. নাঈম মিয়া গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ব্রাহ্মন্দী এলাকায় আমার যে জায়গা ছিল সেটা বিক্রি করে নতুন এই বাড়ি কিনেছি।’ তবে কত টাকায় কিনেছেন এ বিষয়ে কিছু জানাননি তিনি।

তারিক/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে