ঢাকা, রবিবার, ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

এমপি আনার হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন খুনি আমানুল্লাহ

২০২৪ মে ২৫ ১৭:৪৪:৫১
এমপি আনার হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন খুনি আমানুল্লাহ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারতের কলকাতায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার। প্রায় ৮ দিন নিখোঁজ থাকার পর সামনে আসে হত্যাকাণ্ডের খবর।

এরপর পর সময় যত বাড়ছে তত প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। গ্রেফতাররা প্রতিদিন স্বীকার করছেন নতুন নতুন চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তে অনেকদূর এগিয়েছে। জানা গেছে, পুরো কিলিং মিশনে সবার সামনে ছিলেন সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া।

আমানুল্লাহ আমানের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ওই ফ্ল্যাটে আনারকে হত্যার পর উল্লাসে মেতে উঠেছিল খুনিরা। মূলত এমপিকে ‘হানি ট্র্যাপে’ ফেলে সঞ্জীবা গার্ডেনের আবাসিকের একটি ফ্ল্যাটে নেওয়ার পর ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করে অচেতন করা হয়। পরে বালিশচাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মদ ও হেরোইনের আসর বসায় তারা।

আমানুল্লাহ আমান জানান, সিলিস্তি রহমান নামের নারীর সঙ্গে এমপির নগ্ন ছবি তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু অতিমাত্রায় ক্লোরোফর্ম ব্যবহার করায় গভীরঘুমে অচেতন হয়ে পড়েন আনোয়ারুল। এতে সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। পরে বালিশচাপা দিয়ে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। মরদেহের পাশে বসেই মদ ও হেরোইন সেবন করে উদযাপন করা হয়।

এরপর আনোয়ারুলের মরদেহ গুমের জন্য হাড়-মাংস আলাদা করা হয়। প্রথমে হাড়-মাংস ট্রলি ব্যাগের মাধ্যমে বাইরে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়। পরবর্তী সময়ে মাংসগুলো ‘কিমা’ করে টয়লেটের কমোডে ফেলে ফ্ল্যাশ করা হয়।

হাড় ও মাথার খুলি ট্রলিব্যাগে নিয়ে প্রথমে একটি শপিংমলের সামনে যায় সিয়াম ওরফে কসাই জিহাদ। সেখান থেকে নিউটাউন এলাকা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বের হাতিশালার বর্জ্য খালে ফেলে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে, কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়া বুচার জিহাদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সিআইডি জানিয়েছে, সংসদ আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যার পর কসাই জিহাদ তার লাশ ৮০ টুকরো করে। তারপর সেই অংশগুলি কলকাতার উপকণ্ঠে ভান্ডারের কৃষ্ণমতি এলাকার বাগজোলাখালির বিভিন্ন জায়গায় ডাম্প করা হয়। আনোয়ারুল আজিমের শরীরের টুকরো টুকরো অংশ জলজ প্রাণীর পেটে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে সিআইডি।

এছাড়া পুলিশ ও গণমাধ্যমের হাতে এসেছে সঞ্জিবা গার্ডেনসের দুইটি সিসিটিভি ফুটেজ। একটি আনোয়ারুল সঞ্জিবা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে প্রবেশের ফুটেজ, আরেকটি ট্রলিতে করে তার খণ্ডিত মরদেহ নিয়ে যাওয়ার।

সিসিটিভির একটি ফুটেজে দেখা যায়, ১৩ মে ভারতীয় সময় দুপুর ২টা ৫৩ মিনিটের দিকে আনোয়ারুলের সঙ্গে ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করছে আমানুল্লাহ আমান ও ফয়সাল আলী সাজী ওরফে তানভীর ভূঁইয়া। হত্যাকাণ্ডের পর ফয়সাল বাংলাদেশে এলেও এখনো পলাতক।

৫৮ সেকেন্ডের আরেকটি ফুটেজে দেখা যায়, হত্যাকাণ্ডের পরদিন ১৪ মে ভারতীয় সময় বিকেল ৫টা ১১ মিনিটে সৈয়দ আমানুল্লাহ আমান ওরফে শিমুল ভূঁইয়া ও সিয়াম ওরফে কসাই জিহাদ একটি পেস্ট কালারের ট্রলিব্যাগ এবং তিন থেকে চারটি পলিথিন ব্যাগে আনারের মরদেহ নিয়ে লিফটে উঠছে।

এ তথ্য স্বীকার করেছে বাংলাদেশের ডিবির কাছে গ্রেফতার আমানুল্লাহ ও ভারতীয় পুলিশের হাতে গ্রেফতার কসাই জিহাদ।

আমানুল্লাহ জিহাদের স্বীকারোক্তির পর আনারের মরদেহ উদ্ধারে ২৩ মে সন্ধ্যায় হাতিশালা বর্জ্য খালে তল্লাশি চালায় ভারতীয় পুলিশ। তবে অন্ধকার হওয়ায় সেদিন মরদেহ খুঁজে পায়নি পুলিশ।

পরেরদিন ২৪ মে আবারও সন্ধান শুরু করে ভারতীয় পুলিশ। ডিবির দাবি, যেহেতু হত্যাকাণ্ডে সরাসরি জড়িত বেশ কয়েকজন গ্রেফতার রয়েছে এবং তথ্য দিয়েছে মরদেহের সন্ধান মিলবে।

শেয়ারনিউজ, ২৫ মে ২০২৪

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে