ঢাকা, শনিবার, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

শেয়ার-সঞ্চয়পত্র-এফডিআর থেকে মমতাজের বছরে আয় ৩০ লাখ

২০২৩ ডিসেম্বর ০৭ ০৭:২৬:১৪
শেয়ার-সঞ্চয়পত্র-এফডিআর থেকে মমতাজের বছরে আয় ৩০ লাখ

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত পাঁচ বছরে মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের সম্পদ ও আয় দুটোই বেড়েছে। এই সময়ে বাড়েনি নগদ টাকার পরিমাণ। তবে কমেছে ঋণ।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করা হলফনামায় তার আয়-ব্যয় সংক্রন্ত তথ্য বিরবণী থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

মানিকগঞ্জের সিংগাইর ও হরিরামপুর উপজেলা এবং সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন পরিষদ নিয়ে গঠিত মানিকগঞ্জ-২ আসন। এই আসনে থেকে মমতাজ বেগম টানা তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে যাচ্ছেন।

কিন্তু এবারের নির্বাচনে তিনি ছাড়াও এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন আটজন। দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল আর নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকায় এবার কঠিন পরীক্ষায় মুখে পড়েছেন তিনি।

মমতাজের হলফনামার তথ্য বিবরণী বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তাঁর নগদ অর্থের পরিমাণ না বাড়লেও বেড়েছে আয় ও সম্পদের পরিমাণ। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী- তাঁর বাৎসরিক আয় ছিল ৩৮ লাখ ৮৪ হাজার ২৭৬ টাকা। বর্তমানে তার আয় দেখানো হয়েছে ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৮ টাকা।

অন্যদিকে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামার তথ্য অনুযায়ী- মমতাজের আয় ছিল ৭৯ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৪ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাতে ৭০ হাজার, ব্যবসা থেকে ১০ লাখ ৮৪ হাজার ৯৫৩ টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে ৩০ লাখ, তার পেশা থেকে ৩ লাখ ৩০ হাজার আর অন্যান্য থেকে ৩৪ লাখ ৪১ হাজার ৮৮১ টাকা আয় দেখিয়ে ছিলেন মমতাজ। তবে সে সময় বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট অথবা দোকান বা অন্যান্য খাতে কোনো আয়ই ছিল না।

বর্তমানে বিভিন্ন খাত থেকে মমতাজের বার্ষিক আয় ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার ৮৮৮ টাকা। এর মধ্যে কৃষি খাত থেকে ৩ লাখ টাকা, বাড়ি/অ্যাপার্টমেন্ট অথবা দোকান ভাড়া থেকে ১০ লাখ ৮২ হাজার ৯৯৭ টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত থেকে ৫ লাখ ৫৬ হাজার ৮৫১ টাকা, পেশা থেকে ৭ লাখ টাকা, সংসদ সদস্য ভাতা ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও আনুষঙ্গিক পারিতোষিক বাবদ ১৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকা আয় করেন তিনি।

অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে মমতাজের হাতে আছে নগদ ৫ লাখ টাকা, তার স্বামীর নামেও নগদ অর্থ আছে ৫ লাখ টাকা। আর একাদশ জাতীয় নির্বাচনের হলফনামাও তার নগদ টাকা ছিল ৫ লাখ আর তার স্বামী ডা. মঈন হাসানের নামে ছিল ২ লাখ টাকা। কিন্তু ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে নিজের নগদ অর্থ ছিল ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর স্বামীর নামে কোনো টাকাই ছিল না।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে তার জমা অর্থের পরিমাণ ১৮ লাখ ৮৫ হাজার ২১৮ টাকা। স্বামীর নামে ১৮ লাখ। যা ২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় ছিল ৮৬ লাখ ৯৯ হাজার ১৯৭ টাকা এবং ২০১৪ সালের হলফনামায় ছিল ৩০ লাখ টাকা এবং স্বামীর নামে ছিল ২০ লাখ টাকা। মধু উজালা কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেডের ৩ কোটি ৫০ লাখ ৭০ হাজার টাকা মূল্যের শেয়ার আছে তার। সঞ্চয়পত্র আছে ৪৫ লাখ টাকার।

মমতাজের নামে গাড়ি আছে তিনটি। ল্যান্ডক্রুজার নামে একটি গাড়ির দাম ১ কোটি ৩ লাখ ১২ হাজর ৫০০ টাকা। এছাড়া ল্যান্ডক্রুজার ভি-৮ মডেলের গাড়ির দাম ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং ২৮ লাখ টাকা মূল্যের টয়োটা হাইয়েস আছে। আর স্বামীর ৮ লাখ টাকা মূল্যের একটি ১৩০০ সিসি ফান কার্গো গাড়ি রয়েছে। আর ২০১৪ সালের হলফনামায় তার স্বামীর নামে কোনো গাড়ি দেখাননি তিনি। নির্ভরশীলদের নামে মধু উজালা কোল্ড স্টোরেজের শেয়ার আছে ৬৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার।

কৃষি জমি না বাড়লেও ৫ বছরে মমতাজের ৭০০ শতাংশ অকৃষি জমি কমেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে হলফনামা অনুযায়ী তার অকৃষি জমি ছিল ১২০০ শতাংশ। ২০২৩ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫০০ শতাংশে। আর ২০১৪ সালের হলফনামা অনুযায়ী অকৃষি জামির পরিমাণ ছিল ৫ কাটা, যার মূল্য ছিল ৫ কোটি টাকা।

মহাখালীতে ৫ তলা বিশিষ্টি একটি বাড়ি রয়েছে তার যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৬ কোটি ৯৯ লাখ ৯৮ হাজার ৫০০ টাকা আর সিংগাইরের জয়মন্টপ এলাকায় ২ তলা বিশিষ্ট একটি বাড়ি আছে মমতাজের। যার মূল্য দেখানো হয়েছে ৫৭ লাখ ৫ হাজার ৪৪০ টাকা। অন্যদিকে ২০১৪ সালের হলফনামা অনুযায়ী তার নিজ নামে কোনো বাড়ির তথ্য ছিল না। তবে নিজ নামে একটি কোল্ড স্টোরেজ ছিল, যার মূল্য ছিল ৯০ লাখ টাকা।

২০১৮ সালে মমতাজের ব্যাংক ঋণ ছিল ৩ কোটি ৩৪ লাখ ১১ হাজার ৪৬৪ টাকা। ২০২৩ সালের হলফনামায় ব্যাংক ঋণ দেখানো হয়েছে ২ কোটি ৮১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। আর ২০১৪ সালের হলফনামায় ব্যক্তিগত ঋণ দেখিয়ে ছিলেন ৪০ লাখ টাকা। ভারতের বহরমপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতে এবং কলকাতার হাইকোর্টে মমতাজের বিরুদ্ধে দুটি ফৌজদারি মামলা চলমান আছে।

এবারের হলফনামায় মমতাজ স্বর্ণের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৫০ তোলা, যার মূল্য ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ২০১৮ ও ২০১৪ সালের হলফনামায় স্বার্ণের পরিমাণ দেখানো হয়েছিল ৩৫ ভরি, যার মূল্য দেখানো হয়েছিল ৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা।

শেয়ারনিউজ, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে