সংকটেও দেশের কোটিপতি ১ লাখ ১০ হাজারের বেশি
নিজস্ব প্রতিবেদক: মহামারি করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের নেতিবাচক প্রভাব ধনী-গরিব সবার আয়েই ধাক্কা দিয়েছে । বিশেষ করে এর দরুন সৃষ্ট উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে যখন দেশের দরিদ্র, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের হিমশিম দশা, তখন সেই জীবনযাত্রার বাড়তি ব্যয় মেটানোর পরও সমাজের একটি বিশেষ শ্রেণির মানুষের এই সময়ে অতিরিক্ত আয় যোগ হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, এক শ্রেণির মানুষের আয়ের একটি অংশ ব্যাংকে আমানত হিসেবে গচ্ছিত থাকছে। দিনদিন তাদের এই আমানতের পরিমাণও বাড়ছে। যার মাধ্যমে দেশে কোটিপতি আমানতকারীদের সংখ্যা আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সবশেষ গত তিন মাসে ব্যাংকে কোটি টাকার ওপরে হিসাবধারী আমানতকারীর সংখ্যা বেড়েছে ২৪৬টি। আর এক বছরের ব্যবধানে এই সংখ্যা বেড়েছে ৬ হাজার ৫৯৫টি।
বর্তমানে দেশে কোটিপতি আমানতকারীর হিসাব সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজার ১৯২টি, তাদের মোট আমানতের পরিমাণ ৬ লাখ ৯০ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা; যা ব্যাংকিং খাতে মোট আমানতের প্রায় ৪২.৮৩ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে মোট আমানতকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ১১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫৬টি। এসব হিসাবে মোট আমানত রয়েছে ১৬ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কোটিপতি অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ১ লাখ ১০ হাজার ১৯২টি, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১ লাখ ৩ হাজার ৫৯৭টি।
আর ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে—এমন ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৯ হাজার ৯৪৬টি। সেই হিসাবে, গত তিন মাসে কোটি টাকার ওপরে হিসাবধারীর সংখ্যা বেড়েছে ২৪৬টি। আর ডিসেম্বর শেষে এসব হিসাবে জমা ছিল ৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬০৫ কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমানে মূল্যস্ফীতির চাপে মানুষ যখন দিশেহারা, তখন এক শ্রেণির মানুষের অর্থবৃদ্ধি দেশে আয় বৈষম্য বাড়ার বহিঃপ্রকাশ। তাদের মতে, করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আশঙ্কাজনক হারে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। কিন্তু সে অনুযায়ী মানুষের আয় বাড়েনি। এতে করে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন। এমন অবস্থায় অর্থ জমানো দূরের কথা, অনেকে সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছেন। এই সময় দেশের একটি শ্রেণির মানুষের আয় বেড়েছে। তারা হচ্ছেন পুঁজিপতি, বিত্তবান ও বড় বড় প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। তাদের আয় আগেও বেশি ছিল, এখন আরও বেড়েছে।
তাঁরা বলছেন, মূলত আয়বৈষম্যের কারণেই দেশের কোটি টাকার আমানতকারীর সংখ্যা বাড়ছে। এ ছাড়া দুর্নীতির মাধ্যমে কালো টাকা অর্জন, হন্ডির মাধ্যমে দেশ থেকে টাকা পাচারে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা, প্রণোদনা প্যাকেজের টাকা ভিন্ন খাতে স্থানান্তর, করনীতিতে অসামঞ্জস্য, ধনীদের কাছ থেকে কম হারে কর আদায়ও দেশের আয় বৈষম্যের অন্যতম কারণ। এসব কারণে এক শ্রেণির মানুষের বৈধ ও অবৈধ উপায়ে আয় বাড়ছে।
তবে আয় কমেছে—এমন মানুষের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ অবস্থায় বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ানোর ওপর সরকারকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এ বি এম মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এই বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, কোটিপতি আমানতধারীর সংখ্যা বৃদ্ধি হলো সমাজের আয় বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করার একটা অন্যতম দৃষ্টান্ত। দেশে বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান কমে যাওয়ার কারণেই এই আয় বৈষম্য বাড়ছে। তাই বিনিয়োগ এবং কর্মসংস্থান বাড়ানো না গেলে সামনে এটি আরও বাড়তেই থাকবে।
তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, কোটি টাকার হিসাব মানেই কোটিপতি ব্যক্তির হিসাব নয়। কারণ, ব্যাংকে এক কোটি টাকার বেশি অর্থ রাখার তালিকায় ব্যক্তি ছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। আবার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান কতটি ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবে, তার নির্দিষ্ট সীমা নেই। ফলে এক প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির একাধিক হিসাবও রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার কোটি টাকার হিসাবও রয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, মার্চ শেষে ৫ কোটি ১ থেকে ১০ কোটির মধ্যে রয়েছে ১২ হাজার ৪০টি হিসাব। এসব অ্যাকাউন্টে টাকার পরিমাণ ৮৪ হাজার ৬৫১ কোটি টাকা।
এছাড়া ১০ কোটি ১ থেকে ১৫ কোটি টাকার হিসাব রয়েছে ৩ হাজার ৮৭৫টি। ১৫ কোটি ১ থেকে ২০ কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার ৮৭৪টি অ্যাকাউন্টে আমানত ৩৩ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। ২০ কোটি থেকে ২৫ কোটি টাকার মধ্যে অ্যাকাউন্ট ১ হাজার ১৪৫টি, ২৫ কোটি ১ থেকে ৩০ কোটির মধ্যে হিসাব রয়েছে ৯২৭টি। ৩০ কোটি ১ থেকে ৩৫ কোটি টাকার হিসাব রয়েছে ৪৯৯টি।
আর ৩৫ কোটি থেকে ৪০ কোটির মধ্যে ৩২৭টি, ৪০ কোটি ১ টাকা থেকে ৫০ কোটি টাকার অ্যাকাউন্ট সংখ্যা ৬৪৬টি। এ সময়ে ৫০ কোটি টাকার বেশি আমানত রাখা ব্যক্তির সংখ্যা কিছুটা কমে ১ হাজার ৭৫৮টিতে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দেশে কোটিপতি আমানতকারী ছিল ৫ জন, ১৯৭৫ সালে তা ৪৭ জনে উন্নীত হয়। ১৯৮০ সালে কোটিপতি হিসাবধারীর সংখ্যা ছিল ৯৮টি।
এরপর ১৯৯০ সালে ৯৪৩টি, ১৯৯৬ সালে ২ হাজার ৫৯৪টি, ২০০১ সালে ৫ হাজার ১৬২টি, ২০০৬ সালে ৮ হাজার ৮৮৭টি এবং ২০০৮ সালে ছিল ১৯ হাজার ১৬৩টি। ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে তা একলাফে বেড়ে দাঁড়ায় ৯৩ হাজার ৮৯০টিতে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বেড়ে কোটিপতি হিসাব দাঁড়ায় ১ লাখ ১ হাজার ৯৭৬টি।
শেয়ারনিউজ, ১১ আগস্ট ২০২৩
পাঠকের মতামত:
- এআই মন্ত্রী ডিয়েলার ৮৩ ‘সন্তান’ এবং চাঞ্চল্যকর ঘোষণা
- টঙ্গীর সেই খতিব নিয়ে যে তথ্য দিলেন জুলকারনাইন সায়ের
- ফোনের ছবিতেও নজর ফেসবুকের, বন্ধ করবেন যেভাবে
- কলকাতায় মেসির থালায় যা যা থাকবে দেখে নিন একনজরে
- পরীক্ষা না দিয়েই চাকরি পেলেন ৪২ জন
- হতাশা থেকে ঝুঁকে পড়া মন্তব্যের কারণ জানালেন আ-আল মামুন
- ৫ পাসপোর্ট দিয়ে ১৮৫ দেশে ভিসা ছাড়াই ভ্রমণ করা যায়
- সাঈদীর ছেলেদের খোঁচা দিয়ে কঠিন জবাব পেলেন সাইদ খান
- জামিন দেয়ায় ব্যাখ্যা চাইলেন প্রধান বিচারপতি
- ব্যাংকারদের প্রতারণার জালে পড়ে নিঃস্ব হলেন বৃদ্ধ
- সূচকের উত্থানে চলছে লেনদেন
- শিশু আইন ভেঙে রিমান্ডে কিশোরী!
- গাজীপুরে আলোচিত ইমাম নিখোঁজ রহস্যের পর্দা ফাঁস
- হা-ওয়েল টেক্সটাইলের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ৪০ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- আজিজ পাইপসের 'নো' ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ফিলিস্তিনের পরবর্তী প্রেসিডেন্টের নাম ঘোষণা
- চাচিকে বিয়ে করে ফেসবুকে পোস্ট ভাতিজার
- শেখ সেলিম ও শেখ রেহানার বাড়ির বর্তমান অবস্থা
- ভাবছি, দু’-এক দিনের মধ্যেই আত্মসমর্পণ করবো
- দেখে নিন ২০ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- মীর আখতারের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- খালেদ মহিউদ্দিনকে কঠিন জবাব দিলেন ইনকিলাবের ওসমান হাদি
- হঠাৎ পদত্যাগের কারণ জানালেন ববির রেজিস্ট্রার
- গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রোর ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- সী পার্ল বিচ রিসোর্টের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- সিনোবাংলা ইন্ডাস্ট্রিজের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- জেএমআই সিরিঞ্জের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্সের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- রহিমা ফুডের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত তথ্য জানাল বিবিএস
- ম্যারিকোর অন্তর্বর্তী ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ড্রাগন সোয়েটারের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ডিভিডেন্ড সংক্রান্ত তথ্য জানাল দেশবন্ধু পলিমার
- বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- রেকিট বেনকাইজারের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- এডিএন টেলিকমের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
- রেনাটার প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
- ইস্টার্ন হাউজিংয়ের প্রথম প্রান্তিক প্রকাশ
- উত্তরা ব্যাংকের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- ডাচ বাংলা ব্যাংকের তৃতীয় প্রান্তিক প্রকাশ
- তিতাস গ্যাসের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ইউনিক হোটেলের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- অগ্নী সিস্টেমসের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- এমএল ডাইয়িংয়ের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- ওয়ালটনের নিজস্ব অর্থায়নে সর্ববৃহৎ ভাসমান সৌরবিদ্যুৎ প্ল্যান্ট
- রানার অটোর ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- বিএসসি’র বহরে নতুন জাহাজ ‘এমভি বাংলার প্রগতি’ যুক্ত
- আল-আরাফাহ্ ব্যাংকের এমডি ফরমান চৌধুরীকে অপসারণ
- পেনিনসুলা চিটাগাংয়ের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- অবশেষে পদত্যাগ করছেন দুই উপদেষ্টা
- সোনার দাম ১২ বছরে রেকর্ড পতন
- এক টাকার নিচে শেয়ারের জন্য নতুন নিয়ম আনল ডিএসই
- শেয়ারবাজার নিয়ে কঠোর বার্তা প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর
- প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে নতুন বিজ্ঞপ্তি
- এবার ছয় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে বড় ধাক্কা
- ১৯ কোম্পানির ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- স্কয়ার টেক্সটাইলের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- লাফার্জের অন্তর্বর্তী ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- স্কয়ার ফার্মার ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- বিকালে আসছে ৭ কোম্পানির ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- ১০% ডিভিডেন্ডের শেয়ারের পতন, নো ডিভিডেন্ডের উত্থান!
- খান ব্রাদার্সের ডিভিডেন্ড ঘোষণা
- চীন নয় যুক্তরাষ্ট্রই থাকছে শীর্ষে— চমকে দিল ভারত
- বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতিতে উচ্ছ্বাস














