ঢাকা, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
Sharenews24

সরকারের ব্যাংক ঋণ কমেছে: বাজেটে ব্যয় সংকোচনের ইঙ্গিত

২০২৫ জুন ০১ ১৫:২৮:১০
সরকারের ব্যাংক ঋণ কমেছে: বাজেটে ব্যয় সংকোচনের ইঙ্গিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস ২১ দিনে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকায়। গত অর্থবছরের ১১ মাসের ঋণ নিয়েছিল ৬৮ হাজার ৬০৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে সরকারের ঋণ কমেছে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা কম। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অর্থবছরের শেষ সময়ে সাধারণত সরকারের ঋণ বেড়ে থাকে। তবে এখন পর্যন্ত যে ঋণ নেওয়া হয়েছে, তা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম। আওয়ামী লীগ সরকারের দেওয়া বাজেটে চলতি অর্থবছর ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে অন্তর্বর্তী সরকার এই লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৯৯ হাজার কোটি টাকা করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সম্প্রতি জানিয়েছেন, ব্যাংক খাতের বর্তমান বাস্তবতায় সরকারের ঋণ ৯০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখা হবে।

বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভূমিকা

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস ২১ দিনে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে সরকার ১ লাখ ১৪ হাজার ২০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ধারের ৫৪ হাজার ১০৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে। এর ফলে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের নিট ঋণ কমেছে।

আসছে সংকোচনমূলক বাজেট ও ঋণ কমানোর পরিকল্পনা

নতুন অর্থবছরে বাজেট ঘাটতি কমাতে সরকার ব্যাংক ঋণ নেওয়া অনেক কমানোর পরিকল্পনা করছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ব্যাংক ঋণের পরিমাণ চলতি অর্থবছরের মূল লক্ষ্যমাত্রা থেকে প্রায় ২৫ শতাংশ কমিয়ে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা করা হবে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে অন্তর্বর্তী সরকার চলতি বাজেটের চেয়েও ছোট বাজেট দিতে যাচ্ছে, যা কাল সোমবার পেশ করা হবে। জানা গেছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সরকারি ব্যয় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা চলতি বাজেটের চেয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কম।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার ব্যয় সংকোচন নীতিতে চলছে। তবে বকেয়া ঋণ ও সুদ পরিশোধ অনেক বেড়েছে। আবার বেতন-ভাতাসহ সরকারের চলতি ব্যয় প্রতি বছর বেড়ে থাকে। আগামী অর্থবছরে সুদ পরিশোধে প্রায় ৯৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হচ্ছে, যা চলতি অর্থবছরের বরাদ্দকৃত ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা থেকে কম।

২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত সরকার সরাসরি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছিল। অর্থনীতিবিদ ও সংশ্লিষ্টরা এর সমালোচনা করে বলেছিলেন, এটি মূল্যস্ফীতি বাড়িয়ে দিচ্ছে। এরপর কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ঋণ সুবিধা বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ দেওয়া বন্ধ করায় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়া ছাড়া সরকারের কোনো উপায় ছিল না। উচ্চ সুদহার ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে বেসরকারি খাত ঋণ নিতে আগ্রহী নয়।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে