ঢাকা, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

শীতের দাপট—আবহাওয়াবিদদের সতর্ক বার্তা

২০২৫ ডিসেম্বর ৩০ ০৯:২৫:০৩
শীতের দাপট—আবহাওয়াবিদদের সতর্ক বার্তা

নিজস্ব প্রতিবেদক : সারাদেশে জেঁকে বসেছে শীত। হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঝরছে ঘন কুয়াশা। দেশের অনেক এলাকায় দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের দেখা মিলছে না। কনকনে ঠান্ডার কারণে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। হাটবাজার, নির্মাণকাজ ও উন্মুক্ত স্থানে কর্মরত শ্রমজীবীদের জীবনযাত্রা হয়ে উঠেছে কঠিন।

দেশের কোথাও আনুষ্ঠানিকভাবে শৈত্যপ্রবাহ না থাকলেও প্রচণ্ড ঠান্ডায় ঢাকাসহ সারাদেশে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভোর ও রাতের দিকে হিমেল বাতাস এবং ঘন কুয়াশার কারণে অনেকের পক্ষেই ঘর থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে উঠছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, গত দুই থেকে তিন দিনে দেশে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। পাশাপাশি বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে এবং ঊর্ধ্ব আকাশের ঠান্ডা বাতাস নিচের দিকে নেমে আসছে। মূলত এই তিনটি কারণেই শীতের অনুভূতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হচ্ছে। জানুয়ারিজুড়েই শীতের এই প্রকোপ অব্যাহত থাকতে পারে।

আবহাওয়াবিদদের ব্যাখ্যায় বলা হয়, কোনো অঞ্চলে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য যদি ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসে, তাহলে শীতের অনুভূতি বাড়তে শুরু করে। এই পার্থক্য ৫ ডিগ্রির নিচে নামলে শীতের তীব্রতা আরও প্রকট হয় এবং তখন হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হয়।

গতকাল সোমবার বিভিন্ন জেলার তাপমাত্রা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দেশের বেশির ভাগ অঞ্চলেই সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কম। ঢাকায় এ পার্থক্য নেমে এসেছে মাত্র ১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ কারণে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শীতের অনুভূতি তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে বলে জানান আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা।

নিয়ম অনুযায়ী, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ, ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি হলে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ এবং ৪ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রির নিচে নামলে সেটিকে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। বর্তমানে দেশের কোথাও তাপমাত্রা এই সীমার নিচে নামেনি।

তবে আপাতত কিশোরগঞ্জের নিকলীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। শীতের তীব্রতা সারাদেশেই অনুভূত হচ্ছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাতাসের গতিবেগ। ঘন কুয়াশার কারণে সূর্যের আলো না পাওয়ায় ভূমি উষ্ণ হতে পারছে না, ফলে শীত আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা জানান, বাতাসের গতি তুলনামূলক বেশি থাকায় রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকার পশ্চিমাঞ্চল এবং খুলনা বিভাগের যশোর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলে শীতের অনুভূতি তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। এছাড়া ঊর্ধ্ব আকাশের অত্যন্ত ঠান্ডা বাতাস কখনও নিচে নেমে আসছে, আবার কখনও ওপরে উঠে যাচ্ছে—যাকে ‘জেট স্ট্রিম’-এর প্রভাব বলা হয়। এই নিম্নমুখী ঠান্ডা বাতাসও শীতের অনুভূতি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলীতে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘন কুয়াশার কারণে সারাদেশে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ।

রাজধানী ঢাকায় দিন দিন শীতের প্রকোপ বাড়ছে। গতকাল ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। ঠান্ডা বাতাসে নগরজুড়ে শীতের তীব্রতা অনুভূত হয়েছে। রাতের দিকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতে দেখা গেছে। এতে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচলও কমে গেছে।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে