ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

লাখ লাখ অকাল মৃ-ত্যু-র কারণ জানাল বিশ্বব্যাংক

২০২৫ ডিসেম্বর ১৮ ১৪:১৪:১৭
লাখ লাখ অকাল মৃ-ত্যু-র কারণ জানাল বিশ্বব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক: দক্ষিণ এশিয়ার ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি এবং হিমালয়ের পাদদেশে বায়ু দূষণ স্বাস্থ্য ও উৎপাদনশীলতায় ব্যাপক ক্ষতি করছে। এই অঞ্চলকে অন্যতম গুরুতর উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে বায়ু দূষণ চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রতি বছর প্রায় এক বিলিয়ন মানুষ অস্বাস্থ্যকর বায়ু শ্বাস নেওয়ায় প্রায় ১০ লাখ মানুষ অকাল মৃত্যুবরণ করছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বার্ষিক আঞ্চলিক জিডিপির প্রায় ১০ শতাংশ অর্থনৈতিক ক্ষতি বায়ু দূষণের কারণে হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, নেপাল ও পাকিস্তানের কিছু অংশ বায়ু দূষণের প্রধান উৎস হিসেবে চিহ্নিত।

বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রকাশিত বই ‘পরিবর্তনের নিশ্বাস: ইন্দো-গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশে পরিষ্কার বাতাসের সমাধান’ এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সঠিক নীতি ও পদক্ষেপ গ্রহণে দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব, জনস্বাস্থ্য উন্নত করা যায় এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানো যায়।

প্রতিবেদনে বায়ু দূষণের মূল উৎস হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে—কঠিন জ্বালানি পোড়ানো, ফিল্টার ছাড়া জীবাশ্ম ও জৈববস্তুপুঞ্জ পোড়ানো, অদক্ষ অভ্যন্তরীণ দহন যানবাহন, কৃষকের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এবং পরিবার ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বর্জ্য পোড়ানো। এসব কারণে এই অঞ্চলে দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

বিশ্বব্যাংক প্রস্তাব করেছে, দূষণ কমানোর জন্য বৈদ্যুতিক রান্না, শিল্প চুল্লি ও বয়লার আধুনিকীকরণ, সৌর বিদ্যুতায়ন, অ-মোটরচালিত ও বৈদ্যুতিক পরিবহন ব্যবস্থার ব্যবহার, ফসল ও পশুপালনের বর্জ্য উন্নতভাবে ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য পৃথকীকরণ, পুনর্ব্যবহার ও নিষ্কাশনের মতো পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

প্রতিবেদনে পরিষ্কার-বাতাস সমাধানগুলোকে তিনটি মূল ক্ষেত্রে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমত, রান্না, শিল্প, পরিবহন, কৃষি ও বর্জ্য ব্যবস্থায় উৎসে নির্গমন হ্রাস। দ্বিতীয়ত, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করে শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়কে সুরক্ষা প্রদান। তৃতীয়ত, নিয়ন্ত্রক কাঠামো, বাজার-ভিত্তিক উপকরণ ও আঞ্চলিক সমন্বয় দ্বারা প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষমতা বাড়ানো, যাতে বহু-বিভাগীয় অগ্রগতি বজায় থাকে।

বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশগত অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, সমাধানগুলো নাগালের মধ্যে রয়েছে। নীতি নির্ধারক ও সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীদের জন্য প্রমাণভিত্তিক এবং বাস্তবায়নযোগ্য রোডম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার পরিবার, কৃষক ও সরকার এই প্রযুক্তি গ্রহণ করতে পারে এবং কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারে।

প্রতিবেদনটি চারটি মূল ক্ষেত্রে দেশগুলোকে সহায়তা করার পরামর্শ দেয়—পরিকল্পনা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ ও আচরণ উদ্দীপিত করা, কার্যকর সমন্বয় ও বাস্তবায়ন করা এবং ক্লিন এনার্জি, পরিবহন ও বর্জ্য ব্যবস্থায় আধুনিক ও দক্ষ অবকাঠামো গড়ে তোলা।

বিশ্বব্যাংকের পরিবেশ অনুশীলন ব্যবস্থাপক অ্যান জেনেট গ্লোবার বলেন, পরিষ্কার বাতাস অর্জনের জন্য স্থানীয়, জাতীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ে সহযোগিতা, টেকসই অর্থায়ন এবং শক্তিশালী বাস্তবায়ন প্রয়োজন। একসাথে কাজ করে লাখ লাখ জীবন বাঁচানো সম্ভব এবং সবার জন্য পরিষ্কার বাতাস নিশ্চিত করা যায়।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে