ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

৫ বছরে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হবে বাংলাদেশ: বিশ্বব্যাংক

২০২৫ নভেম্বর ২৫ ১৬:১২:৫৬
৫ বছরে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হবে বাংলাদেশ: বিশ্বব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক : জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের একটি হয়ে উঠবে দক্ষিণ এশিয়া, বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান—এমন সতর্কতা দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সোমবার (২৪ নভেম্বর) ঢাকার একটি হোটেলে ‘ঝুঁকি থেকে স্থিতিস্থাপকতা: দক্ষিণ এশিয়ায় মানুষ ও প্রতিষ্ঠানের অভিযোজনে সহায়তা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি। এতে বলা হয়, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ মানুষ চরম জলবায়ু ঝুঁকির মুখে পড়বে। উচ্চ তাপমাত্রা, ভয়াবহ বন্যা এবং উপকূলে লবণাক্ততা বৃদ্ধির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে গ্রামীণ অর্থনীতি, কৃষি উৎপাদন ও কর্মসংস্থান। পরিবারগুলোর আর্থিক নিরাপত্তাও ব্যাপকভাবে হুমকির মুখে পড়বে।

দক্ষিণ এশিয়ার তিন-চতুর্থাংশ পরিবার ও প্রতিষ্ঠান আগামী ১০ বছরে আবহাওয়াজনিত বড় ধাক্কার আশঙ্কা করছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। যদিও ৬৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান এবং ৮০ শতাংশ পরিবার কোনো না কোনো অভিযোজনমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে, তবুও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উন্নত প্রযুক্তি বা স্থায়ী অবকাঠামোর বদলে কম খরচের সমাধানকে অগ্রাধিকার দিতে হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলের ২৫০টি গ্রামে পরিচালিত জরিপের তথ্য বলছে, জলবায়ু-সহনশীল অবকাঠামো এখন সবচেয়ে বড় অপূর্ণ চাহিদা। দীর্ঘমেয়াদে ৫৭ শতাংশ পরিবার দুর্যোগ-সুরক্ষা অবকাঠামোর অভাবকে প্রধান চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং ৫৬ শতাংশ পরিবার জানিয়েছে, আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রয়োজনীয় অভিযোজন করা সম্ভব হচ্ছে না।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাঁধ ও সাইক্লোন শেল্টারের মতো সরকারি বিনিয়োগ বহু মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে। তবে সরকারি আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে এসব উদ্যোগের পরিধি বিস্তৃত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বিশ্বব্যাংকের মতে, সঠিক লক্ষ্যভিত্তিক সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি ও সময়োপযোগী তথ্যপ্রবাহ দ্রুত সম্প্রসারণযোগ্য এবং দুর্যোগের সময় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে। এজন্য সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করে সমন্বিত নীতি প্যাকেজ গ্রহণ করা জরুরি।

বাংলাদেশে ও ভুটানে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জ্যাঁ পেসমে বলেন, বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা একাধিকবার পরীক্ষিত হয়েছে। অভিযোজন বাড়লেও ঝুঁকির গতি আরও দ্রুত। তাই আগাম সতর্কবার্তা, সামাজিক সুরক্ষা, জলবায়ু-স্মার্ট কৃষি এবং ঝুঁকিভিত্তিক অর্থায়নে জোর দিতে হবে। প্রতিবেদনটি আরও বলছে, আগাম সতর্কবার্তা ব্যবস্থা, বীমা সুবিধা ও আনুষ্ঠানিক ঋণের প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা গেলে জলবায়ুজনিত ক্ষতির প্রায় এক-তৃতীয়াংশই এড়ানো সম্ভব। বেসরকারি খাত দ্রুত প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করতে পারলে অভিযোজনের গতি আরও বাড়বে।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ বলেন, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় শক্তি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও তথ্য সংগ্রহ সবই অত্যন্ত ব্যয়বহুল। নীতিমালা থাকলেও বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তিনি জানান, কয়েকটি পাইলট প্রকল্প চলমান রয়েছে এবং বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ে একটি বিশেষ পরিকল্পনা প্রণয়নে কাজ করছে সরকার।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে