ঢাকা, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

প্রফেসরের মাথার চালে সর্বস্বান্ত শেখ হাসিনা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৮:৪৯:৩৭
প্রফেসরের মাথার চালে সর্বস্বান্ত শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে, যা নাটকীয় মোড় নিয়েছে। একসময় দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ নিজ দেশের ভোটার তালিকা থেকে কার্যত নির্বাসিত। এমনকি তার ঘনিষ্ঠ পরিবারের আরও দশ সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) লক করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন, ফলে তারাও ভোট দেয়ার সুযোগ হারাচ্ছেন।

জানা যায়, ২০২৪ সালের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের ঢেউয়ে আওয়ামী লীগের দীর্ঘদিনের ক্ষমতা টালমাটাল হয়ে পড়ে। সেই ঝড় সামলাতে না পেরে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর এক বছরেরও বেশি সময় কেটে গেছে, তবুও হাসিনা আর দেশে ফিরতে পারেননি। দলের শীর্ষ নেতারাও ছড়িয়ে পড়েছেন বিভিন্ন দেশে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রমও কার্যত নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।

এই রাজনৈতিক বিপর্যয়ের নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে নির্বাচন কমিশনের কঠোর পদক্ষেপের মাধ্যমে। কমিশন সোজাসুজি জানিয়ে দিয়েছে, শেখ হাসিনা আর বাংলাদেশের ভোট দিতে পারবেন না। শুধু তিনি নন, তার ঘনিষ্ঠ পরিবার পরিজনরাও একই পরিণতির শিকার, কারণ তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি লক করে দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, "যাদের এনআইডি লক অবস্থায় আছে, তারা কেউ ভোট দিতে পারবেন না। বাইরে বসে অনলাইনে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকলেও নিবন্ধনের জন্য এনআইডি নম্বর বাধ্যতামূলক। লক করা এনআইডি দিয়ে সেটা করা সম্ভব নয়।"

অর্থাৎ, বিদেশে থেকেও ভোটাধিকার প্রয়োগের যে সুযোগ রাখা হয়েছিল, তা শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে কার্যত বন্ধ হয়ে গেল। নির্বাচন কমিশনের রেকর্ড অনুযায়ী, শুধু শেখ হাসিনাই নন, তার পরিবারের আরও দশ সদস্যের এনআইডি বন্ধ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন বোন রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ, ভাগ্নি টিউলিপ সিদ্দিকসহ একাধিক ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। গত এপ্রিলে ইসির এনআইডি শাখার মহাব্যবস্থাপক এ এস এম হুমায়ুন কবিরের নির্দেশেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

বাংলাদেশের পরবর্তী সংসদীয় নির্বাচন হওয়ার কথা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে, আগামী রমজানের আগে। সেই নির্বাচনে ভোট দেয়ার সুযোগ আর পাচ্ছেন না শেখ হাসিনা। প্রবাস থেকে ভোট দিতে হলে আগে অনলাইনে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক, তবে এনআইডি লক থাকলে তা আর সম্ভব নয়। ফলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হয়তো টিভি পর্দার সামনে বসেই নিজের দেশের নির্বাচনী লড়াই দেখতে বাধ্য হবেন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ইতিহাসে এক অদৃশ্য রেখা টেনে দিল। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ যখন দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, তখনই স্পষ্ট হয়েছিল আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। অনেকেই মনে করছেন, এটাই শেখ হাসিনার রাজনৈতিক জীবনের পরিসমাপ্তি। রাজনীতি যেমন অনিশ্চিত, তেমনি নাটকীয়। আজ যিনি ক্ষমতার শিখরে, কাল তিনি হতে পারেন নির্বাসিত। শেখ হাসিনার কাহিনী যেন সেই চিরন্তন সত্যের এক জীবন্ত উদাহরণ।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে