ঢাকা, রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

সাউথইস্ট ব্যাংকের নিলামে নিউ লাইন ক্লোথিংয়ের সম্পদ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২১ ১৪:১৮:৩০
সাউথইস্ট ব্যাংকের নিলামে নিউ লাইন ক্লোথিংয়ের সম্পদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বন্ধ হয়ে যাওয়া পোশাক প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান নিউ লাইন ক্লোথিং লিমিটেড এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি। ঋণ খেলাপির কারণে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠানটির বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে। এভাবে তারা ৪২৪ কোটি টাকারও বেশি পাওনা আদায় করতে চাইছে।

ব্যাংকের পক্ষ থেকে গত ১৭ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়, যেখানে জানানো হয় যে, ১৮ আগস্ট পর্যন্ত নিউ লাইন ক্লোথিংয়ের ঋণ দাঁড়িয়েছে ৪২৪.১২ কোটি টাকা। পাওনা আদায়ে গাজীপুরের ১১২ শতাংশ জমি এবং সাততলা ফ্যাক্টরি ভবন বিক্রির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। আগ্রহী দরদাতাদের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নিলামে অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে।

কোম্পানির এক কর্মকর্তা জানান, মূলধনের সংকট এতটাই প্রকট হয়ে উঠেছিল যে, দীর্ঘদিন ধরেই কারখানাটি কার্যক্রম চালাতে ব্যর্থ হয়। ফলে ঋণ পরিশোধও অসম্ভব হয়ে পড়ে।

২০১৭ সাল থেকে সাউথইস্ট ব্যাংকের সঙ্গে নিউ লাইন ক্লোথিংয়ের ব্যাংকিং সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণ গ্রহণ করেছিল। এমনকি ২০১৯ সালে আইপিওর মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করেও আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। ওই অর্থের একটি অংশ ঋণ পরিশোধ ও মেশিন কেনার জন্য ব্যবহারের কথা থাকলেও পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। তালিকাভুক্তির সময় ব্যাংকটির কাছে তাদের ঋণ ছিল ১২৩ কোটি টাকা।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পরই কোম্পানির আর্থিক অবস্থা দ্রুত খারাপ হতে থাকে। ২০২২ সালের মার্চের পর থেকে কোনো আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। ২০২০-২১ অর্থবছরের পর থেকে কোনো ডিভিডেন্ডও ঘোষণা করা হয়নি। ওই অর্থবছরে ১২.৭৯ কোটি টাকা মুনাফার বিপরীতে ১২.২৫ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ডই ছিল শেষ ঘোষণা।

পরিস্থিতি আরও স্পষ্ট হয় ২০২৫ সালের এপ্রিলে, যখন বিএসইসি অনুমোদিত ডিএসইর একটি পরিদর্শক দল কোম্পানির কারখানা ও প্রধান কার্যালয় সম্পূর্ণ বন্ধ দেখতে পায়। ডিএসইর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, বিনিয়োগকারীদের একাধিক অভিযোগের ভিত্তিতে এই পরিদর্শন করা হয়।

কোম্পানিটি টানা তিন বছর বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং আর্থিক প্রতিবেদন জমা না দেয়ায়, ডিএসই তাদের ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে নামিয়ে দেয়।

নিউ লাইন ক্লোথিংয়ের শেয়ারদরের পতনও কোম্পানির বাস্তব অবস্থার প্রতিফলন। ২০২৪ সালের আগস্টে যেখানে শেয়ারের দাম ছিল ৪৫.৪০ টাকা, বর্তমানে তা নেমে এসেছে ৬ টাকার নিচে। এখন কোম্পানিটির বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪৬.৩৩ কোটি টাকা, যদিও পরিশোধিত মূলধন ৭৮.৫৩ কোটি টাকা।

এছাড়া, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে প্রকাশিত সর্বশেষ শেয়ারহোল্ডিং তথ্যে দেখা যায়, স্পন্সর ও পরিচালকদের কাছে ছিল ৩০.৬১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ১৮.৩৩ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫১.০৬ শতাংশ শেয়ার। কিন্তু এর পর থেকে কোনো হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করা হয়নি, যা বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অনেক শেয়ারহোল্ডার ইতোমধ্যেই তাদের বিনিয়োগ ফেরত পাওয়ার আশা হারাতে শুরু করেছেন।

সালাউদ্দিন/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে