ঢাকা, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
Sharenews24

নতুন ব্যাংকের এমডি-চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় দুই ব্যাংকার

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৮ ১১:২১:০৮
নতুন ব্যাংকের এমডি-চেয়ারম্যান পদে আলোচনায় দুই ব্যাংকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ইসলামি ধারার পাঁচটি আর্থিকভাবে দুর্বল ব্যাংক একীভূত করে একটি নতুন ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একীভূত ব্যাংকের সম্ভাব্য নাম হতে পারে ‘ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক’ অথবা ‘আল ফাতাহ’ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ইতোমধ্যে এ বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোতে অস্থায়ী প্রশাসক বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

সম্ভাব্য নেতৃত্বে কারা থাকছেন?

নতুন ব্যাংকের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান হিসেবে মোহাম্মদ আবদুল মান্নানের নাম উঠে এসেছে, যিনি বর্তমানে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান। ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন শফিউজ্জামান, যিনি বর্তমানে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এমডি পদে আছেন।

তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র বলছে, এখনো চেয়ারম্যান ও এমডি চূড়ান্ত হয়নি। নতুন ব্যাংকের লাইসেন্স ইস্যু হওয়ার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।

নেতৃত্ব নিয়ে বিতর্ক

চেয়ারম্যান হিসেবে আবদুল মান্নানকে ইতিবাচকভাবে দেখা হলেও, এমডি পদে শফিউজ্জামানকে নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। তার শরিয়াহ্ ভিত্তিক ব্যাংকিংয়ে সরাসরি অভিজ্ঞতা নেই। ইসলামি ব্যাংকে এমডি হওয়ার জন্য কমপক্ষে তিন বছরের অভিজ্ঞতা থাকার প্রয়োজন হলেও, শফিউজ্জামান তা পূরণ করেন না।

এর পাশাপাশি, অতীতে ব্যাংক এশিয়ায় এএমডি থাকার সময় তার বিরুদ্ধে প্রায় ৯ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। অনিয়মের মাধ্যমে দুটি ট্রাভেল এজেন্সিকে ঋণ অনুমোদনের পর তারা ঋণ নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় তদন্তে ৯ জনকে দায়ী করা হলেও, শুধু শাখা ব্যবস্থাপককে চাকরিচ্যুত করা হয়। শফিউজ্জামান কোনো শাস্তি না পেলেও, পরবর্তীতে তাকে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এমডি করা হয়—যা নিয়েও ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে।

রাজনৈতিক প্রভাব ও ব্যাকগ্রাউন্ড

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ওই পাঁচ ব্যাংকে ব্যাপক লুটপাট ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। শীর্ষ ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন চারটি ব্যাংক এবং এক্সিম ব্যাংক, যার চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার, সকলেই ছিলেন সরকারঘনিষ্ঠ।

এই ব্যাংকগুলোতে ঋণ অনিয়ম এতটাই ব্যাপক ছিল যে, ৪৮% থেকে শুরু করে কিছু ক্ষেত্রে ৯৮% পর্যন্ত ঋণ এখন খেলাপি। সরকারের বিশেষ সুবিধায় টিকে থাকা এসব ব্যাংক এখন তারল্য সংকটে ভুগছে এবং গ্রাহকদের আমানত ফেরত দিতেও ব্যর্থ হচ্ছে।

পাঁচটি একীভূত হতে যাওয়া ব্যাংক:

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক

ইউনিয়ন ব্যাংক

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (SIBL)

এক্সিম ব্যাংক

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কড়াকড়ি শুরু

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর, নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এসব ব্যাংকের প্রতি বিশেষ সুবিধা বন্ধ করে দেন। এরপরই ব্যাংকগুলোর নাজুক আর্থিক অবস্থা প্রকট হয়ে ওঠে।

ফলে, প্রথম ধাপে ইসলামি ধারার এই পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করে একটি কার্যকর ও স্বচ্ছ ব্যবস্থাপনা গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নতুন ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করাই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মূল লক্ষ্য।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে