ঢাকা, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

এই ২ প্রমাণ না থাকলে চিরতরে হারাতে পারেন আপনার সম্পত্তি!

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৬ ১২:৫০:১৪
এই ২ প্রমাণ না থাকলে চিরতরে হারাতে পারেন আপনার সম্পত্তি!

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিনের দুর্নীতি এবং সাধারণ মানুষের জমির মালিকানা সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেছেন অ্যাডভোকেট মো. বেলায়াত হোসেন। তার মতে, দলিল বা খতিয়ান না থাকলেও মাত্র দুটি নির্দিষ্ট প্রমাণ থাকলে একজন ব্যক্তি তার জমির স্থায়ী মালিকানা ধরে রাখতে পারবেন, যা ভবিষ্যতে তার উত্তরাধিকারীদের জন্যও বৈধ থাকবে।

অ্যাডভোকেট বেলায়াত হোসেন তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্র্বতীকালীন সরকার দেশের বেশ কিছু বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম হলো জায়গা-জমি সংক্রান্ত দুর্নীতি। তিনি ভূমি অফিসগুলোকে দুর্নীতির আখড়া হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেন, "যেসব করাপশন বা দুর্নীতি আড়ালে আড়ালে অবৈধভাবে যেসব ভূমি কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছে এবং তারা বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভূমি মালিকদের সাথে দুর্নীতি করে অঢেল টাকা-পয়সার মালিক তারা হয়েছে।" অন্তর্র্বতীকালীন সরকার এই দুর্নীতি উৎপাটনে কঠোর নীতি অবলম্বন করে ভূমি সেক্টরকে আধুনিকীকরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে। ভূমি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ-এর নেতৃত্বে ভূমি সেক্টরে আধুনিকায়নের জন্য ডিজিটাল পর্যায়ে নিয়ে আসার পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।

অ্যাডভোকেট বেলায়াত হোসেন জমির মালিকানা প্রমাণের জন্য দুটি প্রধান উপায়ের কথা তুলে ধরেছেন:

১. ক্রয়সূত্রে মালিকানা (সাব-কবলা দলিল): যদি কোনো ভূমি মালিক ক্রয়সূত্রে জমির মালিকানা পেয়ে থাকেন, তবে তাকে অবশ্যই একটি "শক্তিশালী" দলিল, যেমন সাব-কবলা দলিল বা বিক্রয় কবলা দলিল, দেখাতে হবে। রক্ত-সম্পর্কের বাইরের কারও কাছ থেকে জমি ক্রয় করলে হেবা দলিল কার্যকর হবে না, সেক্ষেত্রে অবশ্যই সাব-কবলা দলিল থাকতে হবে।

২. উত্তরাধিকার সূত্রে মালিকানা (ওয়ারিশন সনদ): উত্তরাধিকার সূত্রে জমির মালিকানা পাওয়ার ক্ষেত্রে "ওয়ারিশন সনদ" বা সার্টিফিকেট অপরিহার্য। এই সনদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র বা সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলরের কাছ থেকে সংগ্রহ করা যাবে। অ্যাডভোকেট বেলায়াত হোসেন জোর দিয়ে বলেছেন যে, ওয়ারিশন সনদ অবশ্যই সঠিকভাবে তৈরি করতে হবে এবং এতে কোনো ভুল তথ্য দেওয়া যাবে না। কোনো ওয়ারিশকে বাদ দিয়ে বা ভুল তথ্য দিয়ে সনদ তৈরি করলে ভবিষ্যতে সেই ওয়ারিশ আইনি পদক্ষেপ নিয়ে সম্পত্তি দখল করে নিতে পারে।

অ্যাডভোকেট হোসেন সাব-কবলা বা ওয়ারিশ সূত্রে মালিকানা লাভের পর অবিলম্বে নামজারি বা মিউটেশন করিয়ে নেওয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। নামজারি হয়ে গেলে সর্বশেষ রেকর্ড অনুযায়ী ভূমি অফিসে হোল্ডিং খুলে প্রতি বছর খাজনা পরিশোধ করতে হবে এবং তার রশিদ (দাখিলা) সংগ্রহ করে রাখতে হবে। এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে জমি অবৈধ দখল বা জোরপূর্বক দখলের ঝুঁকি থেকে সুরক্ষিত থাকবে।

যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী জোরপূর্বক বা ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি দখল করে, তবে আইনি আশ্রয় নিলে জমির মালিকানা ফিরে পাওয়া সম্ভব বলে অ্যাডভোকেট বেলায়াত হোসেন আশ্বস্ত করেছেন। তিনি বলেন, "আইনের আশ্রয় নিলে আপনার জমির মালিকানা আপনি ফিরে পাবেন।"এই তথ্যগুলো সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে এবং ভূমি সংক্রান্ত জটিলতা মোকাবেলায় সহায়ক হবে বলে আশা করা যায়।

কেএইচ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে