ঢাকা, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

তাজউদ্দীনের কন্যা জানালেন কঠিন শর্ত

২০২৫ জুলাই ২৬ ১৪:৩৬:২১
তাজউদ্দীনের কন্যা জানালেন কঠিন শর্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতার হত্যাকাণ্ডের পর আওয়ামী লীগ নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে।এরপর ১৯৭৭ সালের ৪ এপ্রিল ঢাকার ইডেন হোটেলে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে জোহরা তাজউদ্দীন দলটির ৪৪ সদস্যবিশিষ্ট সাংগঠনিক কমিটির আহ্বায়ক নির্বাচিত হন।তৎকালীন রাজনৈতিক সঙ্কটে বাংলাদেশ সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের স্ত্রী জোহরা তাজউদ্দীন দলটির হাল ধরেন।

২০২৪ সালের গণ-আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।তার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ চলছে।এর প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

এই রাজনৈতিক শূন্যতায় আবারও আলোচনায় এসেছে তাজউদ্দীন পরিবার।শারমিন আহমদ—তাজউদ্দীন আহমদের মেয়ে ও জোহরা তাজউদ্দীনের কন্যা জানিয়েছেন,"অনেকে আমাদের বলছে দলের হাল ধরতে। আওয়ামী লীগ অনেক আগে পরিবার লীগে পরিণত হয়েছে। এখন সংস্কারের সময়। কিন্তু আমরা রাজনীতি করতে চাই না।"

তিনি বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের অনেকেই, যাদের পরিবার ঐতিহ্যগতভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত, তারা কোনো প্ল্যাটফর্ম খুঁজে পাচ্ছেন না।শারমিন আহমদ স্মৃতিচারণ করে বলেন,“আমার মা একবার স্বপ্নে বাবাকে দেখেন—তিনি বলছেন ‘তুমি মিটিংয়ে যাও না কেন?’ এরপর একটি ঘরোয়া সভায় গিয়ে, দল যখন নেতৃবিহীন, তখন সবার সম্মতিতে মা আহ্বায়ক নির্বাচিত হন। সেই সময় মাকে প্রতীক হিসেবে দেখে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়।”

তাজউদ্দীন আহমদের পুত্র ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তানজিম আহমদ সোহেল তাজ বলেন,“আওয়ামী লীগ যদি আত্মসমালোচনা না করে, দায় স্বীকার না করে, জবাবদিহি না আনে, খুন-গুমের বিচার না করে—তাহলে আমি নেতৃত্বে আসব না।”

তিনি স্পষ্ট করেন,"পরিষ্কার ও স্বচ্ছ না হলে, আমি আওয়ামী লীগের হাল ধরার প্রশ্নই দেখি না।"

সম্প্রতি শারমিন আহমদ ও সোহেল তাজ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।সাক্ষাতে তারা চারটি বিষয়ে গুরুত্ব দেন: আইন ও বিচার প্রতিষ্ঠা, আহতদের পুনর্বাসন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা রক্ষা , শিক্ষা সংস্কার

শারমিন বলেন,“আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরে। রাজনীতির চেয়ে দেশ ও মানবসেবাকে প্রাধান্য দিচ্ছি।”

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম স্থগিত হলেও) এক সাংগঠনিক সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান,“দল এখনো শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। তিনি বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন এবং দল পুনর্গঠনের চেষ্টা চলছে।”

বর্তমানে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগকে ঘিরে তাজউদ্দীন পরিবারের ওপর ভরসা রাখছেন কেউ কেউ, আবার কেউ এখনও শেখ হাসিনার প্রত্যাবর্তন আশা করছেন।

সংস্কার, নেতৃত্ব ও আত্মসমালোচনার প্রশ্নে বিভক্ত এই রাজনৈতিক মঞ্চে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে—নতুন কোনো প্রজন্ম নেতৃত্বে আসবে, নাকি পুরনো ধারায় ফেরার চেষ্টা চলবে—সেই দিকেই।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে