ঢাকা, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির নতুন রোডম্যাপ

২০২৫ জুলাই ১৪ ১৭:২৭:২৩
তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির নতুন রোডম্যাপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে নতুন কিছু বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। গতকাল রবিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এর সঙ্গে এক বৈঠকে এসব প্রস্তাব তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। পরে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব প্রস্তাবের বিস্তারিত তুলে ধরেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে জাতির মধ্যে কোনও দ্বিমত নেই। কিন্তু আগের ব্যবস্থাটি ছিল পুরোপুরি বিচার বিভাগনির্ভর। আমরা চাই এই বিতর্ক এড়াতে জুডিশিয়ারি বাদ দিয়ে বিকল্প কিছু মডেল নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো হোক।”

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্বে রাখা ঠিক হবে না। যদিও প্রয়োজন হলে ‘লাস্ট অপশন’ হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা রাষ্ট্রপতিকে বিবেচনায় আনা যেতে পারে। তবে এটি যেন সর্বসম্মত আলোচনার ভিত্তিতে হয়।

বিএনপির প্রস্তাব অনুযায়ী, সংসদ বিলুপ্তির আগে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে যোগ্য কাউকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেবেন। যদি ঐকমত্যে পৌঁছানো না যায়, তাহলে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকার—এই চারজনের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠিত হবে। এ কমিটির সভাপতিত্ব রাষ্ট্রপতি বা স্পিকার কেউ করতে পারবেন। রাষ্ট্রপতি সভাপতিত্ব করলে তাঁর ভোটিং ক্ষমতা থাকবে না, কেবল শুনানি করবেন। তবে স্পিকার সভাপতিত্ব করলে তাঁর ভোট থাকবে।

যদি চারজনের এই কমিটিও সিদ্ধান্তে না পৌঁছাতে পারে, তাহলে প্রস্তাব রয়েছে—এই চারজনের সঙ্গে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী তৃতীয় সর্বোচ্চ দল (যদি থাকে) থেকে একজন সদস্য যুক্ত করে পাঁচজনের কমিটি গঠন করা হবে। এই কমিটির সভাপতিত্বে রাষ্ট্রপতির ভোটিং ক্ষমতা থাকবে।

এছাড়াও একটি বিকল্প হিসেবে বিএনপি প্রস্তাব দিয়েছে—৭৫ বছরের কম বয়সী অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিদের মধ্য থেকে একজনকে মনোনীত করা হতে পারে, যদি তা নিয়ে ঐকমত্যে আসা যায়। প্রার্থী যাচাই-বাছাই করবে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকারের সমন্বয়ে গঠিত কমিটি।

সালাহউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, “আমরা চাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কয়েকটি বিকল্প পথ থাকুক, যার মধ্যে বিচার বিভাগীয় নির্ভরতা থাকবে না। কারণ সবাই চাইছে জুডিশিয়ারিকে বিতর্কের বাইরে রাখা হোক।”

বৈঠকে আলোচনার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘জরুরি অবস্থা’ জারির শর্তাবলি। বিএনপির প্রস্তাবে বলা হয়, ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগ’ শব্দবন্ধটি অপব্যবহারের সুযোগ তৈরি করে। তাই এর পরিবর্তে ‘রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা, মহামারি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ’—এমন শব্দ ব্যবহারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বৈঠকে ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়েছে বলে জানান সালাহউদ্দিন।

তিনি আরও বলেন, “জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষেত্রে কেবল প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নয়, পুরো মন্ত্রিসভার অনুমোদন থাকা উচিত। এছাড়া এ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে বিরোধীদলীয় নেতা অথবা তাঁর অনুপস্থিতিতে বিরোধীদলীয় উপনেতাকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে।”

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে