ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

এস আলমের সম্পত্তি নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

২০২৫ এপ্রিল ২৯ ১৮:৫০:৫৩
এস আলমের সম্পত্তি নিয়ে ইসলামী ব্যাংকের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি ৮২ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ে দেশের অন্যতম আলোচিত শিল্পগোষ্ঠী এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পত্তি নিলামে তুলেছে। নিলামে তোলা এসব সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের এস আলম স্টিলস লিমিটেড, এস আলম ব্যাগ ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি লিমিটেড এবং রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ একটি চারতলা ভবনসহ ৪১ দশমিক ৭৫ শতাংশ জমি।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ কর্পোরেট শাখা থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকায় দেওয়া বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ইসলামী ব্যাংক এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয়। ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত সুদ ও লভ্যাংশসহ মোট ৮১ কোটি ৮০ লাখ ৪৮ হাজার ৪৩০ টাকা ৯২ পয়সা পাওনা রয়েছে এস আলম গ্রুপের এই দুই কোম্পানির নামে। এ ঋণ আদায়ে ব্যাংক অর্থঋণ আদালত আইন, ২০০৩-এর ১২(৩) ধারা অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করেছে।

ঋণগ্রহীতাদের মধ্যে রয়েছেন:

এস আলম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল আলম মাসুদ

চেয়ারম্যান মো. আবদুস সামাদ

শেয়ারহোল্ডার মো. রাশেদুল আলম, ফারজানা পারভীন, মো. আবদুল্লাহ হাসান

পরিচালক ওসমান গনি, শওকত সাদেক হোসেন, শাহেল্লা রশিদসহ একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান।

এর আগে চলতি এপ্রিল মাসে আরও দুটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন সম্পদ নিলামে তোলার ঘোষণা দেয় ব্যাংকটি।

২০ এপ্রিল: প্রায় ৯,৯৪৮ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ে একটি চিনিকল ও ১১ একরের বেশি জমি

২৭ এপ্রিল: ২,১৮০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যে একটি স্টিল মিল, একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র, একটি ভোজ্যতেল কারখানা এবং ১১৪৯ শতাংশ জমি।

২০১৭ সালে বিতর্কিতভাবে ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনাবোর্ডে নিয়ন্ত্রণ নেয় এস আলম গ্রুপ। তখন বলা হয়, ‘জামায়াত-নিয়ন্ত্রিত’ ব্যাংককে মুক্ত করার জন্য এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। কিন্তু এরপর ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা উপেক্ষা করে এস আলম গ্রুপ ও সংশ্লিষ্টদের নামে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকার ঋণ উত্তোলন করা হয়। এই বিপুল অঙ্কের ঋণের বিপরীতে জামানত ছিল মাত্র ৪ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা যা ব্যাংক খাতের জন্য একটি ভয়াবহ নজির।

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ব্যাংক ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনাবোর্ড ভেঙে দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন নতুন বোর্ড গঠন করে। একই সঙ্গে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন শেয়ার হস্তান্তর ও বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরপর থেকেই ব্যাংকের স্বচ্ছতা ও আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, এস আলম গ্রুপের অধীনে থাকা বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তিরা মিলিয়ে যে ঋণ নিয়েছেন, তা দেশের ব্যাংকিং খাতে দীর্ঘমেয়াদি ঝুঁকি তৈরি করেছে। এই ঋণের বিপুল অংশের কোনো কার্যকর জামানত ছিল না, আবার অনেক ঋণ ব্যবহার করা হয়েছে অন্য খাতে, যা পুরোপুরি অবৈধ।

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে