ঢাকা, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

ওবায়দুল কাদেরকে খুশি করতে সাবেক এমপি মিতার গোপন সিদ্ধান্ত

২০২৫ এপ্রিল ০৯ ১২:১৩:৩৬
ওবায়দুল কাদেরকে খুশি করতে সাবেক এমপি মিতার গোপন সিদ্ধান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০১৭ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে সন্দ্বীপ দ্বীপের বেশিরভাগ অংশ নোয়াখালীর সঙ্গে যুক্ত করে দেয়া হয়েছিল। তবে, সম্প্রতি জানা গেছে, সন্দ্বীপের এ সীমানা পরিবর্তনে সাবেক এমপি মাহফুজুর রহমান মিতা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এতে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে খুশি করার জন্য এই সীমানা পরিবর্তনকে সমর্থন করেছিলেন।

২০১৭ সালে সন্দ্বীপের বেশ কিছু চর এবং দ্বীপ নোয়াখালীর সাথে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এর ফলে, সন্দ্বীপের ভূমি ও স্থানীয় অধিকার নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। বিশেষত, সন্দ্বীপের সাধারণ মানুষ মনে করেন, তারা তাদের জমি ও সংস্কৃতি হারানোর সম্মুখীন হচ্ছেন।

এদিকে, সাবেক এমপি মিতা, যিনি সরকারী দলের সদস্য ছিলেন, তার পক্ষে তখন কোনো বিরোধিতা শোনা যায়নি। বরং তিনি নোয়াখালী জেলাকে সমর্থন করে ডিও (ডিস্ট্রিক্ট অফিস) লেটার প্রদান করেছিলেন এবং এই সিদ্ধান্তের পক্ষে কথা বলেন।

মিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি শুধুমাত্র রাজনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য ওবায়দুল কাদেরকে খুশি করতে এই সীমানা বিরোধী সিদ্ধান্তে সমর্থন জানান। স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, মিতা নিজের রাজনৈতিক অবস্থান শক্তিশালী করতে এবং দলের সাধারণ সম্পাদককে সন্তুষ্ট করতে এই কাজ করেন। তবে, সন্দ্বীপবাসী এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রতিবাদ জানান এবং সরকারের এ পদক্ষেপের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেন।

এই সীমানা পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মনিরুল হুদা, একজন সন্দ্বীপবাসী, হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। তার দাবি ছিল, এই সিদ্ধান্ত অবৈধ এবং এটি বাতিল করা উচিত। যদিও আদালতে মামলাটি শোনা হয়, সরকার তখনো এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি। আদালতও সরকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগের সরকারের নীতির মধ্যে, সন্দ্বীপ এবং নোয়াখালীর সীমানা পরিবর্তন একটি রাজনৈতিক কৌশল ছিল। এতে তারা নোয়াখালীর রাজনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করেছিল। যদিও অনেকের মতে, এই সীমানা পরিবর্তন স্থানীয় জনগণের অধিকার এবং ঐতিহ্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

সন্দ্বীপের সাধারণ জনগণ এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে এবং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য আন্দোলন শুরু করেন। তবে, সরকারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত অটল ছিল, এবং সাবেক এমপি মিতার ভূমিকা নিয়ে নানা গুঞ্জন চলে।

এছাড়া, মিতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে গেলে জানা যায়, তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি, তবে তার ঘনিষ্ঠরা জানান যে, তিনি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে এই পদক্ষেপে সমর্থন জানিয়েছিলেন।

সন্দ্বীপ-নোয়াখালী সীমানা বিরোধের এই নতুন দিক, যেখানে সাবেক এমপি মিতার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য, তা স্থানীয় জনগণের মধ্যে এক নতুন রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সরকার এবং স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই বিরোধ এখনো জিইয়ে রয়েছে এবং পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

আরিফ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে