ঢাকা, শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

বেক্সিমকো ঋণ নিয়ে অবাক করা তথ্য: ৪০ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল?

২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২০ ১৭:৪৬:১১
বেক্সিমকো ঋণ নিয়ে অবাক করা তথ্য: ৪০ হাজার কোটি টাকা কোথায় গেল?

নিজস্ব প্রতিবেদক : বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক সাক্ষাৎকারে, অন্তর্বর্তী সরকারের নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচন এবং শ্রমিকদের বর্তমান অবস্থার বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য করেছেন।

তিনি বলেছেন, নির্বাচনের সময়সূচি সম্পর্কে তিনি যে সংকেত পাচ্ছেন, তা হলো অক্টোবরের দিকে তফসিল ঘোষণা, ডিসেম্বরে নির্বাচন এবং জানুয়ারির মধ্যে নতুন সরকার গঠন হতে পারে। তিনি এটাও জানিয়েছেন যে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ঘোষণার অনুসারে, জরুরি সংস্কারের পর নির্বাচনের সম্ভাবনা বছরের শেষ দিকে এবং বিস্তৃত সংস্কারের পর আগামী বছরের প্রথমার্ধে হতে পারে।

নির্বাচন কমিশন ও সরকারের সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেছেন, নির্বাচনের দায়িত্ব একা নির্বাচন কমিশন পালন করতে পারে না। সরকার, পুলিশ, প্রিসাইডিং অফিসারদের সহযোগিতা প্রয়োজন, তবে নির্বাচনের ক্ষেত্রে সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি অতীতের নির্বাচনী অনিয়মের কথা তুলে ধরে বলেছেন, গত কয়েকটি নির্বাচনে সরকার ভোটের ফলাফলে নিজের পক্ষে জেতার চেষ্টা করেছে, যার ফলে জনগণের মধ্যে আস্থা কমে গেছে।

গণমানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনার বিষয়েও তিনি বলেন, এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ গত এক দশকে নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে মানুষের আস্থা এখনো ফেরানো যায়নি। তিনি নির্বাচন কমিশনকে বলেছিলেন, “এটা কোনো আমলাতান্ত্রিক দায়িত্ব নয়, এটি কঠিন দায়িত্ব।”

বেক্সিমকোর কিছু কোম্পানি, যেগুলোর নাম ঋণ পাওয়ার সঙ্গে যুক্ত, তাদের অধিকাংশের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি বেক্সিমকোর ঋণগ্রস্ত কোম্পানিগুলোর মধ্যে ১৬টি কোম্পানির খোঁজও পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ, এসব কোম্পানি ঋণ নিয়েছে কিন্তু তার কোনো বাস্তব তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।

সাখাওয়াত হোসেন, বাংলাদেশের নৌ-পরিবহন এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা, এই ঋণের বিষয়টি তুলে ধরে বলছেন যে, “এই ঋণ নেওয়া কোম্পানিগুলোর কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো ব্যাখ্যা বা রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না। এটি একটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক সমস্যা।” তিনি আরও বলেন, "এ ধরনের ঋণ নেওয়ার পরেও যদি তার সঠিক ব্যবহারের কোনো চিহ্ন পাওয়া না যায়, তাহলে এটি অর্থনৈতিক দুর্বলতা এবং ঋণের অব্যাহত বিপদজনক প্রবণতা নির্দেশ করে।"

এছাড়া, বেক্সিমকোর ঋণের পরিমাণ এবং সেই ঋণের পরিণতি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট দিকনির্দেশনা বা তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়নি, যা দেশের অর্থনীতিতে সংকট সৃষ্টি করতে পারে।

শ্রমিকদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তিনি মন্তব্য করেছেন যে, সরকার কোনো কারখানা বন্ধ করেনি, তবে ব্যাংক ঋণ নিয়ে চলা কোম্পানিগুলোর কারণে অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। তিনি বেক্সিমকোর ঋণ সংক্রান্ত সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন এবং জানিয়েছেন যে, বেক্সিমকো ৪০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যার হিসাব পাওয়া যাচ্ছে না।

সরকারের গত ছয় মাসের কাজ নিয়ে তিনি বলেন, সরকারের সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে যে রাষ্ট্র ব্যর্থ হয়নি এবং রাষ্ট্রের কাজ চালু রয়েছে। তবে, পরিস্থিতি আরও ভালো হতে পারত। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন ও সহানুভূতির কারণেই বর্তমান সরকার এই অবস্থানে রয়েছে।

অবশেষে, তিনি বলেন, ভবিষ্যতে জনগণ সরকারের কার্যক্রম মূল্যায়ন করবে, এবং বিদায়ের পর তার জন্য ভালো ও খারাপ উভয় মন্তব্য আসবে।

কেএইচ/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে