ঢাকা, সোমবার, ৬ জানুয়ারি ২০২৫
Sharenews24

কালো টাকায় ভাসছে শীর্ষ ৩৬% থিংক ট্যাংক: আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও কাতারের বিশাল অর্থায়ন

২০২৫ জানুয়ারি ০৪ ০৯:৫৮:৩৭
কালো টাকায় ভাসছে শীর্ষ ৩৬% থিংক ট্যাংক: আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও কাতারের বিশাল অর্থায়ন

যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে কী নিয়ে বিতর্ক চলবে, তা অনেকটাই নির্ধারণ করে দেয় দেশটির শীর্ষস্থানীয় থিংক ট্যাংক। তবে একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় এসব থিংক ট্যাংক কালো টাকায় ‘ভাসছে’।

গবেষণায় বলা হয়েছে, এসব কালো টাকার বেশিরভাগই আসে বিভিন্ন দেশের সরকার, সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং পেন্টাগনের সঙ্গে ব্যবসা করা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে।

গবেষণাটি পরিচালনা করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক থিংক ট্যাংক কুইন্সি ইনস্টিটিউট ফর রেসপনসিবল স্টেটক্রাফট। এতে নেতৃত্ব দেন প্রতিষ্ঠানটির দুই গবেষক বেন ফ্রিম্যান এবং নিক ক্লেভিল্যান্ড-স্টোট। তারা যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ৫০টি থিংক ট্যাংকের অর্থায়নের স্বচ্ছতা পর্যালোচনা করেছেন। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে (২০১৯-২০২৪) এসব প্রতিষ্ঠান ১১ কোটি ডলারেরও বেশি অনুদান পেয়েছে বিদেশি সরকার ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে।

গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, থিংক ট্যাংকগুলোতে সবচেয়ে বেশি টাকা ঢালার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। এরপর রয়েছে যুক্তরাজ্য এবং কাতার। এই তিনটি দেশ যথাক্রমে ১ কোটি ৬৭ লাখ, ১ কোটি ৫৫ লাখ, এবং ৯১ লাখ ডলার দিয়েছে।

অন্যদিকে, এই থিংক ট্যাংকগুলো সবচেয়ে বেশি অর্থ পেয়েছে আটলান্টিক কাউন্সিল, ব্রুকিংস ইনস্টিটিউট এবং জার্মান মার্শাল ফান্ড থেকে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এসব প্রতিষ্ঠান প্রতিরক্ষাবিষয়ক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ৩ কোটি ৪৭ লাখ ডলার পেয়েছে।

প্রতিরক্ষাবিষয়ক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থ দিয়েছে নর্থরোপ গ্রুমম্যান, লকহিড মার্টিন এবং মিতসুবিশি।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ৫০টি থিংক ট্যাংকগুলোর মধ্যে ৩৬ শতাংশ (১৮টি) প্রতিষ্ঠান এমন বিপুল পরিমাণ কালো টাকার ওপর নির্ভরশীল, যাদের অর্থায়ন সম্পর্কে প্রায় কোনও ধরনের তথ্যই প্রকাশিত হয় না।

এছাড়া, ৯টি প্রতিষ্ঠান (১৮ শতাংশ) তাদের অর্থায়নের উৎস সম্পর্কে পুরোপুরি স্বচ্ছ, এবং ২৩টি প্রতিষ্ঠান (৪৬ শতাংশ) আংশিক স্বচ্ছ।

গবেষকরা আরো জানিয়েছেন, গত পাঁচ বছরে মার্কিন সরকার দেশটির থিংক ট্যাংকগুলোকে প্রায় ১৫০ কোটি ডলার দিয়েছে। এর সিংহভাগ অর্থ পেয়েছে র‌্যান্ড করপোরেশন, যারা সরাসরি মার্কিন সরকারের সঙ্গে কাজ করে।

কালো টাকায় চলা শীর্ষ ১৮টি থিংক ট্যাংকের মধ্যে রয়েছে আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউট, বেলফার সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স, ক্যাটো ইনস্টিটিউট, সেন্টার ফর ইমিগ্রেশন স্টাডিজ, সেন্টার ফর পলিসি সিকিউরিটি, সেন্টার ফর ট্রান্সআটলান্টিক রিলেশনস, ডিসকভারি ইনস্টিটিউট, এবং ফরেইন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট।

এছাড়া ফাউন্ডেশন ফর দ্য ডিফেন্স অব ডেমোক্র্যাসি, গেইটস্টোন ইনস্টিটিউট, গ্লোবাল সিকিউরিটি ইন্সটিটিউট, হার্টল্যান্ড ইনস্টিটিউট, হুভার ইনস্টিটিউশন, ম্যানহাটন ইনস্টিটিউট ফর পলিসি রিসার্চ, মার্কাটাস সেন্টার, নিউলাইনস ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি, থার্ড ওয়ে, এবং ওয়াশিংটন ইনস্টিটিউট ফর নিয়ার ইস্ট পলিসিও এই তালিকায় রয়েছে।

এই গবেষণা প্রতিবেদনটি যুক্তরাষ্ট্রের থিংক ট্যাংকগুলোর অর্থায়নের স্বচ্ছতার গুরুত্ব এবং বিদেশি সরকারের প্রভাবের বিষয়টি পুনরায় আলোচনায় নিয়ে এসেছে, যা দেশের নীতিনির্ধারণী প্রক্রিয়ায় ব্যাপক প্রভাব ফেলছে।

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে