নিজস্ব প্রতিবেদক: গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলনে মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এরমধ্যে পেরিয়ে গেছে তিন মাস। এই তিন মাসে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথিত ফোনালাপের বেশ কিছু অডিও ভাইরাল হয়েছে।

ভারত যদিও এই সব ‘ফাঁস’ হওয়া অডিও নিয়ে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করেনি, তবে একাধিক পদস্থ সূত্র একান্ত আলোচনায় স্বীকার করেছেন এগুলো বাস্তবিকই শেখ হাসিনার কণ্ঠস্বর।

ভারতে রাজধানী দিল্লির নর্থ ব্লকের একজন কর্মকর্তা বলছেন, “আমি জানি না এটা এআই দিয়ে বানানো হয়েছে, না কি শেখ হাসিনার নিজেরই গলা– তবে তার তো পরিচিতদের সঙ্গে কথাবার্তা বলায় কোনও বিধিনিষেধ নেই, এখন কেউ যদি সেই আলাপ রেকর্ড করে লিক করে দেয়, তাতে আমাদের কী করার আছে?”

তবে ভারতের কোনও কোনও পর্যবেক্ষক ধারণা করছেন, শেখ হাসিনা যাতে নিজের দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়ে তাদের মনোবল ধরে রাখতে পারেন– সে জন্য দিল্লিই এই সব কথাবার্তা হতে দিচ্ছে এবং পরে সুযোগ বুঝে তা ‘লিক’ও করে দিচ্ছে, যাতে তা যত বেশি সম্ভব লোকের কাছে পৌঁছতে পারে।

প্রকৃত কারণ যাই হোক না কেন, বাস্তবতা হলো শেখ হাসিনা ভারতে গৃহবন্দী বা রাজনৈতিক বন্দী নন- ফলে দেশে-বিদেশে পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ তিনি পাচ্ছেন।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, “ভারতে যখন কোনো রাজনৈতিক নেতা গৃহবন্দি থাকেন, তখন বহির্বিশ্বের সঙ্গে তার যোগাযোগের অধিকার কার্যত কেড়ে নেওয়া হয়।”

তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, “যেমন ধরুন পাঁচ বছর আগে কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপ করার পর ওমর আবদুল্লা বা মেহবুবা মুফতিদের যখন গৃহবন্দি করা হয়, তারা কিন্তু দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেখা করা তো দূরস্থান – মোবাইল বা ইন্টারনেট সংযোগও পাননি।” তাই শেখ হাসিনা যে ভারতে গৃহবন্দি নন তার প্রমাণ তিনি দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত কথা বলতে পারছেন।

তিনি দিল্লিতে তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ এবং ভার্জিনিয়ায় ছেলে সজীব ওয়াজেদের সাথে প্রায় প্রতিদিনই যোগাযোগ করছেন।

তিনি বলেন, নিউজ চ্যানেল, খবরের কাগজ বা ইন্টারনেটেও শেখ হাসিনার সম্পূর্ণ অ্যাকসেস আছে।

তবে ৫ই অগাস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের যে নেতাকর্মীরা পালিয়ে ভারতে চলে এসেছেন তাদের কারও কারও সঙ্গে শেখ হাসিনার যোগাযোগ হলেও এরা কেউই সশরীরে (ইন পার্সন) দলনেত্রীর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাননি বলে তিনি জানান। সূত্র: বিবিসি বাংলা।

আরিফ/