ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

কোম্পানি আইন দ্রুত সংস্কারের তাগিদ ডিসিসিআইয়ের

২০২৩ নভেম্বর ১৮ ২১:৩৯:৩৩
কোম্পানি আইন দ্রুত সংস্কারের তাগিদ ডিসিসিআইয়ের

নিজস্ব প্রতিবেদক : ব্যবসায়ী সমাজের আস্থা বৃদ্ধি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যমান কোম্পানি আইন সংস্কার এবং বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)।

শনিবার (১৮ নভেম্বর) ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে কোম্পানি আইন ১৯৯৪-এর সংস্কারবিষয়ক সেমিনারে ডিসিসিআই সভাপতি ব্যারিস্টার সামীর সাত্তার এ তাগিদ দেন।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয় থেকে খসড়া কোম্পানি আইনের ওপর বেশ কিছু দিক-নির্দেশনা দিয়েছে, যা নিয়ে কাজ করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং দ্রুত তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

বাণিজ্য সচিব বলেন, কোম্পানি আইনে বেশি মাত্রায় ক্ষমতা আরোপ ও শাস্তির বিধান না থাকা প্রয়োজন, কারণ এতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।আরজেএসসির কার্যক্রমে আরও অটোমেশন আনতে বর্তমানে বেশকিছু উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। অটোমেশন কার্যক্রম সম্পন্ন হলে সেবা প্রাপ্তির লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন করে আরজেএসসির শাখা অফিস স্থাপনের কোনো প্রয়োজন হবে না।

অনুষ্ঠানে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সামীর সাত্তার বলেন, ব্যবসায়ী সমাজের আস্থা বৃদ্ধি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যমান কোম্পানি আইনের সংস্কার এবং দ্রুত বাস্তবায়ন সময়ের দাবি। দেশে ব্যবসা সহায়ক পরিবেশ উন্নয়নের পাশাপাশি কর্পোরেট খাতে জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে কোম্পানি আইন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, দীর্ঘদিনের পুরনো এ আইনটি বর্তমানে দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক পরিস্থিতি মোকাবিলা ও বেসরকারি খাতের সক্ষমতা বাড়াতে যথেষ্ট নয়। এ লক্ষ্যে তথ্য-প্রযুক্তির সর্বাত্মক ব্যবহারের মাধ্যমে অটোমেশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থার ব্যবহার বাড়ানো এবং মেধা-সত্ত্ব আইনের ব্যবহার বাড়ানো প্রয়োজন।

এছাড়াও কোম্পানি আইনটি বৈশ্বিক আইনের সঙ্গে মিল রেখে ‘মার্জার’ এবং ‘একুইজেশন’কে অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানান ঢাকা চেম্বারের সভাপতি।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম। তিনি বলেন, কোম্পানি আইনে ‘মার্জার’ এবং ‘একুইজেশন’কে অন্তর্ভুক্তির কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে কোনো কোম্পানির অবলুপ্তির প্রক্রিয়া বেশ দীর্ঘ ও ব্যয় সাপেক্ষ, তাই প্রস্তাবিত কোম্পানি আইনে বিষয়টি সহজীকরণে প্রয়োজনীয় সংশোধন করা প্রয়োজন।

এছাড়াও তিনি খসড়া আইনে ‘বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (এডিআর)’ এবং ‘মধ্যস্থতা’কে বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেন এবং সেই সঙ্গে পাবলিক লিস্টেড কোম্পানি নয়, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে আরও স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে ‘ইন্ডিপেনডেন্ট ডিরেক্টর’ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানান।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশের সভাপতি মো. আব্দুর রহমান খান, জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মস (আরজেএসসিস)-এর রেজিস্ট্রার (যুগ্ম সচিব) মো. আব্দুস সামাদ আল আজাদ, ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার মার্টিন হল্টম্যান, দি ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশ (আইক্যাব)-এর কাউন্সিল মেম্বার ও প্রাক্তন সভাপতি মো. শাহাদত হোসেন এবং ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জাভেদ আখতার সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।

মো. শাহাদত হোসেন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে সময়মত বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজন, প্রতিষ্ঠান বিলুপ্তির প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও দীর্ঘসূত্রিতা হ্রাস, এসএমইদের জন্য সার্বজনীন সংজ্ঞা নির্ধারণ এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিতকল্পে স্বাধীন পরিচালক নিয়োগ প্রদানের প্রস্তাব করেন।

মো. আব্দুর রহমান খান বলেন, কোম্পানি আইন আধুনিক ও যুগোপযোগী হলে ব্যবসা পরিচালন প্রক্রিয়া আরও সহজতর হবে। তাই আমাদের এ আইন দ্রুত সময়ের মধ্যে সংশোধন আবশ্যক, পাশাপাশি ২-৩ বছর অন্তর অন্তর আইনটির সংস্কার করার বিধান রাখা প্রয়োজন।

শেয়ারনিউজ, ১৮ নভেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে