ঢাকা, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

হাদির খুনিকে ভারতে পাঠানো হল, দায়িত্বে ছিলেন এই দুই নেতা

২০২৫ ডিসেম্বর ২৭ ১১:৫৩:৪৬
হাদির খুনিকে ভারতে পাঠানো হল, দায়িত্বে ছিলেন এই দুই নেতা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় খুনিদের নিরাপদে সীমান্ত পার করে দেওয়ার একটি সুপরিকল্পিত নেটওয়ার্কের তথ্য পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

মামলার তদন্তে উঠে এসেছে, খুনিদের পালানোর ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন ঢাকা মহানগর উত্তর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও মিরপুর এলাকার সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম চৌধুরী ওরফে বাপ্পী। তাকে সহযোগিতা করেন তার ভগ্নিপতি আমিনুল ইসলাম।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ইতোমধ্যে আমিনুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে। এ নিয়ে পুলিশ ও র‍্যাবের হাতে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরপরই প্রধান শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ও তার সহযোগী আলমগীর শেখকে সীমান্ত পার করে দেওয়ার বিষয়টি আগে থেকেই পরিকল্পিত ছিল। ফয়সাল ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা এবং আলমগীর আদাবর থানা যুবলীগের কর্মী।

তথ্য অনুযায়ী, ঘটনার রাতেই ফয়সাল ও আলমগীর ঢাকা ত্যাগ করেন। একাধিক যানবাহন পরিবর্তন করে তারা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট সীমান্ত এলাকায় পৌঁছান এবং সেখান থেকে অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যান। এই পুরো প্রক্রিয়াটি সমন্বয় করেন যুবলীগ নেতা তাইজুল ইসলাম। ঘটনার সময় তিনি নিজে ভারতে অবস্থান করলেও দূর থেকে নির্দেশনা দেন।

তদন্তে আরও জানা যায়, হালুয়াঘাট সীমান্ত এলাকায় টাকার বিনিময়ে অবৈধ পারাপারের সঙ্গে যুক্ত কয়েকজন দালাল সক্রিয় রয়েছে। তাদের একজন ফিলিপ স্নাল, যার বাড়ি সীমান্তসংলগ্ন ভুটিয়াপাড়া গ্রামে।

হত্যার কিছুক্ষণ পর তাইজুল তার ভগ্নিপতি আমিনুল ইসলামকে ফোন করে জানান, তিনি ভারত থেকে ফিলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তখন আমিনুলকে দ্রুত ফিলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানাতে বলা হয়—ওই রাতেই দুই ব্যক্তিকে সীমান্ত পার করাতে হবে।

আমিনুল ফিলিপের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন এবং পরে তা তাইজুলকে জানান। এরপর তাইজুলের নির্দেশে আমিনুল তাৎক্ষণিকভাবে ফিলিপকে ৫ হাজার টাকা পাঠান। এই অর্থের বিনিময়েই ফয়সাল ও আলমগীরকে সীমান্ত পার করে দেওয়া হয়।

গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে নির্বাচনী প্রচারে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তরা শহীদ শরিফ ওসমান হাদিকে মাথায় গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুর নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান।

পরে তার মরদেহ দেশে এনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে দাফন করা হয়।

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে