ঢাকা, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

সুদের হার কমানো সম্ভব নয়: গভর্নর

২০২৫ ডিসেম্বর ০৮ ১৯:১৩:৪৭
সুদের হার কমানো সম্ভব নয়: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বৈদেশিক বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাপক সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

আজ (৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলানগরে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ স্টেট অব দ্য ইকোনমি ২০২৫’ এবং ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাংলাদেশ অগ্রগতি প্রতিবেদন ২০২৫’ প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।

ড. মনসুর বলেন, ‘দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশে বৈদেশিক রিজার্ভ কমে গিয়েছিল, খেলাপি ঋণ বাড়ছিল, এবং অর্থবাজারে তীব্র চাপ বিদ্যমান ছিল। সেই পরিস্থিতিতে বিনিময় হার স্থিতিশীল করা ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ।’ প্রতি ডলারের বিনিময় হার প্রায় ১২০ টাকা ছিল, যা এখন পুরোপুরি বাজারভিত্তিক ব্যবস্থায় স্থিতিশীল।

গভর্নর জানান, দেশের বৈদেশিক খাত ইতিবাচক অবস্থানে রয়েছে। চলতি হিসাবে উদ্বৃত্ত, আর্থিক হিসাবেও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি এবং সামগ্রিক পরিশোধ ভারসাম্য বর্তমানে উদ্বৃত্তে আছে। এছাড়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এক বছরে প্রায় ১৭ বিলিয়ন ডলার থেকে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে।

সুদহার সম্পর্কে ড. মনসুর বলেন, ‘বর্তমানে সুদের হার কমানো সম্ভব নয়। মূল্যস্ফীতি কমে এলেও বাস্তব সুদহার সামান্য ইতিবাচক রাখা প্রয়োজন। মুদ্রানীতি সম্পূর্ণ বাজারভিত্তিক থাকবে এবং প্রশাসনিক হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই।’

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনের অনিয়ম ও খেলাপি ঋণ নিয়ে স্বচ্ছতা আনার পর দেখা গেছে, প্রকৃত খেলাপি ঋণের হার ৩৫ শতাংশেরও বেশি। তবে ডিসেম্বরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হ্রাস আশা করা হচ্ছে।

ড. মনসুর জানান, বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যেই ১৪টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে, পাঁচটি ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে এবং নয়টি নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবসান প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছে। এছাড়া ব্যাংক রেজোলিউশন, ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন এবং আমানত বীমা আইন বাস্তবায়নসহ গুরুত্বপূর্ণ আইনি সংস্কারও চালু রয়েছে।

তিনি বলেন, একীভূত নতুন ব্যাংকগুলো প্রথম বা দ্বিতীয় বছরের মধ্যেই লাভজনক হতে পারে। লোকসানগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য ‘লভ্যাংশ নয়, বোনাস নয়’ নীতিমালা কার্যকর রয়েছে। বড় ঋণখেলাপিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠানও অর্থায়নের অভাবে বন্ধ হয়নি। বৈদেশিক খাত পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তবে আর্থিক খাতের পূর্ণ স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সময় লাগবে।

ড. মনসুর আশা প্রকাশ করেন, কেন্দ্রিয় ব্যাংকের কাঠামোগত ও আইনি সংস্কারগুলো অব্যাহত থাকবে এবং আগামী সরকার এগুলোকে বজায় রাখবে।

এমজে/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে