ঢাকা, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫
Sharenews24

রিমান্ডে মার্কিন নাগরিকের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৭ ১০:৫৮:৫২
রিমান্ডে মার্কিন নাগরিকের চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক এনায়েত করিম ওরফে মাসুদ করিম চৌধুরী রিমান্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তিনি নিজেকে একটি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থার দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক প্রধান পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশ কর্মকর্তাদের জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ

জানা গেছে, এনায়েত করিম ৬ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে আসার সময় ঢাকা বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন পুলিশের একজন পদস্থ কর্মকর্তা। এরপর ডিআইজি পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা তাকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দিতে নিজের দেহরক্ষীকেও নিয়োজিত করেন। গ্রেপ্তারকালে ওই দেহরক্ষী এনায়েত করিমের সঙ্গে ছিলেন। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে সংশ্লিষ্ট ডিআইজির বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

লুকিয়ে থাকা বিলাসবহুল হোটেলে

দেশে আসার পর প্রথম দুই দিন এনায়েত করিম রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে অবস্থান করেন। ওই হোটেল বুকিং ও ভাড়া পরিশোধ করেছিলেন জাতীয় পার্টির রওশনপন্থি অংশের মহাসচিব পরিচয় দেওয়া কাজী মামুনুর রশিদ। গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে এসব তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছেন তিনি।

রিমান্ড ও মামলা পরিস্থিতি

এনায়েত করিমকে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে ডিবি পুলিশ। আদালত ৪৮ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। এর আগে ৫৪ ধারায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয় এবং রমনা থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রাজনৈতিক প্রতারণার বিস্তৃত চিত্র

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র বলছে, এনায়েত করিম দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও প্রভাবশালীদের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছেন। রাষ্ট্রক্ষমতায় বসানোর প্রতিশ্রুতি, প্রেসিডেনশিয়াল ডিনারে আমন্ত্রণ, বিদেশি সহায়তা পাওয়ার গ্যারান্টি ইত্যাদি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন।

২০১৪ ও ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন ঘিরেও প্রতারণা

সূত্র আরও জানায়, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতার কাছ থেকে অর্থ নিয়েছেন। এমনকি বিএনপিপন্থি এক সাংবাদিক নেতা এবং একটি নবগঠিত দলের এক সাবেক নেতার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে প্রতারণা চালিয়েছেন। এখনও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানা গেছে।

পুরোনো অপরাধের ইতিহাস

এই এনায়েত করিম এর আগেও বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকার আমলে চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। অর্থাৎ তার প্রতারণার ইতিহাস বহু পুরনো এবং পদ্ধতিগত।

ডিবির বক্তব্য ও পরবর্তী পদক্ষেপ

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রিমান্ডে এনায়েত করিমের কাছ থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের ভিত্তিতে তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে, যদি যথাযথ প্রমাণ পাওয়া যায়।

জাহিদ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে