ঢাকা, সোমবার, ৪ আগস্ট ২০২৫
Sharenews24

দিল্লি পুলিশের বিতর্কিত দাবিতে জবাব দিল বাংলা পক্ষ

২০২৫ আগস্ট ০৪ ১৯:১৫:৪৫
দিল্লি পুলিশের বিতর্কিত দাবিতে জবাব দিল বাংলা পক্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের রাজধানী দিল্লির লোধি কলোনি থানার পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে ‘বাংলাদেশি ভাষার’ অনুবাদক চাওয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। শুধু নেটদুনিয়াই নয়, পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলেও এই ঘটনায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

দিল্লি পুলিশের পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, তারা ৮ জন সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করেছে। এদের কাছ থেকে প্রাপ্ত কিছু পরিচয়পত্র ‘বাংলাদেশি ভাষায়’ লেখা রয়েছে। সেই নথিপত্র অনুবাদের জন্য একজন ‘বাংলাদেশি ভাষায় পারদর্শী সরকারী অনুবাদক’ চাওয়া হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ‘রেসিডেন্ট কমিশনার’-এর দপ্তর বঙ্গভবনের কাছে।

চিঠিটি প্রকাশ্যে আসতেই তা ভাইরাল হয়ে পড়ে। আর তাতেই শুরু হয় বিতর্ক।

সংগঠন ‘বাংলা পক্ষ’ বলছে, দিল্লি পুলিশের এই বক্তব্য বাঙালিদের প্রতি দীর্ঘদিনের ‘ঘৃণামূলক মনোভাবের’ প্রতিফলন। তাদের মতে, হিন্দি বলয়ে অনেকের মাঝেই ভুল ধারণা প্রচলিত— বাংলা শুধু বাংলাদেশের ভাষা, ভারতের নয়।

তারা আরও জানায়, "বাংলা ভাষার বহু উপভাষা থাকলেও ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে কোনো স্বীকৃত ভাষা নেই। চিঠিতে 'বাংলাদেশি ভাষায় লেখা হরফ' উল্লেখ করে যেটা বোঝানো হয়েছে, তা বাংলারই কোনো উপভাষা হতে পারে— বরিশাইল্যা, চাটগাঁইয়া বা বাঁকুড়ি। কিন্তু লিখিত হরফের ক্ষেত্রে তা বাংলা ভাষাই।"

এই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় চিঠির ছবি শেয়ার করে লিখেছেন:“দেখুন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন দিল্লি পুলিশ কীভাবে বাংলাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলছে! বাংলা আমাদের মাতৃভাষা, রবীন্দ্রনাথ ও বিবেকানন্দের ভাষা। এ ভাষায় আমাদের জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় গান রচিত হয়েছে। এই ভাষা ভারতের কোটি কোটি মানুষের ভাষা— ভারতীয় সংবিধানে স্বীকৃত ২২টি ভাষার একটি। এটি অপমানজনক, কলঙ্কজনক এবং অসাংবিধানিক।”

ভারতের সংবিধানে স্বীকৃত ২২টি ভাষার একটি হলো বাংলা। ভারতীয় টাকাতেও (মুদ্রা) বাংলাসহ এসব ভাষায় মূল্যমান লেখা থাকে। তাই বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ হিসেবে চিহ্নিত করাকে অনেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও বিভ্রান্তিকর বলছেন।

‘বাংলা পক্ষ’-এর প্রধান সংগঠক গর্গ চ্যাটার্জি বলেন,“ভারতের বাঙালিদের বিরুদ্ধে একটা ঘৃণার রাজনীতি গড়ে তোলা হয়েছে। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে পশ্চিমবঙ্গবাসীর ওপরে চরম অত্যাচার চালানো হচ্ছে। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গণহত্যার প্রস্তুতির দশ ধাপের মধ্যে ভারত ইতিমধ্যেই ছয়টি ধাপ পার করে ফেলেছে।”

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে