ঢাকা, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

মাইলস্টোনে ৯ ঘণ্টা থাকার কারণ জানালেন প্রেস সচিব 

২০২৫ জুলাই ২৩ ১২:০৬:৪৪
মাইলস্টোনে ৯ ঘণ্টা থাকার কারণ জানালেন প্রেস সচিব 

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে গিয়ে দীর্ঘ সময় অবস্থানের ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

বুধবার (২৩ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লেখেন,“গতকাল আমরা ৯ ঘণ্টা ধরে স্কুলে ছিলাম। চাইলে তার আগেই চলে আসতে পারতাম, কিন্তু উপদেষ্টারা সংকট সমাধানে শান্তিপূর্ণ ও মানবিক পন্থা অবলম্বনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। তারা বলেছিলেন, যতক্ষণ দরকার, ততক্ষণ থাকবেন। আমরা কেবল তখনই স্কুল ত্যাগ করেছি, যখন সেটি প্রাসঙ্গিক ও নিরাপদ ছিল।”

প্রেস সচিব জানান, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মাইলস্টোন কলেজে একটি ‘কন্ট্রোল রুম’ স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপদেষ্টা।

এই কন্ট্রোল রুমে প্রতিদিন নিহত ও আহতদের সংখ্যা হালনাগাদ করা হবে এবং তা কলেজের রেজিস্ট্রার বইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। উপদেষ্টারা পরামর্শ দিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ায় বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদেরও সম্পৃক্ত করা হবে।তিনি উল্লেখ করেন, বুধবার থেকেই কন্ট্রোল রুমটি চালু হওয়ার কথা।

প্রেস সচিব লিখেছেন,“গতকাল আমরা শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করেছি এবং শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা এখনো এই মর্মান্তিক ঘটনার মানসিক ধাক্কা সামলে উঠতে পারেননি। পরিবেশ ছিল ভারাক্রান্ত, ক্ষোভ ও কষ্টে পরিপূর্ণ। অনেক শিক্ষার্থী নিজের চোখে দেখা ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এবং হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে ছড়িয়ে পড়া বিভ্রান্তিকর তথ্য নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।”

শফিকুল আলম তার অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে বলেন,“২০০২ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমি বহু বড় দুর্ঘটনার সংবাদ কভার করেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, বাংলাদেশে প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা প্রায় অসম্ভব। দুর্ঘটনার পরপরই নিখোঁজদের খোঁজে স্বজনরা যোগাযোগ শুরু করেন, এবং পরে হাসপাতাল ও প্রশাসনিক তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে অধিকাংশের অবস্থান জানা যায়।”

তিনি আরও বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলে প্রতিদিনের উপস্থিতি তালিকা (অ্যাটেনডেন্স রেকর্ড) বিশ্লেষণ করে এখনো যাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাদের শনাক্ত করা সম্ভব।স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সামরিক বাহিনী আহতদের অবস্থা নিয়ে নিয়মিত তথ্য দিচ্ছে বলেও জানান তিনি।

প্রেস সচিব নিহতদের স্মরণ করে বলেন,“যারা এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন, তারা শহীদ। এটি নিঃসন্দেহে একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি। আসুন, আমরা যেন ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে পারি সে লক্ষ্যে আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করি।”

তিনি সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুতি দেন, আকাশপথে দুর্ঘটনা শূন্যে নামিয়ে আনতে জাতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করা হবে।

আইএসপিআরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছিল ৩১ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হালনাগাদ তথ্য অনুসারে, নিহতদের মধ্যে ২৩ জন শিশু সহ মোট ২৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। পরে রাত পর্যন্ত এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩২ জনে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে