ঢাকা, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তিতে কোম্পানির কর ব্যবধান নিয়ে বিতর্ক

২০২৫ জুলাই ০৯ ০৬:৪৭:১০
শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তিতে কোম্পানির কর ব্যবধান নিয়ে বিতর্ক

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজারের সম্প্রসারণ এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কাঠামো নিয়ে মঙ্গলবার (০৮ জুলাই) বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ) এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় বক্তারা তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর ব্যবধান, বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের করণীয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।

এপেক্স ফুটওয়্যারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর মন্তব্য করেন, তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর ব্যবধান মাত্র ৫ শতাংশ রাখলে কোনো কোম্পানিই শেয়ারবাজারে আসতে আগ্রহী হবে না।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, "‘কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্ত না হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে ভ্যালুয়েশন। আমরা যারা কোম্পানি তৈরি করি, স্পন্সর করি তারা যদি সঠিক ভ্যালুয়েশন না পায় তারা আসবে না। তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর ব্যবধান যদি ২০ শতাংশ থাকে তাহলে এটা কাজ করবে। যদি ১৫ শতাংশও থাকে তাহলেও কাজ করবে। কিন্তু যদি তালিকাভুক্ত ও অতালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর ব্যবধান ৫ শতাংশ রাখি তাহলে কোনো কোম্পানিই আসবে না। এভাবে পৃথিবীর কোথাও কোম্পানিগুলো শেয়ারবাজারে আসবে না। এটা হচ্ছে বাস্তবতা।’

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী। তিনি তার বক্তব্যে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে শেয়ারবাজারের সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরেন। ব্যাংক খাতের বর্তমান সংকটের কথা স্বীকার করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, "এ ধরনের পরিস্থিতিতে শেয়ারবাজার ভালো করবে সেটি কীভাবে প্রত্যাশা করেন?"

তবে তিনি আশ্বস্ত করেন, সরকার শেয়ারবাজারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি জানান, শেয়ারবাজারের উন্নয়নে নীতি সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি, যা বর্তমানে অনুপস্থিত। এই সমন্বয় সাধনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, বিএসইসি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক চলছে এবং তিনি আশা প্রকাশ করেন, বিনিয়োগকারীরা অচিরেই এর সুফল দেখতে পাবেন।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম তার বক্তব্যে গত এক বছরে কোনো নতুন আইপিও (Initial Public Offering) না আসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি মনে করিয়ে দেন, আইপিও আনার দায়িত্ব বিএসইসির নয়, বরং মার্চেন্ট ব্যাংকারদের। দেশে ৬৬টি মার্চেন্ট ব্যাংক থাকা সত্ত্বেও গত ১৫ বছরে তারা মাত্র ১৩৮টি কোম্পানি বাজারে এনেছে, যা তাদের পারফরম্যান্স নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী তার বক্তব্যে মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশে সুকুকের মতো শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক পণ্যের ব্যাপক চাহিদার কথা তুলে ধরেন। তিনি এই ধরনের পণ্য আরও বেশি করে বাজারে নিয়ে আসার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন, যা বাজারের বৈচিত্র্য বাড়াতে এবং নতুন বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সহায়ক হবে।

বিএমবিএ সভাপতি মাজেদা খাতুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বীমা ও শেয়ারবাজার অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. সাঈদ কুতুব, এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ইস্তেকমাল হোসেন।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে