ঢাকা, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
Sharenews24

বাংলাদেশের জন্য ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা

২০২৫ মে ১৮ ১০:০৮:৪৮
বাংলাদেশের জন্য ভারতের নতুন নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্থলবন্দরগুলো দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ফলে তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কূটনৈতিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই সিদ্ধান্ত চীনে অনুষ্ঠিত এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসের ‘ল্যান্ডলকড’ মন্তব্যের পরপরই নেওয়া হয়েছে। (সূত্র: ANI News)

চীনের এক সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে ড. ইউনুস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ‘সমুদ্রবন্দরবিহীন (ল্যান্ডলকড)’ এলাকা হিসেবে উল্লেখ করেন। ভারতের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মহলের মতে, এই মন্তব্য তাদের আঞ্চলিক সংযোগ ও অবকাঠামোগত উন্নয়নকে হেয় করেছে। ভারত এই মন্তব্যকে অপমানজনক হিসেবেও দেখছে।

ভারতের নতুন বিধিনিষেধ অনুযায়ী, আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, মিজোরাম, এবং পশ্চিমবঙ্গের ফুলবাড়ি ও চ্যাংরাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে আর বাংলাদেশি পণ্য প্রবেশ করতে পারবে না। অথচ আগে বাংলাদেশের ৯৩% রপ্তানি এসব বন্দর দিয়েই ভারতে যেত।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এখন থেকে বাংলাদেশি পণ্য কেবল পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দর কিংবা মহারাষ্ট্রের নাভা শেভা বন্দরের মাধ্যমে ভারতে প্রবেশ করতে পারবে।

ভারত অভিযোগ করেছে, বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে একতরফাভাবে ভারতীয় বাজারে প্রবেশাধিকার পেলেও, ভারতীয় পণ্যের জন্য একই সুবিধা দেয়নি। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন,

“বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যে ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পারস্পরিকতার ভিত্তিতে চলতে হবে, নাহলে একতরফা সুবিধা আর নয়।”

এছাড়া, ভারত আরও দাবি করেছে, বাংলাদেশ ট্রানজিট ব্যবহারের জন্য প্রতি কিলোমিটারে টনপ্রতি ১.৮ টাকা ফি নিচ্ছে, যা তাদের অভ্যন্তরীণ হারের (০.৮ টাকা) তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। এতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের শিল্প খাত মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়ছে বলে অভিযোগ।

এই নিষেধাজ্ঞার ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক পণ্য, মেলামাইন, আসবাবপত্র, জুস, কোমল পানীয়, বেকারি ও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য পণ্যের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে। সবচেয়ে বড় ধাক্কা আসবে তৈরি পোশাক খাতে, যেখান থেকে বাংলাদেশ প্রতিবছর প্রায় ৭৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য ভারতে রপ্তানি করে থাকে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ঘটনা ভারত-বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সৌহার্দ্যপূর্ণ বাণিজ্যিক সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের আর্থিক আঘাত হলেও, ভারতের স্থানীয় উৎপাদকদের জন্য বাজার দখলের সুযোগ তৈরি হতে পারে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে