ঢাকা, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
Sharenews24

জয়া, মিথিলা, শাকিবদের দেশছাড়া করার দাবি, ভিডিও ভাইরাল

২০২৫ মে ০৫ ১৭:৩৮:৪৭
জয়া, মিথিলা, শাকিবদের দেশছাড়া করার দাবি, ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ছে প্রতিবেশী ভারতেও। এই পটপরিবর্তনের জেরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে নানান আলোচনা ও টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। এরই মাঝে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন ভারতের কলকাতাভিত্তিক বিতর্কিত টিভি চ্যানেল ‘রিপাবলিক বাংলা’-র উপস্থাপিকা স্বর্ণালী সরকার। সম্প্রতি এক টক শো-তে তিনি বাংলাদেশি অভিনয়শিল্পীদের ভারত থেকে ‘ঘাড়ধাক্কা’ দিয়ে বের করে দেওয়ার আহ্বান জানান, যা মুহূর্তেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যায়।

রিপাবলিক বাংলার নিয়মিত শো ‘সোজাসুজি স্বর্ণালী’-তে বক্তব্য রাখার সময় স্বর্ণালী সরকার বলেন “বাংলাদেশ থেকে অনেকে ভারতে এসে অভিনয় করছেন, নাম কামাচ্ছেন, টাকা রোজগার করছেন। কিন্তু ভারতে যখন বড় বড় ঘটনা ঘটে, তখন তারা নীরব থাকেন। নিজেদের দেশের অসভ্যতা নিয়ে কোনো কথা বলেন না, আবার ভারতে থেকেও ভারতের পক্ষে কিছু বলেন না। এইসব মুখোশধারী শিল্পীদের ঘাড়ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া উচিত।”

তার বক্তব্যে উঠে আসে আরও একটি দাবি – বাংলাদেশি শিল্পীদের উপস্থিতির ফলে পশ্চিমবঙ্গের স্থানীয় অভিনেতারা কাজ হারাচ্ছেন। তিনি বলেন, বহরমপুর, মালদা, দুর্গাপুর, মুর্শিদাবাদসহ বিভিন্ন জেলার বহু প্রতিভাবান শিল্পী বাংলাদেশি অভিনেতাদের কারণে সুযোগ পাচ্ছেন না।

স্বর্ণালী সরকার সরাসরি কয়েকজন বাংলাদেশি জনপ্রিয় অভিনয়শিল্পীর নাম উল্লেখ করেন, যাদের মধ্যে রয়েছেন: জয়া আহসান, রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, বিদ্যা সিনহা মিম, অপু বিশ্বাস, শাকিব খান

এছাড়াও ওপার বাংলার অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি, সোহিনী সরকার এবং গায়িকা ইমন চক্রবর্তীর নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

এই মন্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। নেটিজেনরা একে ‘ঘৃণা ছড়ানো’, ‘অসংবেদনশীল’ এবং ‘জাতিগত বিদ্বেষমূলক’ বক্তব্য হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। অনেকেই মনে করছেন, একজন সাংবাদিক বা গণমাধ্যমকর্মী হিসেবে এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্য দায়িত্বজ্ঞানহীন।

বিশেষ করে বর্তমান প্রেক্ষাপটে, যখন রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়ে অনেক বাংলাদেশি শিল্পী ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন, তখন এ ধরনের মন্তব্য তাদের মানবিক অবস্থানকেও অগ্রাহ্য করে।

একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন “শিল্পী কখনো জাতি বা সীমানায় আটকে থাকে না। শিল্পের জায়গা হবে মুক্ত, মানবিক ও আন্তঃসাংস্কৃতিক। এই ধরনের ঘৃণামূলক মন্তব্য শুধু সম্পর্ক নষ্ট করে, কিছুই তৈরি করে না।”

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে একটি সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধ রয়ে এসেছে। বহু বাংলাদেশি শিল্পী কলকাতার মঞ্চ, টিভি, চলচ্চিত্র ও ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন। ঠিক তেমনি ভারতীয় শিল্পীরাও বাংলাদেশে কাজ করেছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক এই ঘটনার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন – এই সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান কতটা নিরাপদ?

একজন বিশ্লেষক বলেন “রাজনীতি বদলায়, কিন্তু সংস্কৃতি টিকে থাকে মানুষের হৃদয়ে। শিল্পীদের প্রতি এমন আচরণ দুই দেশের মধ্যকার সৌহার্দ্য নষ্ট করতে পারে।”

মুয়াজ/

পাঠকের মতামত:

বিনোদন এর সর্বশেষ খবর

বিনোদন - এর সব খবর



রে