ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪
Sharenews24

বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় শেয়ারবাজারের দুই কোম্পানি

২০২৩ ডিসেম্বর ২৫ ১৫:১৪:১৬
বন্ধ হয়ে যাওয়ার শঙ্কায় শেয়ারবাজারের দুই কোম্পানি

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কোম্পানি দুটির নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান।

কোম্পানি দুটি হলো-বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের খুলনা পাওয়ার এবং সিরামিক খাতের স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক লিমিটেড। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

খুলনা পাওয়ার কোম্পানি-কেপিসিএল

কোম্পানিটির দুটি পাওয়ার প্লান্টের চুক্তির মেয়াদ আগামি মার্চ মাসে শেষ হয়ে যাবে। চুক্তি নবায়নে এখনো কোন অগ্রগতি নেই। এছাড়া বাণিজ্যিক কার্যক্রমে থেকেও কোম্পানিটি সর্বশেষ অর্থবছরে বড় লোকসান গুণেছে। এসব কারণে কোম্পানিটির ভবিষ্যতে ব্যবসা পরিচালনার সক্ষমতা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে কোম্পানিটির নিরীক্ষক প্রতিষ্ঠান। কোম্পানিটির ২০২২-২৩ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় এই তথ্য জানিয়েছেন নিরীক্ষক।

কোম্পানির নিরীক্ষক জানিয়েছেন, আর্থিক হিসাবের ১.৪ নং নোট অনুযায়ি বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভোলপমেন্ট বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে খুলনা পাওয়ারের দুটি প্লান্টের (ইউনিট ২ ও ৩) বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) আগামি ২৩ মার্চ শেষ হয়ে যাবে।

মেয়াদ শেষের পথে থাকায় খুলনা পাওয়ার কর্তৃপক্ষ চুক্তি ৫ বছরের নবায়নের জন্য বিপিডিবিকে লিখিত অনুরোধ জানিয়েছে। যা বর্তমানে প্রক্রিয়াধীন।

এদিকে চুক্তিতে থাকা অবস্থাতেই কোম্পানিটির ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। যেখানে পরিচালন নগদ প্রবাহ ঋণাত্মক হয়েছে ১৭৪ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

এমন পরিস্থিতিতে কোম্পানিটির ভবিষ্যতে ব্যবসা পরিচালনা সক্ষমতা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক।

এর আগে ২০২১ সালে খুলনা পাওয়ারের দুটি পাওয়ার প্লান্টের চুক্তির মেয়াদ নবায়ন করেছিল। সেক্ষেত্রে ২ বছর বাড়ানো হয়েছিল। তবে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। নবায়ন চুক্তিতে ‘no electricity no payment without any guaranteed off-take’ এই শর্ত থাকে।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত খুলনা পাওয়ারের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৩৯৭ কোটি ৪১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর বিনিয়োগকারীদের (উদ্যোক্তা/পরিচালক ছাড়া) মালিকানা ৩০.০১ শতাংশ। বুধবার (২০ ডিসেম্বর) লেনদেন শেষে কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ২৬.৬০ টাকায়। যা দীর্ঘদিন যাবত ফ্লোর প্রাইসে অবস্থান করছে।

স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাষ্ট্রিজ

কয়েক বছর ধরে ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের। সর্বশেষ অর্থবছরে বড় লোকসান গুনতে হয়েছে কোম্পানিটিকে। চলতি মূলধনের সংকটের কারণে দ্রুত বাড়ছে ব্যাংকঋণ। সম্পদের চেয়ে দেনার পরিমাণ অনেক বেশি দাঁড়িয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন অসংগতি উঠে এসেছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের নিরীক্ষা প্রতিবেদনে। এমতাবস্থায় কোম্পানিটির ব্যবসা পরিচালনা নিয়ে রয়েছে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন কোম্পানিটির নিরীক্ষক।

কোম্পানির নিরীক্ষক জানিয়েছেন, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক কর্তৃপক্ষ আর্থিক হিসাবে সম্পদ হিসেবে ১২ কোটি ৩২ লাখ টাকার মজুত পণ্য দেখিয়েছেন। এর মধ্যে পণ্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় (ওয়ার্ক ইন প্রসেস) ৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকার কাঁচামাল ছিল। তবে ওই মজুত পণ্যের অস্তিত্ব এবং মূল্য যাচাইয়ের মতো কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি তাঁরা।

২০২২-২৩ অর্থবছরে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের কর-পরবর্তী নিট লোকসান হয়েছে ১২ কোটি ৩১ লাখ টাকা, যা আগের বছরে ছিল কেবল ১ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে নিট লোকসান বেড়েছে ৫৯৭.২৮ শতাংশ। লোকসানের কারণে ২০২২ ও ২০২৩ সালে কোম্পানির শেয়ারহোল্ডাররা ডিভিডেন্ড বঞ্চিত হয়েছেন।

কোম্পানিটির এই শোচনীয় অবস্থায় ভবিষ্যতে ব্যবসা টিকিয়ে রাখা হুমকিতে ফেলেছে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিরীক্ষক।

শেয়ারনিউজ, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে