ঢাকা, শুক্রবার, ১০ অক্টোবর ২০২৫
Sharenews24

ব্যাংকে টাকা রেখে ভুলে গিয়েছিলেন, এরপর যা হলো

২০২৫ অক্টোবর ০৯ ১৭:৪১:৪০
ব্যাংকে টাকা রেখে ভুলে গিয়েছিলেন, এরপর যা হলো

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামে বসবাসরত চিকিৎসক দেবলা মল্লিক জীবনের এক প্রান্তে এসে এমন এক আর্থিক চমকের মুখোমুখি হলেন, যা তিনি নিজেও ভুলে গিয়েছিলেন। ১৯৮১ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত যশোর জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত থাকাকালে সোনালী ব্যাংক যশোর কর্পোরেট শাখায় তার নামে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলা হয়। বছর ঘুরতেই বদলি হয়ে চলে যান অন্যত্র — এরপর ওই অ্যাকাউন্ট ও টাকার কথা একেবারেই ভুলে যান তিনি।

প্রায় চার দশক পর হঠাৎ ব্যাংক থেকে ফোন পেয়ে হতবাক হয়ে যান ডা. দেবলা মল্লিক। তাকে জানানো হয়, তার ওই পরিত্যক্ত অ্যাকাউন্টে সুদ-আসলে জমা হয়েছে ৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। এরপর চট্টগ্রাম থেকে যশোরে এসে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বুঝে পান এই ‘ভুলে যাওয়া সম্পদ’।

"আমার গচ্ছিত এ টাকার কথা একেবারেই মনে ছিল না। যশোর সোনালী ব্যাংকের ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান অনেক খোঁজাখুঁজির পর আমাকে খুঁজে বের করেছেন। সবাই এভাবে করে না। তার এমন মানবিক উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।" ডা. দেবলা মল্লিক

সোনালী ব্যাংক যশোর কর্পোরেট শাখার এমন নজিরবিহীন উদ্যোগে শুধু দেবলা মল্লিকই নন, আরও ১৭ জন গ্রাহক তাদের দীর্ঘদিন অচল থাকা অ্যাকাউন্টের টাকা ফেরত পেয়েছেন। এই ১৮টি হিসাবের মধ্যে সবচেয়ে বেশি টাকা ছিল ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৩৯৫ টাকা, আর সবচেয়ে কম ৬০ হাজার ১৪১ টাকা।

আব্দুল কাদের বেগ, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা (সাবেক ওসি, যশোর কোতোয়ালি):ভুলে যাওয়া অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা ফেরত পান।

জিএম নাসিরুজ্জামান (সাবেক মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা):তার ছেলে নাইম হাসান শুভ জানান, বাবার অ্যাকাউন্ট থেকে ৮৩ হাজার ৫৪৯ টাকা ফেরত পেয়েছেন।

রবিউল আলম:৭ লাখ ৭৭ হাজার ৩৯৫ টাকা ফেরত পেয়েছেন এবং সেই অ্যাকাউন্টই আবার চালু করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ১০ বছর ধরে অচল অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানোর বিধান থাকলেও, সোনালী ব্যাংক যশোর কর্পোরেট শাখা ভিন্ন পথে হাঁটে।জেনারেল ম্যানেজার ইকবাল কবীর–এর অনুপ্রেরণায় ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ইনচার্জ) মো. মনিরুজ্জামান ও তার টিমের নিরলস প্রচেষ্টায় ১৮ জন গ্রাহককে শনাক্ত করে তাদের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া হয় সেই ‘হারিয়ে যাওয়া টাকা’।

"২৫০০টি ইনঅ্যাকটিভ অ্যাকাউন্ট চিহ্নিত করি। এর মধ্যে ২৪০০ অ্যাকাউন্টে ছিল খুব কম টাকা। বাকি ১০০টি যাচাই করে দেখি ১৮টিতে মোটা অংকের টাকা রয়েছে। তখন সিদ্ধান্ত নিই — এসব গ্রাহককে খুঁজে বের করে টাকা ফিরিয়ে দেব।"— মো. মনিরুজ্জামান, ডিজিএম (ইনচার্জ), সোনালী ব্যাংক, যশোর কর্পোরেট শাখা

প্রতিটি গ্রাহকই এই অর্থ পেয়ে উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন বলেন—“আমরা ব্যাংকে যে টাকা রাখি, তা তাদের কাছে আমানত। এতদিন পরও সেই আমানত ফিরিয়ে দিয়ে সোনালী ব্যাংক সত্যিই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।”

মুসআব/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে