ঢাকা, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
Sharenews24

বাবার ফাঁসিতে চাচা সালমান এফ রহমানের ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন হুম্মাম

২০২৫ জুলাই ২৬ ১১:১২:৪৫
বাবার ফাঁসিতে চাচা সালমান এফ রহমানের ভূমিকা নিয়ে মুখ খুললেন হুম্মাম

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে, বিএনপির প্রয়াত নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী তার বাবার বিচার ও ফাঁসি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করেছেন। সাক্ষাৎকারে তিনি তার চাচা এবং সাবেকপ্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ভূমিকা, বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং তার পরিবারের অভিজ্ঞতা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেন।

অনুষ্ঠানের উপস্থাপক উল্লেখ করেন যে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচার চলাকালীন অনেকেই মনে করতেন, প্রভাবশালী আত্মীয় সালমান এফ রহমানের কারণে তারা হয়তো কোনো সুবিধা পাবেন। এ বিষয়ে হুম্মাম কাদের চৌধুরী বলেন, "অনেকে আমাদের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন, এটা ঠিক। তবে সেটা সহানুভূতির পর্যায়েই থেকে গেছে।" তিনি আরও যোগ করেন যে, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এককভাবে একজনের হাতে ছিল, যা পরোক্ষভাবে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নির্দেশ করে। হুম্মাম বলেন, "আওয়ামী লীগে আমরা অনেক সময় বলি 'ছোট আপা', 'বড় আপা'—এখানে ছোট আপা বলতে শেখ রেহানাকে, আর বড় আপা বলতে শেখ হাসিনাকেই বোঝানো হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা ছিল কেবল বড় আপার হাতে।" তার মতে, একবার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গেলে তা বদলানোর ক্ষমতা দলের আর কারো ছিল না।

হুম্মাম কাদের চৌধুরী বিচার প্রক্রিয়াটিকে ত্রুটিপূর্ণ বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, বিচারের সময় স্কাইপ কেলেঙ্কারির মতো ঘটনা ঘটেছিল, যেখানে একজন বিচারপতি বলেছিলেন যে, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ফাঁসি দিলে তাকে সুপ্রিম কোর্টে পদোন্নতি দেওয়া হবে। এ ধরনের ঘটনা বিচার ব্যবস্থার উপর একটি "চিরস্থায়ী কালো দাগ" রেখে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এছাড়াও, রায়ের কপি ফাঁসের বিষয়ে তিনি বলেন, "সাংবাদিকরাই মূলত আমাদের কাছে রায়ের কপিটি নিয়ে আসেন। সেটা অনলাইনে লিক হয়ে গিয়েছিল।" তিনি জানান, রায়ের দিন তার বাবা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, "চেয়ারম্যান সাহেব, আপনার কিছু পড়ার দরকার নেই, রায় তো বাজারে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।"

হুম্মাম কাদের চৌধুরী জানান, ফাঁসির আগে রাষ্ট্রপতির কাছে তিনি ক্ষমার আবেদন নিয়ে যাননি, বরং একটি রি-ট্রায়ালের আইনি নথি নিয়ে গিয়েছিলেন।

ফাঁসির রাতের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, "সেদিন ছিল চরম আতঙ্কের দিন।" তাদের বাসা র‍্যাব, স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও ডিটেকটিভ ব্রাঞ্চ ঘিরে রেখেছিল। ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে বাবার সাথে শেষ দেখা করার মুহূর্তে তার বাবা ঘুমিয়ে ছিলেন। হুম্মাম তাকে ডেকে তুললে তিনি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করেন, "তোমরা এখানে কেন?" যখন তাকে জানানো হয় যে আজই তার রায় কার্যকর হবে, তখন তিনি পরিবারকে সাহস দিয়ে বলেন, "উপরে আল্লাহ আছেন।"

হুম্মাম তার বাবার শেষ কথাগুলো স্মরণ করে বলেন, তিনি বলেছিলেন, "ছয় ফিট দুই ইঞ্চি লম্বা একজন মানুষ, সে শুধু আল্লাহর কাছেই মাথা নত করে, মানুষের কাছে না।"

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে