ঢাকা, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
Sharenews24

বাংলাদেশে ভূমি ব্যবস্থাপনায় সরকারের কঠিন সিদ্ধান্ত! 

২০২৫ জুন ১৫ ১৬:২৯:২৫
বাংলাদেশে ভূমি ব্যবস্থাপনায় সরকারের কঠিন সিদ্ধান্ত! 

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ভূমি ব্যবস্থাপনায় যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঘোষণা করা হয়েছে, ভবিষ্যতে আর কোনো নতুন মাঠ জরিপ (ম্যানুয়াল সার্ভে) করা হবে না। এর পরিবর্তে ‘বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে (BDS)’ হবে দেশের সর্বশেষ এবং চূড়ান্ত ভূমি রেকর্ড ব্যবস্থা। সরকারের ভাষ্য অনুযায়ী, আধুনিক প্রযুক্তি— যেমন ড্রোন, স্যাটেলাইট, ডিজিটাল স্ক্যানিং—ব্যবহার করে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে জমির পরিমাপ করা হবে। পুরো প্রক্রিয়াটি হবে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় ও ডিজিটাল, যেখানে অ্যানালগ বা হাতে লেখা পদ্ধতির আর কোনো ব্যবহার থাকবে না।

সরকার জানিয়েছে, এই বিডিএস জরিপ হবে ‘পোলার টু পোলার’ অর্থাৎ দেশের প্রতিটি জমির খণ্ড স্বচ্ছভাবে রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত হবে। জরিপে জমির মালিকানা ছয় মাস পরপর স্বয়ংক্রিয়ভাবে হালনাগাদ হবে। জমি বিক্রির সঙ্গে সঙ্গেই নতুন মালিকের নাম খতিয়ানে যুক্ত হবে এবং আগের মালিকের অংশ বাদ পড়বে। এ জন্য দেশের প্রতিটি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আলাদা করে কম্পিউটার অপারেটর নিয়োগ করা হবে, যাঁরা এই তথ্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অনলাইন সিস্টেমে আপডেট করবেন।

আরেকটি বড় পরিবর্তন হচ্ছে যৌথ খতিয়ানের অবসান। এখন থেকে একজন মালিকের নামে থাকবে একটি নির্দিষ্ট দাগ নম্বর। পরিবারভিত্তিক জমি ভাগ না হলে নামজারি হবে না— এই সমস্যাও থাকবে না। এতে করে জমির মালিকানা স্পষ্ট ও নির্ভরযোগ্য হবে, এবং ভবিষ্যতে জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব কমবে বলে মনে করছে সরকার।

তবে সরকার সতর্ক করে জানিয়েছে, জরিপ চলাকালে রেকর্ডে ভুল হলে তা পরবর্তীতে সংশোধন করা অত্যন্ত কঠিন হবে। এমনকি প্রকৃত মালিক হয়েও কেউ রেকর্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত না করতে পারলে ভবিষ্যতে বড় সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই জমির সব বৈধ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে সকল জমির মালিককে। বিশেষভাবে প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে— জরিপ চলাকালে একজন বিশ্বস্ত প্রতিনিধি নিযুক্ত করতে, যিনি প্রবাসীর পক্ষে জমি যথাযথভাবে রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করবেন।

প্রসঙ্গত, অতীতে ব্রিটিশ আমলে পরিচালিত সিএস জরিপ ছিল একমাত্র পূর্ণাঙ্গ জরিপ। পাকিস্তান আমলে শুরু হওয়া এসএ জরিপ এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের নিজস্ব আরএস ও বিএস জরিপগুলো কারিগরি সীমাবদ্ধতা ও বাজেট সংকটের কারণে সম্পূর্ণভাবে শেষ করা যায়নি। এসব অসম্পূর্ণ জরিপই ভূমি মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সরকার মনে করছে, বাংলাদেশ ডিজিটাল সার্ভে চালু হলে জমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আসবে, দুর্নীতি ও জালিয়াতি কমবে এবং ভূমি নিয়ে মামলা-মোকদ্দমা অনেকাংশে হ্রাস পাবে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে