ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
Sharenews24

আশাজাগানিয়া বৈঠকের দিনেও শেয়ারবাজারে বিপরীত স্রোত

২০২৫ মে ২২ ১৪:৫৯:২৪
আশাজাগানিয়া বৈঠকের দিনেও শেয়ারবাজারে বিপরীত স্রোত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ বৃহস্পতিবার (২২ মে) প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদায়) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে দেশের শেয়ারবাজার-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিনিয়োগকারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের উচ্চ পর্যায়ের একটি বহুল প্রত্যাশিত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বাজারে স্থিতিশীলতা ফেরানো, বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও কার্যকর পদক্ষেপের জন্য বৈঠকটিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছিল।

বৈঠকের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর গত দুই দিন ধরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা আশাবাদ কাজ করছিল। এরই প্রতিফলন দেখা যায় দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সূচকে। মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছিল ১৯ পয়েন্ট, আর বুধবার যুক্ত হয় আরও ৬ পয়েন্ট। এই দুই দিনে বিনিয়োগকারীদের মুখে কিছুটা হলেও হাসি ফুটেছিল।

তবে আজ বৈঠকের দিন—যাকে বলা হচ্ছিল ‘আশার দিন’—সেটাই যেন রূপ নিল বিনিয়োগকারীদের জন্য হতাশার প্রতীকে। আলোচনার দিনেই উভয় শেয়ারবাজারে সব সূচক কমেছে। ডিএসইর সার্বিক সূচক ডিএসইএক্স ১৮.২০ পয়েন্ট কমে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৭৮৫ পয়েন্টে। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচকও কমেছে ১৪.৫৯ পয়েন্ট।

শুধু সূচকের পতন নয়, আজ ডিএসইর লেনদেনেও ছিল বড় ধরনের ভাটা। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে মাত্র ২৫৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, আগের দিন যেখানে লেনদেন হয়েছিল ৩২৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা। যদিও সিএসইর লেনদেন আজ কিছুটা বেড়েছে, তবুও তা বাজারের সার্বিক চিত্র পরিবর্তনে তেমন কোনো ইতিবাচক ইঙ্গিত দেয়নি।

এই বৈঠক ঘিরে বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা ছিল—সরকার ও নীতিনির্ধারক মহল থেকে দৃশ্যমান এবং বাস্তবমুখী কিছু সিদ্ধান্ত আসবে, যা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে, শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি’র কার্যক্রম, নেতৃত্ব এবং বাজারে সক্রিয় অসাধু চক্রের বিষয়ে বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। অনেকেই আশাবাদী ছিলেন—আজকের আলোচনায় অন্তত এসব বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বার্তা পাওয়া যাবে।

কিন্তু দিনের শেষে বাজারের আচরণ এবং বিনিয়োগকারীদের মনের ভাষা বলছে—আশার সেই আলো এখনো দিগন্তে স্পষ্ট নয়। বাজার সংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছেন, উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় গঠনমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত বাজারে আস্থা ফিরবে না। শুধু কথার ফুলঝুরি বা প্রতিশ্রুতির দিন আর নেই; বিনিয়োগকারীরা এখন বাস্তব উদ্যোগ দেখতে চান।

বাজার বিশ্লেষকদের মতে, আজকের পতন এই বার্তাই দেয় যে, শুধু আলোচনায় অংশগ্রহণ নয়—প্রয়োজন ত্বরিত এবং কার্যকর সিদ্ধান্ত ও তার বাস্তবায়ন। বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, দক্ষ নেতৃত্ব, নীতিগত স্থিরতা ও আইনের শাসন নিশ্চিত না হলে বাজারে বারবার এমন অস্থিরতা ফিরে আসবে।

তবে বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, আজকের বৈঠক ছিল গুরুত্বপূর্ণ একটি সূচনা। তবে তারা চাচ্ছেন, এই সংলাপ যেন আরেকটি লোকদেখানো ইভেন্টে পরিণত না হয়। বরং এখান থেকে যেন সত্যিকারের সমাধান বের হয় এবং শেয়ারবাজার একটি দীর্ঘমেয়াদি, টেকসই ও স্থিতিশীল ভিত্তি পায়।

মামুন/

পাঠকের মতামত:

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর



রে