ঢাকা, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫
Sharenews24

‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে পোস্ট করে বিপাকে অধ্যাপক

২০২৫ মে ১৯ ১১:৫০:৪১
‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে পোস্ট করে বিপাকে অধ্যাপক

নিজস্ব প্রতিবেদক: ভারতের সাম্প্রতিক সামরিক অভিযানে নারী সেনা কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্য করায় গ্রেফতার হয়েছেন আশোকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আলি খান মাহমুদাবাদ। সোমবার (১৯ মে) হরিয়ানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

ভারতের বিতর্কিত ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে ৮ মে দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টে নারী সেনা কর্মকর্তাদের ভূমিকা ‘লোক দেখানো’ বলে মন্তব্য করেছিলেন মাহমুদাবাদ। তার সেই পোস্ট ঘিরেই শুরু হয় ব্যাপক বিতর্ক।

মাহমুদাবাদ লিখেছিলেন, “আমি খুশি যে অনেক ডানপন্থি বিশ্লেষক কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন। তবে একইভাবে যদি তারা গণপিটুনিতে নিহতদের বা বিজেপির ঘৃণানীতির শিকার সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার দাবি করতেন, সেটাই হতো আরও অর্থবহ। দুই নারী সেনা কর্মকর্তার প্রেস ব্রিফিং গুরুত্বপূর্ণ, তবে বাস্তব পরিবর্তন না এলে তা শুধুই লোক দেখানো।”

এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে হরিয়ানা রাজ্য মহিলা কমিশন অভিযোগ তোলে যে, এতে নারী সেনা কর্মকর্তাদের ‘অপমান’ এবং সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়ানো হয়েছে। তাকে ২৩ মে’র মধ্যে কমিশনে হাজির হতে বলা হয়। অনুপস্থিতি হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।

অধ্যাপক মাহমুদাবাদ অবশ্য শুরু থেকেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার ভাষ্য: “এতে কোথাও নারীবিদ্বেষ নেই। আমি সেনা সদস্য ও সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তার দিকেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। আমার বক্তব্য ইচ্ছাকৃতভাবে বিকৃত করা হয়েছে।”

সমাজকর্মী শবনম হাশমি ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার)–এ লিখেছেন, “তার পোস্টে কোথাও দেশদ্রোহ বা নারীবিরোধী কিছু নেই। এটি নিছক হয়রানি।”

দ্য টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন অনুযায়ী, তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির নতুন সংস্করণ, অর্থাৎ ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী ‘সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ উসকে দেওয়া’, ‘বিদ্রোহে প্ররোচনা’ এবং ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তবে মাহমুদাবাদের আইনজীবীদের দাবি, তিনি শুধু সংবিধানসম্মত মতপ্রকাশের অধিকার প্রয়োগ করেছেন।

এদিকে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপের প্রতিবাদে ভারতের এক হাজারের বেশি শিক্ষাবিদ, ইতিহাসবিদ, অধিকারকর্মী ও শিল্পী একটি যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। তারা অবিলম্বে অভিযোগ প্রত্যাহার ও হরিয়ানা মহিলা কমিশনের প্রকাশ্য ক্ষমা দাবি করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “হরিয়ানা রাজ্য ভারতের নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতায় শীর্ষে। এসব বাস্তব সমস্যা না দেখে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। এটি বাকস্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।”

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ খবর

আন্তর্জাতিক - এর সব খবর



রে