ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
Sharenews24

ড. ইউনূসের এক কথায় বদলে গেল মালয়েশিয়ার শ্রমিকদের ভাগ্য

২০২৫ মে ১৫ ১০:১৯:৪০
ড. ইউনূসের এক কথায় বদলে গেল মালয়েশিয়ার শ্রমিকদের ভাগ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের কর্মীদের জন্য পুনরায় উন্মুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে দেশটি বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১২ লাখ শ্রমিক নেবে বলে আশা করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক বিনা খরচে যাওয়ার সুযোগ পাবেন।

বৃহস্পতিবার বিকেলে মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল এবং মানবসম্পদমন্ত্রী স্টিভেন সিম চি কেওয়ের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হবেন বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান এবং আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে, যা শ্রমবাজার পুনরায় উন্মুক্ত করার দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এর আগে, ২০২৪ সালের ৪ অক্টোবর বাংলাদেশ সফর করেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। ঢাকায় ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হন তিনি।

বৈঠক শেষে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেন, “মালয়েশিয়ার সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে চাই। অর্থনীতি, সংস্কৃতি, রোহিঙ্গা ইস্যু, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা, প্রযুক্তি, মানবসম্পদ উন্নয়ন, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং শ্রম রপ্তানি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।” তিনি জানান, দুই দেশই ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ ও কর্মসংস্থান বৃদ্ধির লক্ষ্যে একমত হয়েছে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এ সময় ড. ইউনূসকে ‘বন্ধু’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “মানুষের মর্যাদা রক্ষায় ড. ইউনূসের অবদান প্রশংসনীয়। আমি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চিনি এবং তার ওপর আস্থা রাখি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আমাদের সর্বাত্মক সমর্থন থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশি শ্রমিকরা আধুনিক দাস নয়। তাদের মর্যাদা ও সুরক্ষার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছি।” আনোয়ার ইব্রাহিমের এই মন্তব্য শ্রম বাজার পুনরায় উন্মুক্ত করার প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন বলেই মনে করছেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা।

শ্রমবাজার সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় শ্রমিকদের বেতন মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশের তুলনায় দ্বিগুণ বা তারও বেশি। কিছু জটিলতার কারণে প্রায় এক বছর ধরে এ বাজার স্থগিত ছিল। বর্তমানে সেই জটিলতা কেটে যাওয়ায় লাখ লাখ শ্রমিকের বৈধভাবে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার পথ খুলে যাচ্ছে।

কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা জানান, পর্যাপ্ত সংখ্যক শ্রমিক পাঠানো গেলে বছরে প্রায় ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিরিক্ত রেমিটেন্স অর্জন সম্ভব। তারা আরও বলেন, “কে শ্রমিক পাঠাচ্ছে বা কোন এজেন্সির মাধ্যমে পাঠানো হচ্ছে, সেটি মুখ্য নয়। বরং অভিবাসন ব্যয় কমানো এবং শ্রমিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”

তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, স্বল্প খরচে ও নিরাপদ প্রক্রিয়ায় শ্রমিকরা মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সুযোগ পাবেন, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক মাইলফলক হয়ে দাঁড়াবে।

মুসআব/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে