ঢাকা, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
Sharenews24

পরিবেশবান্ধব কারখানায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বসেরা

২০২৫ মে ১৪ ১৮:০৫:২৫
পরিবেশবান্ধব কারখানায় বাংলাদেশ এখন বিশ্বসেরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশবান্ধব শিল্প উন্নয়নের পথে আরও এক মাইলফলক ছুঁয়েছে বাংলাদেশ। গাজীপুরের কাশিমপুরে অবস্থিত তাসনিয়া ফেব্রিকস লিমিটেডের প্রশাসনিক ভবন পেয়েছে বিশ্বসেরা ‘সবুজ’ তৈরি পোশাক কারখানার স্বীকৃতি। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (USGBC) থেকে ভবনটি ১০৭ স্কোর পেয়ে অর্জন করেছে ‘লিড প্লাটিনাম’ সনদ, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ নম্বর।

শুধু প্রশাসনিক ভবন নয়, প্রতিষ্ঠানটির গার্মেন্টস ভবনও পেয়েছে ১০৬ স্কোর, যা যৌথভাবে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশেরই আরেক প্রতিষ্ঠান এসএম সোর্সিং এর সঙ্গে। অর্থাৎ, বিশ্বসেরা প্রথম ও দ্বিতীয় পরিবেশবান্ধব কারখানার শীর্ষস্থান দখলে রেখেছে বাংলাদেশ।

কী এই লিড সার্টিফিকেশন?

‘লিড’ (LEED - Leadership in Energy and Environmental Design) সার্টিফিকেট বিশ্বের অন্যতম পরিবেশবান্ধব ভবন চিহ্নিত করার একটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, যা ইউএসজিবিসি ১৯৯৩ সাল থেকে দিয়ে আসছে। এটি ৯টি সূচকের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়—যেমন:

যেমন:

  • জ্বালানি দক্ষতা

  • পানি ব্যবহার

  • বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

  • নির্মাণ উপকরণ

  • পরিবেশগত প্রভাব

১১০ নম্বরের মধ্যে ৮০ বা তার বেশি নম্বর পেলে ‘প্লাটিনাম’, ৬০-৭৯: ‘গোল্ড’, ৫০-৫৯: ‘সিলভার’, ৪০-৪৯: ‘সার্টিফাইড’ ক্যাটাগরিতে স্থান পায়।

মে মাসের সর্বশেষ র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী USGBC থেকে সদ্য ঘোষিত সর্বোচ্চ স্কোরপ্রাপ্ত তিনটি কারখানা হলো—

১. তাসনিয়া ফেব্রিকস (প্রশাসনিক ভবন) – ১০৭ নম্বর

২. তাসনিয়া ফেব্রিকস (গার্মেন্টস ভবন) – ১০৬ নম্বর

৩. কমফিট গোল্ডেন লিফ (মির্জাপুর) – ৮০ নম্বর

বাংলাদেশের অবস্থান

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত মোট ২৪৩টি পোশাক ও টেক্সটাইল কারখানা ‘লিড’ সনদ পেয়েছে। এর মধ্যে:

  • ১০১টি ‘প্লাটিনাম’

  • ১২৮টি ‘গোল্ড’

  • ১০টি ‘সিলভার’

  • ৪টি ‘সার্টিফাইড’ পর্যায়ে রয়েছে।

বিশ্বের শীর্ষ ১০ পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার মধ্যে ৯টিই এখন বাংলাদেশে। এর মধ্যে রয়েছে—তাসনিয়া ফেব্রিকস (দুইটি ভবন), এসএম সোর্সিং, গ্রিন টেক্সটাইল, নিট এশিয়া, ইন্টিগ্রা ড্রেসেস, রেমি হোল্ডিংস, ফতুল্লা অ্যাপারেলস এবং একটি নাম অপ্রকাশিত প্রতিষ্ঠান।

বিজিএমইএ: এটি টেকসই উন্নয়নের মাইলফলক

বাংলাদেশ গার্মেন্টস প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “এটি শুধু কারিগরি কৃতিত্ব নয়, বরং টেকসই উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির এক ঐতিহাসিক সাফল্য।”

তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতের বৈশ্বিক বাণিজ্যে ইএসজি মানদণ্ড পূরণ করাই হবে টিকে থাকার চাবিকাঠি। এই স্বীকৃতি শুধু পোশাকশিল্প নয়, সব ধরনের শিল্প প্রতিষ্ঠানে পরিবেশবান্ধব উদ্যোগকে উৎসাহিত করবে।”

এটি প্রমাণ করে, পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা ও ব্যবসায়িক উৎকর্ষ একসঙ্গে অর্জন সম্ভব, আর বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রেও দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।

মিজান/

পাঠকের মতামত:

অর্থনীতি এর সর্বশেষ খবর

অর্থনীতি - এর সব খবর



রে