ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্তে ছাত্র অধিকার পরিষদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

২০২৫ মার্চ ০৪ ১১:৫২:১৫
কোটা ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্তে ছাত্র অধিকার পরিষদের তীব্র প্রতিক্রিয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্তমানে "জুলাই কোটা" নিয়ে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে, যখন সরকার জুলাই অভ্যুত্থানে হতাহত পরিবারের সদস্যদের জন্য ৫% কোটা নির্ধারণ করেছে সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছাত্র অধিকার পরিষদ (Student Rights Council) তাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে। তাদের মতে, এই কোটা পদ্ধতি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বৈষম্য সৃষ্টি করবে এবং এটি তাদের আন্দোলনের মূল দাবি কোটামুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা এর বিরুদ্ধে যাবে।

জুলাই অভ্যুত্থান ছিল ছাত্র আন্দোলনের একটি বড় ঘটনা, যেখানে ছাত্ররা কোটা ব্যবস্থা বাতিলের জন্য প্রতিবাদ জানায়। এই আন্দোলন সামরিক ও সরকারের দমন-পীড়নের শিকার হয় এবং অনেক ছাত্র প্রাণ হারায় এবং আহত হয়। শেষমেষ, আন্দোলনের ফলে সরকারের পতন ঘটে এবং গঠন হয় একটি অন্তর্বর্তী সরকার, যার নেতৃত্ব দেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এমন পরিস্থিতিতে, অভ্যুত্থানে নিহত এবং আহতদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করতে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তাদের মধ্যে একটি হচ্ছে কোটা পদ্ধতি ফেরানো, যা সরকারি বিদ্যালয়ে ভর্তি ক্ষেত্রে ৫% কোটা সংরক্ষিত থাকবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদ এই নতুন কোটা ব্যবস্থা গ্রহণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। সংগঠনটির দাবি, কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল কোটামুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য, এবং কোটা পুনঃপ্রবর্তন ছাত্রদের মেধার ভিত্তিতে যোগ্যতার মূল্যায়ন করার জন্য একেবারে অগ্রহণযোগ্য। তারা মনে করে, সরকারের এই সিদ্ধান্তটি মূল আন্দোলনের উদ্দেশ্যের সাথে সাংঘর্ষিক।

কোটা বাতিলের দাবি: ছাত্র অধিকার পরিষদ স্পষ্টভাবে বলেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভর্তিতে কোনো ধরনের কোটা থাকতে পারে না। তারা শিক্ষার ক্ষেত্রে মেধার ভিত্তিতে ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য আন্দোলন করেছে, এবং তারা এর কোনো পরিবর্তন দেখতে চায় না।

বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা: সংগঠনটি উল্লেখ করেছে যে, মুক্তিযুদ্ধ এবং জুলাই অভ্যুত্থান ছিল বৈষম্য বিরোধী সংগ্রাম। তারা দাবি করে, বাংলাদেশের সব নাগরিকের জন্য বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চলছে।

শহীদদের পরিবারকে মর্যাদা দেওয়া হোক, কোটা না: ছাত্র অধিকার পরিষদ বলছে, জুলাই শহীদদের পরিবারকে মর্যাদা দেওয়া উচিত, তবে কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে নয়। তারা অনুরোধ জানিয়েছে, শহীদদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বাড়ি, ভাতা এবং অন্যান্য সহায়তা প্রদান করা হোক, কিন্তু কোটা ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন না করা হোক।

কোটা বিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতা: তারা নিজেদের আন্দোলনকে কোটা বিরোধী চেতনা থেকে চালিয়ে যেতে ঘোষণা করেছে। তাদের বক্তব্য ছিল, "কোটা না, মেধা মেধা"। তারা মনে করে যে, সরকার কোটা ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করে মূল আন্দোলনের আদর্শের বিপরীতে কাজ করছে।

ছাত্র অধিকার পরিষদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থার বিরোধিতা করেছে। তারা জানিয়ে দিয়েছে যে, স্কুল ও কলেজে ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা কোনোভাবেই থাকতে পারে না, এবং এটি জনগণের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করবে।

ছাত্র অধিকার পরিষদ জানিয়েছে যে, যদি সরকার তাদের কোটা পুনঃস্থাপন সিদ্ধান্ত পরিত্যাগ না করে, তবে তারা তীব্র আন্দোলন শুরু করবে। তারা আরও স্পষ্ট করেছে যে, কোটা ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন হলে তারা রাজপথে আবারও নামবে এবং সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে।উপসংহার

"জুলাই কোটা" নিয়ে বিতর্কের মূল বিষয় হলো, সরকার যা শুরু করেছিল কোটামুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা এবং চাকরি পদ্ধতির বিরুদ্ধে, তা আবারও ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া। ছাত্র অধিকার পরিষদ তাদের আন্দোলনের মূল লক্ষ্য কোটামুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখতে এবং সমাজে কোনো ধরনের বৈষম্য না রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

এনামুল/

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে