ঢাকা, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
Sharenews24

হিমুর আত্মহত্যার নেপথ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক : র‍্যাব

২০২৩ নভেম্বর ০৪ ০৬:৫০:৪২
হিমুর আত্মহত্যার নেপথ্যে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক : র‍্যাব

নিজস্ব প্রতিবদেক : ছোট পর্দার অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু ‘বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ও অনলাইন জুয়া’ নিয়ে প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন রুফি ওরফে উরফি জিয়ার সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এর আগেও হিমু কয়েকেবার জিয়াউদ্দিনকে জানিয়েছিলেন আত্মহত্যা করবেন।

প্রেমিক উরফির সঙ্গে বৃহস্পতিবার হিমুর বাগবিতণ্ডা হয়। তখনও হিমু বলেছিলেন তিনি আত্মহত্যা করবেন। উরফি পাত্তা দেননি। তখনই আত্মহত্যা করে ফেলেন হুমায়রা হিমু।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কাওরান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব কথা বলেন।

দুপুরে রাজধানীর বংশাল থেকে জিয়াউদ্দিন উরফিকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি উরফি অভিনেত্রী হিমুর আত্মহত্যার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর উত্তরার নিজ বাসায় জনপ্রিয় অভিনেত্রী হুমায়রা নুসরাত হিমু আত্মহত্যা করেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। এই ঘটনায় হিমুর খালা বাদী হয়ে রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন।

র‌্যাবের মুখপাত্র খন্দকার মঈন বলেন, অভিনেত্রী হুমায়রার মৃত্যু রহস্য উদ্‌ঘাটন ও জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের জন্য গোয়েন্দা নজদারী বৃদ্ধি করে র‍্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১ এর একটি দল রাজধানীর বংশাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে আত্মহত্যার প্ররোচণার দায়ে জিয়াউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উরফি র‌্যাবকে জানায়, ২০১৪ সালে হুমায়রা হিমুর খালাতো বোনের সঙ্গে গ্রেপ্তার উরফি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় এবং কিছুদিনের মধ্যে পারিবারিক সমস্যার কারণে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পারিবারিক আত্মীয়ের সম্পর্কের সুবাধে উরফির সঙ্গে হিমুর পরিচয় হয়।

হিমুর খালাতো বোনের সঙ্গে উরফির বিবাহ বিচ্ছেদ হলেও হিমু ও জিয়াউদ্দিনের মধ্যে নিয়মিত যোগাযোগ ছিল বলে সে জানায়। পরবর্তীতে উরফি অন্যত্র বিয়ে করলেও হিমুর সঙ্গে বিভিন্নভাবে নিয়মিত যোগাযোগ বজায় রাখত। গত ৩/৪ মাস আগে তাদের মধ্যে সম্পর্ক তৈরি হয়। এক পর্যায়ে উরফি হিমুকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়মিত তার বাসায় যাতায়াত করত। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া ও বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হত।

এ ছাড়া ২/৩ বছর ধরে হিমু বিগো লাইভস অ্যাপসে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত হয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় করেছে বলে আসামি উরফি জানায়। এসব বিষয় নিয়েও বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও মনোমালিন্যের সৃষ্টি হত।

র‌্যাবের খন্দকার মঈন পরিচালক বলেন, বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৩টার সময় জিয়া অভিনেত্রী হিমুর উত্তরার বাসায় যান। পরবর্তীতে অনলাইন জুয়াসহ বিষয় নিয়ে হিমু ও উরফির মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। হিমু বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে বলে তাকে জানায়। তবে হিমু পূর্বেও ৩/৪ বার আত্মহত্যা করবে বলে উরফিকে জানালেও তিনি পরবর্তীতে আত্মহত্যা করেনি। এবারও পূর্বের ন্যায় হিমু আত্মহত্যা করার ব্যাপারে উরফিকে জানালে তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দেননি।

কিন্তু হিমু একটু পর রশি দিয়ে গলায় ফাঁস দিলে উরফি ও পাশের রুমে থাকা হিমুর মেকআপ আর্টিস্ট মিহিরকে ডেকে আনেন। পরবর্তীতে মিহির বটি দিয়ে রশি কেটে তাকে নিচে নামান। এরপর উরফি, বাসার দারোয়ান এবং মিহিরের সহায়তায় হিমুকে বাসা থেকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক হিমুকে মৃত ঘোষণা করেন।

খন্দকার মঈন জানান, ঘটনার দিন হিমুকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করার পরে উরফি হিমুর দুটি আইফোন ও ব্যবহৃত গাড়ি নিয়ে দ্রুত হাসপাতাল ত্যাগ করেন।

পরবর্তীতে তিনি হিমুর গাড়ি উত্তরার বাসার পার্কিংয়ে রেখে দেন এবং মোবাইল দুটি বিক্রি করার জন্য রাজধানীর বংশাল এলাকায় পালিয়ে যান। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

শেয়ারনিউজ, ০৩ নভেম্বর ২০২৩

পাঠকের মতামত:

বিনোদন এর সর্বশেষ খবর

বিনোদন - এর সব খবর



রে