ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫
Sharenews24

জাইমা রহমানের পোস্ট নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনা

২০২৫ ডিসেম্বর ২৩ ২০:২৯:০৩
জাইমা রহমানের পোস্ট নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নাতনি এবং দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কন্যা জাইমা জারনাজ রহমান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি আবেগপূর্ণ পোস্ট দিয়েছেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে পরিবারের সঙ্গে বাংলাদেশে ফেরার আগমুহূর্তে দেওয়া এই পোস্টকে রাজনৈতিক মহলে অনেকেই ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে তার সক্রিয় ভূমিকার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন।

নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া লেখায় জাইমা পারিবারিক উত্তরাধিকার, ব্যক্তিগত উপলব্ধি এবং দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা তুলে ধরেন। তিনি তার দাদি খালেদা জিয়াকে কেবল একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বা জাতীয় নেতা হিসেবে নয়, বরং পরিবারের কাছে একজন স্নেহশীল অভিভাবক হিসেবে স্মরণ করেন। তার ভাষায়, লাখো মানুষের কাছে যিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, পরিবারের কাছে তিনি ছিলেন সবার আগে ‘দাদু’।

পোস্টে জাইমা উল্লেখ করেন, দাদির কাছ থেকেই তিনি নম্রতা, আন্তরিকতা এবং অন্যের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনার গুণ শিখেছেন। এসব মূল্যবোধই তাকে ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলেছে বলে তিনি মনে করেন। এই স্মৃতিচারণের মধ্য দিয়ে পারিবারিক রাজনীতির ঐতিহ্য ও ব্যক্তিগত আবেগ একসূত্রে মিলেছে তার লেখায়।

দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাসজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে জাইমা বলেন, এই সময় তার জীবন ও দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন এনেছে ঠিকই, তবে নিজের শিকড়ের সঙ্গে সম্পর্ক কখনো বিচ্ছিন্ন হয়নি। লন্ডনে বসবাস তাকে আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশই সবসময় তার আবেগ, মূল্যবোধ ও নৈতিকতার কেন্দ্র হয়ে থেকেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ অংশে তিনি গত ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ টানেন। সে সময় ও পরবর্তী পর্যায়ে আড়াল থেকেই পরিস্থিতি বোঝার এবং নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা করার চেষ্টা করেছেন বলে জানান তিনি। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করে জাইমা লেখেন, তিনি বাংলাদেশকে যতটা সম্ভব ফিরিয়ে দিতে চান এবং একটি পুনর্গঠিত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেন।

পোস্টের শেষাংশে তিনি এটিকে নিজের ভাষায় নিজের পথচলার সূচনা বলে উল্লেখ করেন। পাঠকদের উদ্দেশে তার আহ্বান—যদি এই ভাবনা কারও মনে সাড়া দেয়, তবে একসঙ্গে এই পথে হাঁটার সুযোগ রয়েছে। এই বক্তব্যকেই অনেকেই তার সম্ভাব্য রাজনৈতিক যাত্রার প্রকাশ্য বার্তা হিসেবে দেখছেন।

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন তারেক রহমান। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ট্রাভেল পাস সংগ্রহ করেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, ২৫ ডিসেম্বর সকাল ১১টা ৫৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছাবেন তারেক রহমান।

ঢাকায় পৌঁছে তিনি সরাসরি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার কাছে যাবেন বলে জানা গেছে। এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান দেশে ফিরে শাশুড়ির পাশে অবস্থান করছেন।

এদিকে জাইমা রহমান সম্প্রতি বিএনপির একটি ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেন, যা ছিল কোনো রাজনৈতিক ফোরামে তার প্রথম আনুষ্ঠানিক উপস্থিতি। তিনি লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটি থেকে আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন এবং লিংকন’স ইন থেকে বার-অ্যাট-ল সম্পন্ন করেছেন। নির্বাচনের আগে রহমান পরিবারের একাধিক সদস্যের দেশে ফেরা এবং জাইমার এই নতুন সক্রিয়তা রাজনৈতিক অঙ্গনে বাড়তি কৌতূহল ও আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

সিরাজ/

শেয়ারনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর



রে